ব্ল্যাক হোল তথা কৃষ্ণবিবর এমন এক বিস্ময় যার মহাকর্ষ শক্তি উপেক্ষা করে অন্য কোনো বস্তু দূরে থাক আলো পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে না। এবার এর ব্যত্যয় ঘটেছে। একই সঙ্গে ঘটেছে আরো এক বিস্ময়কর ঘটনা। এত দিন পর্যন্ত আলোর গতি সবচেয়ে বেশি বলে আমরা জেনে এসেছি। কিন্তু এবার আলোর চেয়ে বেশি গতির সন্ধান পেয়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা।
পৃথিবী থেকে ২৬ কোটি আলোকবর্ষ দূরে আইসি৩১০ নামের ছায়াপথে সেই বিস্ময়ের খোঁজ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। স্পেনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কাতালোনিয়ার রাজধানী শহর বার্সেলোনায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট ফর হাই এনার্জি ফিজিকসের বিজ্ঞানীরা জানান, আইসি৩১০ ছায়াপথের কেন্দ্রে অবস্থিত কৃষ্ণবিবর থেকে বেরিয়ে এসেছে গামা রশ্মি। বিজ্ঞানীরা এত দিন জানতেন, কৃষ্ণবিবরের চারপাশে ইভেন্ট হরাইজন নামের এক অদৃশ্য প্রাচীর রয়েছে। সেই প্রাচীরের ভেতর কী আছে তা এখনো মনুষ্য জ্ঞানের বাইরে। সেই প্রাচীর ভেদ করে আলো পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে না। অথচ সেই প্রাচীর ভেদ করে মাত্র চার দশমিক আট মিনিটে ২৭ কোটি ৯০ লাখ মাইল পাড়ি দিয়েছে এক গুচ্ছ গামা রশ্মি। বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী এতটা পথ পাড়ি দিতে গেলে আলোর গতিতে চললেও ওই গামা রশ্মির ২৫ আলোকমিনিট সময় লাগার কথা। যেহেতু সময় লেগেছে তার চেয়ে কম সেহেতু এর একটাই ব্যাখ্যা। গামা রশ্মি আলোর চেয়ে বেশি গতি অর্জন করেছিল। ২০১২ সালে আলোর চেয়ে বেশি গতিসম্পন্ন এই গামা রশ্মি শনাক্ত করার পর বিজ্ঞানীরা ঘটনাটিকে প্রচলিত কোনো তত্ত্বের ভেতর ফেলতে পারেননি। অভাবিত এই ঘটনা ব্যাখ্যার জন্য তাঁদের নতুন তত্ত্বের সন্ধানে নামতে হয়েছে। এর ভেতর দিয়ে হয়তো জানা যাবে কী লুকিয়ে আছে রহস্যময় কৃষ্ণবিবরের নিকষ কালো প্রকোষ্ঠে। বিজ্ঞানীদের এমনটাই প্রত্যাশা।
সূত্র : ডেইলি মেইল।