অনেক ধরণের বদ অভ্যাস আমরা বেশ আনন্দ নিয়েই লালন করে থাকি। কারণ একটাই, অভ্যাসগুলো অনেকাংশেই আমাদের টানে। প্রায় প্রত্যেকেই জানি এই অভ্যাসগুলো খারাপ, তারপরও কাজগুলো করার আকর্ষণ সামলে রাখা সম্ভব হয় না। কিন্তু এই সব অভ্যাসের ফলাফল কী ভালো হয়? বর্তমানে তেমন কোনো বড় ধরণের ক্ষতি না হলেও পরবর্তীতে এই অভ্যাস গুলোর জন্য অনেক ক্ষতি হয়। অনেক ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য এই বদ অভ্যাসগুলোই দায়ী। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত গড়াতে পারে এই বদ অভ্যাসগুলোর ফলাফল! যতই লোভনীয় ও আকর্ষণীয় হোক না কেন এই বদ অভ্যাসগুলো অতি দ্রুত ত্যাগ করা প্রয়োজন। বদলে ফেলুন এই জাতীয় সকল বদ অভ্যাস।
ফাস্ট ফুডের আসক্তি
ফাস্ট ফুড জিনিষটি অবশ্যই সুস্বাদু। কিন্তু তাই বলে ঘন ঘন ফাস্ট ফুড খাওয়া মোটেও ঠিক নয়। ফাস্ট ফুড খাওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করার ফলাফল পুরোটাই স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে। হয়তো ১/২ সপ্তাহে এর মাত্রাতিরিক্ত ফ্যাটের কাজ নিজের দেহে দেখতে পাবেন। কিন্তু দেহে জমা হওয়া কোলেস্টরলের ফলাফল দেখতে না পেলেও পরে ঠিকই টের পাবেন। ইদানিং অনেক কম বয়সী নারী পুরুষকে স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের কবলে পরতে দেখা যাচ্ছে। এর মূল কারণ ফাস্ট ফুডে আসক্তি। সুতরাং এই অভ্যাসটি বদলে ফেলুন।
অতিরিক্ত টিভি ভক্তি
হাতে কিছু ভাজাপোড়া নিয়ে টিভির সামনে সোফায় শুয়ে-বসে কাটাতে পছন্দ করেন অনেকেই। সময় পেলেই চিপস বা অন্যান্য স্নাকস নিয়ে টিভি দেখতে বসে যান। কিন্তু আপনি জানেন কি, এমনটা করে আপনি আপনার হার্ট ও চোখের কত বড় ক্ষতি করে চলেছেন? যারা টিভি বেশি দেখেন তাদের হার্ট অ্যাটাক, চোখের ক্ষীণ দৃষ্টি, স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এই কাজটি করা থেকে বিরত থাকুন।
রাত জাগা/ রাতে দেরি করে ঘুমানো
মধ্য বয়সীদের অফিসের কাজের চাপ এবং তরুণদের ফেসবুক বা ফোনে কথালাপে রাত শেষ হয়ে ভোর হয়। অনেকেই নানান কারনে আবার অনেকেই বিনা কারনে রাত জাগা ও দেরি করে ঘুমানো অভ্যাসে পরিনত করে ফেলেছেন। কিন্তু ডাক্তারদের মতে, দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা টানা না ঘুমিয়ে আপনারা নিজেরাই দেহের ইমিউন সিস্টেমকে দুর্বল করে ফেলছেন। ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হলে যে কোন রোগে দ্রুত আক্রান্তের সম্ভাবনা বেশি থাকে। রাত ১২ টার মধ্যে ঘুমুতে চেষ্টা করুন। রাত জাগা বা দেরি করে ঘুমানোর অভ্যাস বদলে ফেলুন।
সামান্য কিছুতেই ঔষধ খাওয়া
সামান্য মাথাব্যথা কিংবা পেটে ব্যথা হলেই অনেকে হুটহাট ব্যথানাশক ঔষুধ খেতে দেখা যায়। এই কাজটি করা বন্ধ করুন। বেশির ভাগ ব্যথানাশক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশ ভয়াবহ হয়। সুতরাং ডাক্তারের সাথে পরামর্শ না করে কোন প্রকার ঔষধ খাবেন না।
কানে সব সময় হেডফোন গুঁজে রাখা
দিনে রাতে, অবসর সময়ে কিংবা কাজের মাঝে আবার কোথাও বেড়াতে বেরুলে অনেকেই হেডফোনে গান শুনতে থাকেন। এটা বেশ ক্ষতিকর আপনার কানের জন্য। এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার কানে শোনা সমস্যা সহ ব্রেইনের ক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে। সুতরাং গান শুনুন কিন্তু বেশি জোরে না এবং অল্প সময় ধরে।
ঘুমানোর আগে দাঁত ব্রাশ না করা
ছোট বেলার এই বাজে অভ্যাস বড় হওয়ার পরও অনেকে বদলান না। আলসেমি করে রাতে বিছানায় গাঁএলিয়ে শুয়ে পরেন। দাঁত মাজাকে বেশি গুরুত্ব দেন না অনেকেই। কিন্তু এতে আপনি আপনার মুখে ব্যাকটেরিয়ার খাবার জন্য অনেক কিছুই রেখে দেন। এবং ব্যাকটেরিয়া খাবারের সাথে সাথে আপনার দাঁতের ওপরেও হামলা চালাতে ব্যস্ত হয়ে পরে। ফলশ্রুতিতে দাঁতের অপূরণীয় ক্ষতি হয়। সুতরাং ঘুমানোর আগে অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করবেন।