মাকে অনেক দিন থেকে বলতাম রাজশাহীর পুঠিয়া রাজবাড়ি বেড়াতে যাওয়ার কথা। আমার বন্ধুরা যারা বেড়িয়ে এসেছে ওরা বলে, ওখানে গেলে অনেক কিছু জানতে পারব, দেখতে পারব অনেক কিছু।
শেষ পর্যন্ত মা এর সাথে বেড়াতে গিয়েছিলাম ১৬ নভেম্বর। রাজশাহীর যে স্থানটি পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করবে সেটি নি:সন্দেহে পুঠিয়া রাজবাড়ি সেখানে যাবার আগে আমি ভাবতেও পারিনি।
সেখানে গিয়েই জানতে পারলাম পুঠিয়া রাজা পীতাম্বর পুঠিয়া রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ষষ্ঠদশ শতাব্দীর শেষভাগে এবং সপ্তদশ শতাব্দীর প্রথম দিকে পুঠিয়ায় রাজধানী স্থাপন করেন।
সুদৃশ্য ইমারত নির্মাণসহ জলাশয় খনন করেন তিনি। রাণি ভূবনময়ী বিশাল একটি জলাশয়ের সম্মুখে ভূবনেশ্বর শিবমন্দির নির্মাণ করেন।
এটি পঞ্চরত্ন শিবমন্দির নামেও খ্যাত। বাংলাদেশে বিশালাকারের সুউচ্চ ও বহু গুচ্ছচূড়া বিশিষ্ট শিবমন্দিরগুলোর মধ্যে পুঠিয়ার পঞ্চরত্ন শিবমন্দিরটি স্থাপত্যশৈলীতে শ্রেষ্ঠত্বের দাবী রাখে। এটি বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি স্থাপত্য নির্দশন।
এখানকার অন্য নিদর্শনগুলোর মধ্যে রয়েছে চৌচালা গোবিন্দমন্দির, পঞ্চরত্ন গোবিন্দমন্দির, দোলমন্দির বা দোলমঞ্চ, দোচালা ছোট আহ্নিকমন্দির, জগদ্ধাত্রী মন্দির, রথমন্দির ইত্যাদি।
পুঠিয়ার জমিদারগণ অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতাব্দীতে এই মন্দিরগুলি নির্মাণ করেছিলেন। বিশালাকারের একই চত্বরে এরকম মন্দির কমপ্লেক্স একমাত্র পুঠিয়া ব্যতীত বাংলাদেশের আর কোথাও দেখা যায় না। পশ্চিম বাংলার (ভারত) বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে এরকম মন্দির কমপ্লেক্স রয়েছে। পুঠিয়া রাজবাড়ি, মন্দির, দীঘি ও জলাশয়সহ রাজবাড়ীর পুরা চত্বরটি পর্যটকদের বেড়ানোর জন্য একটি আদর্শ ও আকর্ষণীয় স্থান বলেই আমার মনে হয়েছে।
- See more at:
http://hello.bdnews24.com/amarkotha/article6805.bdnews#sthash.pOP4Hot5.dpuf