সাধারণ কাদামাটিতে ভরা একটি প্লাস্টিক স্টোরেজ ক্রেটের ভেতরে জন্ম নিলো এমন এক অ্যান্টিবায়োটিক, যা সম্ভবত গত কয়েক দশকের মাঝে সবচাইতে শক্তিশালী।
বস্টন এবং জার্মানির বনের গবেষকেরা একটি মাইক্রোফ্লুইড ডিভাইস তৈরি করেন যাতে মাটির ব্যাকটেরিয়া জন্মাতে পারে। বর্তমানে আমরা যেসব অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে চলেছি, তাদের থেকে অনেক অনেক ভিন্ন এই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া। এটি ধ্বংস করতে সক্ষম নিউমোনিয়ার ব্যাক্টেরিয়া এবং থামিয়ে দিতে পারে ব্লাড ইনফেকশন।
টেক্সিওব্যাক্টিন নামের এই অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া এখনো মানুষের ওপর পরীক্ষা করা হয়নি। কিন্তু ইঁদুরের ক্ষেত্রে এসব ইনফেকশন সারিয়ে তোলা যায়। এটি এতোটাই কার্যকরী যে গবেষকেরা আশা করছেন ব্যাক্টেরিয়ারা কখনোই এর প্রতি রেসিস্টেন্ট হবে না। এটা যদিও নিছকই আশা। কারণ ব্যাক্টেরিয়ারা কোনো না কোনো সময়ে সব অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিই রেসিস্টেন্ট হয়ে যায়। এর পরেও এই অ্যান্টিবায়োটিকের গুরুত্ব অপরিসীম।
টেট্রাসাইক্লিন এবং স্ট্রেপ্টোমাইসিনের মতো গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিকগুলোও আবিষ্কৃত হয়েছিলো মাটিতে বসবাসকারি ব্যাকটেরিয়া থেকেই। কিন্তু ১৯৬০ সালের পর মাটির এমন ব্যাকটেরিয়া আর কাজে লাগানো হয়নি, কারণ মাটির ব্যাক্টেরিয়াগুলো ল্যাবে জন্মানো যায় না এবং এদের নিয়ে গবেষণাও করা যায় না। গবেষকেরা এর জন্য অন্য পন্থায় চলতে থাকেন কিন্তু সেভাবে খুব বেশি অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কৃত হয় নি। এ নিয়ে বেশ শঙ্কিত ছিলেন গবেষকেরা। কারণ ব্যাক্টেরিয়ারা অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্টেন্ট হতে থাকলে একটা সময়ে বরতমানের কোন অ্যান্টিবায়োটিকেই আর কাজ হবে না, তাই প্রয়োজন নতুন অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কার।
টেক্সিওব্যাক্টিন আবিষ্কৃত হয় বস্টনের বায়োলজিস্ট স্লাভা এপস্টেইনের নতুন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে। তিনি তৈরি করেন দুই ইঞ্চি লম্বা একটি মাইক্রোফ্লুইড চিপ যা একটি পোর্টেবল ডিফিউশন চেম্বার হিসেবে কাজ করে।
গবেষকেরা মাটি গুলিয়ে কাদা তৈরি করেন এবং এই চিপের পৃষ্ঠে থাকা ৩০৬টি ছোট্ট গর্তের প্রতিটিতে একটি করে সয়েল মাইক্রোব আটকে রেখে দেন মাটিভর্তি একটি পাত্রে যাতে এসব জীবাণু নিজেদের স্বাভাবিক পরিবেশে বাড়তে পারে। তারা বেশ বড়সড় ব্যাক্টেরিয়ার কলোনিও তৈরি করতে সক্ষম হন যেটি পেট্রি ডিশে তুলে এনে কালচার করা যায়। ব্যাকটেরিয়া কালচার করাটাই হলো এক্ষেত্রে সবচাইতে বড় প্রতিবন্ধকতা। এখন পর্যন্ত মাত্র ১ শতাংশ সয়েল ব্যাকটেরিয়া কালচার করা সম্ভব হয়েছে।
টেক্সিওব্যাক্টিন কি করে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে? এরা ব্যাক্টেরিয়ার ফ্যাট মলিকুলের সাথে নিজেকে আটকে ফেলে। গবেষকেরা বছেন অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া গতানুগতিকভেব এমন উপায়ে সাধারন ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে না। এ কারণে সহজে ব্যাক্টেরিয়ারা এর প্রতি রেসিস্টেন্ট হবে না বলে আশা করা হচ্ছে।
Collected
- See more at:
http://www.priyo.com/2015/01/11/127769.html#sthash.WQ7alnwx.dpuf