এমন বহু সবজি আছে যেগুলোর উৎপত্তি বা প্রচলন কিছু বছর আগে। হয়তো কয়েক শো বছর আগেও খাদ্য হিসাবে সেগুলোর পরিচিতি ছিল না। এছাড়াও এখন আছে সবজির নানান রকম হাইব্রিড প্রজাতি। এত শত সবজির ভিড়ে একটি প্রাচীন সবজি হলো বাঁধাকপি। হাজার হাজার বছর আগেও মিশরীয়ান সম্রাটরা বাঁধাকপি খেতেন। প্রাচীন মিশরীয়ান রাজীকীয় রেসিপিগুলোতে দেখা যায় বাঁধাকপির ব্যবহার।
আমাদের দেশে বাঁধাকপি খুব বেশি পুরনো নয়। বাংলাদেশে ১৯৬০-এর দশকে বাণিজ্যিকভাবে এর চাষ শুরু হয়। প্রচণ্ড সস্তা মূল্যের এই সবজিটিকে অনেকেই অবহেলার চোখে দেখেন। কেননা তারা জানেন না সাধারণ সবজিটি কত শত গুণের আধার।
বাঁধাকপি Cruciferae পরিবারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সবজি। এর বৈজ্ঞানিক নাম Brassica Oleracea Var. Capitata L. বাঁধাকপির অগ্রভাগের স্ফীত কচিপাতাসমূহই খাওয়ার জন্যই এর চাষ করা হয়। পশ্চিম ইউরোপ ও ভূমধ্যসাগরের উত্তর উপকূলবর্তী দেশসমূহ বাঁধাকপির উত্পত্তি স্থান বলে ধারণা করা হয়।
প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে রয়েছে ১.৩ গ্রাম প্রোটিন, ৪.৭ গ্রাম শর্করা, ০.০৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'বি'-১, ০.০৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'বি'-২ ও ৬০ মিলিগ্রাম ভিটামিন 'সি'। তাছাড়া প্রতি ১০০ গ্রাম বাঁধাকপিতে ৩১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৮ মিলিগ্রাম লৌহ, ৬০০ মাক্রোগ্রাম ক্যারোটিন ও ২৬ কিলোক্যালোরী খাদ্যশক্তি থাকে।
সবজিটি নানা ধরনের ভিটামিনে সমৃদ্ধ। আছে প্রচুর পরিমাণ আঁশ। ক্যালশিয়াম, আয়রন, সালফার, ফসফরাসসহ আছে প্রয়োজনীয় সব খাদ্য উপাদান। আছে উচ্চমাত্রায় ভিটামিন সি, ভিটামিন বি-১ ও বি-২। আছে ভিটামিন ই, আয়রন ও ক্যালসিয়াম। আরও আছে ভিটামিন কে , বিটা ক্যারোটিন ও আরও অসংখ্য জরুরী পুষ্টি উপাদান।
কীভাবে খাওয়া ভালো?
বাঁধাকপি সবচাইতে ভালো কাঁচা অবস্থায় সালাদ খাওয়া। মিহি করে বাঁধাকপি কুচিয়ে নিন। তারপর সরষে তেল বা মেয়নেজের সাথে মেখে খেতে পারেন। সাথে যোগ করতে পারেন গাজর বা কাঁচা পেঁপে, পিঁয়াজ, মরিচ। এই শীতের দিনে দারুণ লাগবে খেতে। এছাড়াও সবজি ভাজিতে বা নানান রকম স্ন্যাক্সে পুর হিসাবে ব্যবহার করতে পারেন। খেতে পারেন বাঁধাকপির স্যুপ। বাঁধাকপি দিয়ে রান্না করা যায় মাংস ও নানান রকম পায়েস। এছাড়া বাঁধাকপির আচারও হয়।