অনলাইন তথ্যসূত্রের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করবেন যেভাবে

Author Topic: অনলাইন তথ্যসূত্রের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করবেন যেভাবে  (Read 1247 times)

Offline Lazminur Alam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile
অনলাইনে পাওয়া খবরের সূত্র সম্পর্কে খোঁজখবর না নিয়েই তা ছেপে দিয়ে, ভুয়া খবর দিয়ে বাংলাদেশে বেশ কিছু নিউজ মিডিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বস্তুনিষ্ঠ খবর জানার অধিকার থেকে পাঠক-দর্শক-শ্রোতা বঞ্চিত হয়েছে। ভুয়া এসব খবর কেন্দ্র করে জাতীয়ভাবে বিপুল সময় ও সামর্থ্যের অপচয় হয়েছে।

যেমন দৈনিক মানবজমিন ২০০৯ সালের আগস্টে একটা খবর দিয়েছিল চন্দ্রাভিযানে যাওয়া নিল আর্মস্ট্রংয়ের একটি ‘সাক্ষাতকার’ ভিত্তি করে। আমেরিকান ওয়েবসাইট দি অনিয়নে (theonion.com) প্রকাশিত ‘সাক্ষাতকারে’র অনুবাদ ছিল সেটি। যেখানে বলা হয়, নিল আর্মস্ট্রং বলছেন যে তারা আসলে চাঁদে যাননি, বরং আমেরিকায় একটি মরুভূমিতে ওই দৃশ্যায়ন করে প্রচার করা হয়।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আর্মস্ট্রং কখনো কোনো সাক্ষাতকারে এমনটি বলেননি। কিন্তু এ বক্তব্য প্রকাশ করতে দি অনিয়নের বাধা ছিল না। কারণ, ঐতিহাসিক ও বর্তমান প্রকৃত ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান-ঘটনায় মিথ্যা ও বিদ্রুপ জড়িয়ে প্রকাশ করাই দি অনিয়নের কাজ। এমন ভুয়া খবরের সাইট হিসেবেই দি অনিয়নের ‘খ্যাতি’।

এ ‘সংবাদ’টি অনুবাদ করার আগে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিক বা মানবজমিন কর্তৃপক্ষ যদি অনলাইনে সাইটটি সম্পর্কে সামান্য খোঁজ-খবর নিতেন, তবে আন্তর্জাতিক মানের লজ্জায় তাদের পড়তে হতো না। আন্তর্জাতিক বলছি একারণে যে, মানবজমিন ও ইংরেজি দৈনিক নিউ নেশনের এ কাণ্ডটি আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি ও বিবিসির ইংরেজি সংস্করণে খবর হয়েছিল। সে যাত্রায় ভুল স্বীকার করে সেরেছিল পত্রিকা দুটি।

এতো গেলো বিদেশিদের চন্দ্রযাত্রার খবর কেলেঙ্কারি। খোদ বাংলাদেশ বিষয়ে এমন অনেক ভুয়া সূত্রের খবরও মাঝে মধ্যে প্রকাশ করে দেশি অনলাইন ও অফলাইন নিউজ মিডিয়াগুলো। এরমধ্যে বহুল আলোচিত শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান কেলেঙ্কারির কথা বলা যায়। গত বছরের শুরু থেকে srilankaguardian.org নামের এ ওয়েবসাইটটি বাংলাদেশের জাতীয় পরিস্থিতি, রাজনীতি ও এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ঘিরে প্রচুর ‘সংবাদ প্রতিবেদন’ ও ‘মন্তব্য’ প্রকাশ করে। ওয়েবসাইটটিতে প্রকাশের পরপরই দেশের কয়েকটি অনলাইন ও অফলাইন গণমাধ্যম এগুলো অনুবাদ করে প্রকাশ করতে থাকে।

বিডিআর হত্যাকান্ডের মত আরো অনেক স্পর্শকতার ও জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে এসব ‘খবর’ ছাপার আগে দৈনিক আমার দেশ ও নয়া দিগন্তের মত পত্রিকাগুলো একটিবারও সংবাদসূত্র যাচাইয়ের দরকার মনে করেনি।

