অনেক সময় রাতে ঘুম আসে না। চোখের পাতা বন্ধ করাই দুঃসাধ্য হয়ে ওঠে। খেয়াল করলে দেখা যাবে, হয়তো শোয়ার আগে অনেকক্ষণ টেলিভিশনে কোনো অনুষ্ঠান দেখেছি। অথবা স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট কম্পিউটারে সময় কাটিয়েছি বেশি। তাই আর ঘুম আসছে না। কী করব?
১. গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট থেকে যে আলোর বিচ্ছুরণ ঘটে তার নীলাভ অংশটি শরীরে মেলাটোনিন হরমোন তৈরিতে বাধা দেয়। এই হরমোন মানুষকে ঘুম পাড়াতে সাহায্য করে। শরীর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এটা তৈরি করে। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় এসব স্মার্টফোন বা ট্যাবের অতি ব্যবহারে। তাই রাতে ঘুমের আগে যথাসম্ভব এসব ব্যবহার না করাই ভালো।
২. অনেকের অবশ্য ঘুমের আগে একটু স্মার্টফোনে ঘোরাঘুরি না করলেই নয়। তারা কমলা রঙের চশমা ব্যবহার করতে পারেন। কারণ, এটা ইলেকট্রনিক পর্দা থেকে নিঃসরিত নির্দিষ্ট তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের আলোকরশ্মি, বিশেষভাবে নীল আলো আটকে দেয়। এ জন্য একে ‘নীল প্রতিরোধক’ (ব্লু ব্লকার) বলে। রাতে স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট বেশি ব্যবহারের সময় এ চশমা পরলে ঘুমের সমস্যা হয় না। দ্য জার্নাল অব অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ-এর অাগস্ট, ২০১৫ সংখ্যায় প্রকাশিত ১৩ জন তরুণের ওপর পরিচালিত এক সুইস জরিপে দেখা গেছে, সন্ধ্যায় এক সপ্তাহ কমলা রঙের কাচের চশমা ব্যবহার করায় মেলাটোনিন প্রতিবন্ধকতা রোধ করা সম্ভব হয়েছে, যার ফলে ঘুম এসেছে সহজে।
৩. এলইডি (লাইট এমিটিং ডায়োড) ব্যাক লাইটের টেলিভিশনও নীল রং ছড়ায়। কিন্তু দূর থেকে দেখলে তেমন সমস্যা নেই। এসব টিভি বেশি কাছ থেকে না দেখাই ভালো। আবার আজকাল টিভিতে এলইডি বাতির নীল রং কমানোর ব্যবস্থাও হয়েছে।
৪. তবে শুধু নীল আলোই সমস্যা নয়। রং ছাড়াও তীব্র আলো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই সন্ধ্যায় তীব্র আলোতে বেশিক্ষণ কাজ না করাই ভালো।
৫. বিশেষজ্ঞরা বলেন, ঘুমের সমস্যা এড়ানোর জন্য সব ধরনের ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি বাদ দিয়ে চলা কোনো কাজের কথা নয়। তাই কিছু সতর্কতা নিয়ে আইফোন বা এ ধরনের স্মার্টফোন ব্যবহার করা যায়। সন্ধ্যার পর চোখের একটু দূরে রেখে অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করলে তেমন কোনো সমস্যা হয় না।
সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিজ্ঞান অধ্যায়, ৭ এপ্রিল ২০১৫