আকস্মিক অগ্ন্যুৎপাতের পর জাপানের মাউন্ট ওনতাক পর্বতে উদ্ধারকাজ চলছে। গতকাল রোববার পর্বতটির চূড়ার কাছে অন্তত ৩১ জন ভ্রমণকারীর মৃত্যুর আশঙ্কাকে সামনে রেখে এই উদ্ধারকাজ চলছে। ফিরে আসা ভ্রমণকারীরা জানান, ছাই ও ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেকে আটকা পড়ে আছেন।
এএফপির খবরে জানানো হয়, ওনতাক পর্বতে এক হাজারের বেশি অগ্নিনির্বাপক বাহিনী উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পর্বত থেকে বিষাক্ত গ্যাস নির্গত হওয়ায় উদ্ধারকাজ কঠিন হয়ে পড়েছে। হেলিকপ্টার দিয়ে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। উদ্ধারকাজে নিয়োজিত কর্মীরা জানান, কাজ করার সময় তাঁরা শ্বাস নিতে পারছেন না।
ঘটনাস্থল থেকে জীবিত ফিরে আসা ব্যক্তি সেইচি সাকুরি বলেন, ‘অগ্ন্যুৎপাতের স্থান থেকে ক্রমাগত ছাই পড়ছিল। অনেকে ছাইয়ের নিচে চাপা পড়ে যাচ্ছিল। আমি কিছুই করতে পারছিলাম না। তাঁদের উদ্ধার করতে বলছিলাম উদ্ধারকর্মীদের।’
আরেক ব্যক্তি বলেন, ‘এত গরম ছিল যে আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না। কালো ছাইয়ে পুরো এলাকা ভরে গিয়েছিল। মনে হচ্ছিল, আমি মারা যাচ্ছি।’
ধ্বংসস্তূপের পাশে প্রিয়জনকে খুঁজে ফিরছিলেন অশ্রুসজল এক বাবা। এক তরুণ খুঁজছেন তাঁর বান্ধবীকে। এক মা বলেন, তাঁর ছেলে অগ্ন্যুৎপাতের পর ফোন করেছিল। বলেছিল, ‘মা, আমি মারা যাচ্ছি। ঠিক এ সময় লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।’ পরে ছেলের কী হয়েছে, তিনি জানেন না।
জাপানের আবহাওয়া দপ্তরের কর্মকর্তা তশিতসুগু ফুজি জানান, ৪৭টি আগ্নেয়গিরি ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তবে অগ্ন্যুৎপাতের পূর্বাভাস দেওয়া কঠিন বলে জানিয়েছেন।
গত শনিবার ওই আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ থেকে ক্ষিপ্রগতিতে ধোঁয়া এবং উত্তপ্ত ছাই ও পাথর বেরোতে থাকে। তার আগে প্রচণ্ড শব্দও হয়। এ সময় পর্বতটিতে অন্তত ২৫০ জন পরিব্রাজক আটকা পড়েন। তবে পরে তাঁদের বেশির ভাগই নিরাপদে নিচে নেমে আসতে সক্ষম হন।
পর্বতটি থেকে বেশ কয়েকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, এর মধ্যেও রাতে অন্তত ৫০ জন সেখানে অবস্থান করছিলেন। গতকালও অগ্ন্যুৎপাত অব্যাহত ছিল। সকালে জোরদার তল্লাশি অভিযান চালিয়ে ওই পরিব্রাজকদের নিথর দেহের খোঁজ মেলে।
মাউন্ট ওনতাকের উচ্চতা তিন হাজার ৬৭ মিটার বা ১০ হাজার ১২০ ফুট। এর বিভিন্ন অংশে থাকার কেবিন ও দিকনির্দেশনা দেওয়া হাঁটাপথ আছে।