পরে সেবছর মে মাসের দিকে ঢাকাস্থ শ্রীলঙ্কা দূতাবাস ও কলম্বোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র যখন নিশ্চিত করে জানায় যে, এমন কোনো পত্রিকা বা ওয়েবসাইট শ্রীলঙ্কা থেকে ছাপা বা প্রকাশ হয় না, তখন বোধহয় দেশি পত্রিকাগুলো থামবার কথা ভাবে।

কিন্তু অনলাইনেই খুব সহজে এ ওয়েবসাইটটির নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করা যেত, যেমনটি করে আমরা অনেকেই তখন নিশ্চিত হয়েছিলাম যে এ ওয়েবসাইটটির বিন্দুমাত্র নির্ভরযোগ্যতা নেই।

আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সামান্য কিছু উপায় বেছে নিলেই একজন সাংবাদিক অনলাইনে যে কোনো সংবাদ সূত্রের নির্ভরযোগ্যতা যাচাই করতে পারেন। অফলাইনে একজন সাংবাদিক এর চেয়েও অনেক বেশি পরিশ্রম করে তথ্যসূত্র যাচাই করেন, আর অনলাইনে এটা অনেক ক্ষেত্রেই শুধু কিছু ক্লিকের ব্যাপার;

ওয়েবসাইটটির মালিকানা বা পরিচালনা সম্পর্কে যথেষ্ট তথ্য দেয়া আছে কি না খোঁজ করুন। সাইটের ফুটার বা অ্যাবাউট মি বা অ্যাবাউট আস বা কোম্পানি তথ্য পড়ে দেখুন, ঠিকানা আছে কি না দেখুন। প্রায় সব ভুয়া সাইটেই এসব থাকে না। শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানেও এমন কোনো তথ্য নেই।

সংশ্লিষ্ট লেখক, প্রতিবেদক বা ব্লগারের নাম ও পরিচয় অনলাইনে সার্চ করে দেখুন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় ভুয়া নামগুলো নেয়া হয় ঐতিহাসিকভাবে বা বর্তমানে পরিচিত কোনো নাম থেকে, সাহিত্য-চরিত্র থেকেও নেয়া হয়। যেমন বাংলাদেশ সম্পর্কে ওই ভুয়া সাইটটির অনেক প্রতিবেদকের লেখিকা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে জেসিকা ফক্স নামটি, একজন ব্রিটিশ অভিনেত্রী এ নামে জনপ্রিয়।

ডোমেইন নামটি কে বা কারা নিবন্ধন করেছে, তা দেখতে হু-ইজ সার্চ করে দেখুন। whois.net সহ যেকোনো জনপ্রিয় হু-ইজ সার্চ ব্যবহার করতে পারেন। প্রথমত, নিজেদের নির্ভরযোগ্য বলে দাবি করে এমন কোনো প্রতিষ্ঠানই তাদের ডোমেইন নিবন্ধনে ব্যবহূত তথ্য লুকাবে না। বৃটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান থেকে শুরু করে নেপাল ভিত্তিক ছোট্ট ম্যাগাজিন হিমালম্যাগও ডোমেইন নিবন্ধনে নিজেদের নাম, পরিচয় ইত্যাদি উন্মুক্ত রাখে। কিন্তু যেমন শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ান তাদের তথ্য গোপন রেখেছে প্রাইভেসি সেটিংসের মাধ্যমে।

দ্বিতীয়ত, যাদের নিবন্ধন তথ্য দেয়া আছে, তাদের বেলায়ও প্রতিষ্ঠানের আইনত মালিক যেমন কোম্পানির নাম পরিচয় অনলাইনে আরো যাচাই করে নিন।

ওয়েবসাইটটির বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির অনলাইন তত্পরতার পুরো ইতিহাস জানতে ইন্টারনেট আর্কাইভের archive.org সাহায্য নিন। যেমন আর্কাইভ খুঁজলে দেখতে পাবেন শ্রীলঙ্কা গার্ডিয়ানের প্রথম স্নাপশটটি পাওয়া যায় ২০০৮’র মে মাসে, যেখানে ডোমেইনটির বিকল্প ঠিকানা হিসেবে লঙ্কাগার্ডিয়ান ডট ব্লগস্পটের একটি ঠিকানা দেয়া ছিল। কোনো প্রতিষ্ঠিত নিউজমিডিয়ার বিকল্প ঠিকানা হিসেবে ব্লগ ঠিকানা ব্যবহার করার কথা নয়।

