বয়স যখন ষাটোর্ধ্ব

Author Topic: বয়স যখন ষাটোর্ধ্ব  (Read 882 times)

Offline moonmoon

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 206
  • Test
    • View Profile
বয়স যখন ষাটোর্ধ্ব
« on: April 20, 2015, 07:55:43 PM »
বার্ধক্যে পুষ্টিবার্ধক্যে কায়িক শ্রম কমে যায়, কমে যায় খাবারে দৈনিক ক্যালরি চাহিদাও। কিন্তু সেই সঙ্গে পর্যাপ্ত ভিটামিন ও খনিজের প্রয়োজনীয়তা বজায় থাকে। আবার খাবারে রুচি কমে যাওয়া বা নানা ওষুধের প্রতিক্রিয়া অনেক সময়ই বৃদ্ধ ব্যক্তিদের দুর্বলতা, অবসাদ বা ক্লান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অনেক সময় তাঁরা নিজের প্রয়োজন বা চাহিদার কথা ভালো করে বুঝিয়ে বলতেও পারেন না। গবেষণা বলছে, বয়স্ক ব্যক্তিরা প্রয়োজনের তুলনায় ৪০ শতাংশ খাবার কম খেয়ে থাকেন। তাই বাড়ির ষাটোর্ধ্ব ব্যক্তিটির পুষ্টি ও খাদ্যাভ্যাসের দিকে সবারই বিশেষ নজর দেওয়া দরকার।

 বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখা দেয় ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হূদেরাগ, কিডনি জটিলতাসহ নানা সমস্যা। সে অনুযায়ী গড়ে তুলতে হবে খাদ্যাভ্যাস। যেমন: পাতে লবণ ছেড়ে দেওয়ার মতো বিষয়গুলোকে নতুন করে হলেও রপ্ত করতে হবে। দীর্ঘদিনের পুরোনো অভ্যাস যেমন জর্দা-পানকে হঠাৎ করে বিদায় দিতে হয়তো চাইবেন না তাঁরা, কিন্তু বিষয়টির গুরুত্ব বুঝিয়ে বলতে হবে।

 দাঁত পড়ে যাওয়া বা নড়বড়ে হওয়ার কারণে শক্ত খাবার চিবিয়ে খাওয়া সম্ভব হয় না অনেকের পক্ষে। সে ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে, শুধু তরল বা আধা শক্ত খাবারে যেন সুষম খাদ্যের সবটুকু উপাদানই বজায় থাকে।

 বয়স বাড়ার সঙ্গে হজমশক্তিও হ্রাস পায়, পরিপাকে বিঘ্ন ঘটে। তাই এ সময় সহজপাচ্য খাবারই বেছে নেওয়া ভালো। গুরুপাক, বেশি তেল ও মসলাযুক্ত খাবার, কেনা ও ভাজাপোড়া খাবার যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাই ভালো। আলু, মাছ, ডিম ইত্যাদি সহজপাচ্য খাদ্য। আবার কোষ্ঠকাঠিন্যও একটি সাধারণ সমস্যা। এটি এড়াতে আঁশযুক্ত খাবার, পর্যাপ্ত পানি ও রোজ ইসবগুলের ভুসির শরবত দেওয়া যায়।

 বয়স্ক ব্যক্তিদের একাকিত্ববোধ, হতাশা, বিষণ্নতা ইত্যাদি মানসিক সমস্যার ঝুঁকি বেশি। এসব কারণে প্রায়ই দেখা দেয় খাবারে অনীহা। প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এসব মানসিক সমস্যার সমাধান করতে হবে।

 প্রতি কেজি ওজন অনুযায়ী দশমিক ৯ গ্রাম আমিষ দরকার হয়। মাছ-মাংস বেশি খেতে না পারলে এই আমিষের চাহিদা পূরণের জন্য মুরগির স্যুপ, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া উচিত। কাঁচা শাকসবজি বা ফলমূল হজম না হলে সবজির স্যুপ ও ফলের রস করে দেওয়া যায়। ক্যালসিয়ামের উৎস হিসেবে দুধ বা দই প্রতিদিনের তালিকায় রাখা উচিত।

 বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য উপযোগী কিছু খাবার হলো নরম খিচুড়ি, দুধ বা দই দিয়ে চিড়া, স্যুপ, দুধ-রুটি বা দুধ-সাগু ইত্যাদি। নাশতা হিসেবে ফলের রস, পুডিং, সবজির যেমন: গাজরের হালুয়া, ফলমিশ্রিত কাস্টার্ড ইত্যাদি। একই খাবারে বিরক্তি বোধ করলে খাবারে বৈচিত্র্য আনতে হবে।
- See more at: http://www.ebanglahealth.com/5268#sthash.RoP72cNi.dpuf