এশিয়ার নীরব প্রাণঘাতক ‘সুপারি’

Author Topic: এশিয়ার নীরব প্রাণঘাতক ‘সুপারি’  (Read 895 times)

Offline dr.nurul

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 65
  • Test
    • View Profile
বিশ্বের মোট জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-দশমাংশ এটি ব্যবহার করে। চাঙা করার ক্ষেত্রে ছয় কাপ কফির সমান ফল দেয় এটি। কোথাও কোথাও একে দেখা হয় ভালোবাসা ও বিয়ের প্রতীক হিসেবে। আবার কখনো কখনো এটি বদহজম ও বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যার ওষুধ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এত গুণসম্পন্ন বস্তুটির নাম ‘সুপারি’। তবে হালে ক্যানসারের সঙ্গে এর সংশ্লিষ্টতার কারণে এটি ‘নীরব মরণ ঘাতক’ হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

বিবিসি অনলাইনের খবরে বলা হয়েছে, সুপারির জন্য এশিয়া প্রসিদ্ধ। উদ্দীপক উপাদানের কারণে অনেকেই নিয়মিত সুপারি চিবিয়ে থাকেন। বিশেষ করে গাড়ি চালানো, মাছ ধরা কিংবা নির্মাণকাজের মতো বিষয়ে যাঁরা যুক্ত থাকেন, তাঁরা দীর্ঘ সময় জেগে থাকার জন্য এটি ব্যবহার করেন। সুপারিকে তাই মানসিক বিভ্রম সৃষ্টিকারী মাদক হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বাংলাদেশেও পানের সঙ্গে সুপারি খাওয়া হয়। বহু মানুষ এটিতে অভ্যস্ত। তবে এভাবে সুপারিতে আসক্তির বড় সমস্যা হলো, সুপারিতে অভ্যস্ত মানুষের মুখের ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে। এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এতটাই যে, প্রথমবার সুপারি খাওয়ার কয়েক দশক পরও এর প্রভাবে কারও মুখে ক্যানসার হতে পারে।

এশিয়ার যেসব দেশে সুপারি অনেক বেশি জনপ্রিয় তাইওয়ান সেগুলোর একটি। সুপারি ‘তাইওয়ানের চুইং গাম’ হিসেবে পরিচিত। সুযোগ পেলেই এখানকার বাসিন্দারা চুইং গামের মতো সুপারি চিবোতে পছন্দ করেন। এখনো খালি সুপারি চিবোন তাঁরা; আবার কখনো পানপাতা, চুন, এলাচি বা দারুচিনির মতো মসলার সঙ্গে মিশিয়ে সুপারি খেয়ে থাকেন তাঁরা। বিষয়টি এখানকার সংস্কৃতির অংশ হয়ে পড়েছে। তবে ক্যানসারের মতো মরণব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে এর খেসারত দিতে হচ্ছে ব্যবহারকারীদের।

আন্তর্জাতিক ক্যানসার গবেষণা সংস্থা এসব উপাদানের মধ্যে চুনকে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। পান-সুপারির সঙ্গে চুন ব্যবহারের ফলে মুখের ভেতর ক্ষত তৈরি হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্যানসার সৃষ্টিকারী উপাদান ক্ষতের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করতে পারে।

তাইওয়ানের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হসপিটালের মুখের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ হান লিয়াং-জুন বলেন, অর্ধেক মানুষ এখনো জানেই না যে সুপারি মুখের ক্যানসারের অন্যতম কারণ। সুপারির কারণে মুখের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুহারের দিক থেকে শীর্ষ তিনটি দেশের একটি তাইওয়ান।

তাইওয়ানের সরকার মানুষের জীবন বাঁচাতে বহু বছরের পুরোনো এই অভ্যাসটি কমিয়ে আনতে নানা ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের ফলও পেতে শুরু করেছে দেশটি। সুপারি ব্যবহারকারীর সংখ্যা খানিকটা কমেছে। সুপারির কুফল সম্পর্কে ব্যবহারকারীদের সচেতন করতে ভারত ও থাইল্যান্ডও প্রচারকাজ শুরু করেছে।