সে বছর ডিসেম্বরের তিরিশের স্নাপশটে দেখতে পাবেন ইমেইল ঠিকানা দেয়া আছে এসএলজিলঙ্কা অ্যাট জিমেইল নামে, এ ইমেইল ঠিকানাটি দিয়ে ফেসবুকে একটি আইডি নিবন্ধন করা আছে, যার ঠিকানা দেয়া হয়েছে নয়া দিল্লি। এ থেকে আপনার বুঝবার কথা যে, পত্রিকাটি দিল্লি থেকেও চালানো হতো একসময়।

পরের বছর ওয়েবসাইটটির ফুটারে দাবি করা হয়, এটি ২০০৭ এর আগস্ট থেকে চালু আছে। এভাবে আর্কাইভে দেখবেন বহুবার ওয়েবসাইটটির ডিজাইন ও নানা তথ্য পাল্টানো হয়েছে, যা একটি নির্ভরযোগ্য নিউজ মিডিয়ার জন্য স্বাভাবিক নয়।

গুগলে ব্লগ google.com.bd/blogsearch ও নিউজ news.google.com সার্চ করে দেখুন এ সাইট, ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আগে অনলাইনে কিসব খবর বা আলোচনা হয়েছে।

ওয়েবসাইটটির গুগল পেজ র্যাংক en.wikipedia.org/wiki/PageRank দেখুন। পেজ র্যাংক বেশি হলে বুঝতে হবে অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সাইটগুলো এর লিঙ্কগুলো প্রায়ই ব্যবহার করে। পরিচয়হীন সাইটগুলোর পেজ র্যাংক বেশি হবার কথা নয়। পেজর্যাংক সার্চ করতে গুগলের টুলবার support.google.com/toolbar বা অন্য কোনো সার্চ সাইট যেমন prchecker.info ব্যবহার করতে পারেন।

যদি ইমেইল ঠিকানা বা ফোন নম্বর দেয়া থাকে তবে যোগাযোগ করে নিন। ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানটি যদি অফলাইন ও অনলাইনে একেবারেই অপরিচিত হয় তবে প্রশ্ন করুন যে, ঠিক কি কারণে তাদের বা খবরটির ওপর নির্ভর করা হবে।

নাম-পরিচয়হীন বা অল্প পরিচিত কোনো ওয়েবসাইট সূত্রের খবর যদি সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে খুব বেশি পরিমাণ ছড়িয়ে পড়ে আগে, যদি সেই স্টোরিটি কোনো প্রচলিত গণমাধ্যম বা প্রতিষ্ঠিত অনলাইন মিডিয়াকে দিতেই হয়, তবে এসব যাচাই-বাছাই করে, যাচাই-বাছাইয়ে পাওয়া তথ্যসহই পাঠককে দেয়া উচিত। স্টোরিতে স্পষ্ট করে বলে দিতে হবে যে, এ খবরের সূত্রটি সম্পর্কে কিছু জানা যায় না, অথবা এটুকু জানা গেছে।

Source: http://motamot.newsnextbd.com/m-arju/article.284.nn/
MD.LAZMINUR ALAM
|| BA (Hons) in English || || MBA in Marketing ||

Senior Student Counselor
Daffodil International University
Cell: 01713493051
E-mail: lazminur@daffodilvarsity.edu.bd
            lazminurat@yahoo.com
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd

Offline Tahsina

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 314
  • Test
    • View Profile
This should be circulated... I have seen people/students who 'share' things on Facebook without even judging the authenticity of the source.
Tahsina Yasmin
Associate Professor
Department of English, DIU


Offline akazad600

  • Newbie
  • *
  • Posts: 45
  • Test
    • View Profile

Offline sadiur Rahman

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 199
  • Test
    • View Profile
Its an important thing. Thanks for this valuable share.
Shah Muhammad Sadiur Rahman
Coordination Officer
Department of Multimedia & Creative Technology (MCT)
Email:mctoffice@daffodilvarsity.edu.bd
Cell:01847140056(CP),Ext:160

Offline Shahriar Mohammad Kamal

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 337
  • Test
    • View Profile


Offline monirulenam

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 295
  • Test
    • View Profile
সুন্দর  নির্ভর যোগ্য খবর