এটা বিরাট এক অর্জন

Author Topic: এটা বিরাট এক অর্জন  (Read 479 times)

JEWEL KUMAR ROY

  • Guest
এটা বিরাট এক অর্জন
« on: May 03, 2015, 02:28:51 PM »
টেস্টে নিজের সপ্তম সেঞ্চুরিটি করে ফেলেছিলেন আগের দিনই। দিন শেষে ১৩৮ রানে অপরাজিত থেকে কাল করলেন টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পক্ষে দ্বিতীয় ডাবল সেঞ্চুরি। সঙ্গী ওপেনার ইমরুল কায়েসের সঙ্গে নাম লেখালেন অনেক রেকর্ডেও। শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের সঙ্গে টেস্ট ড্র করার পর ম্যান অব ম্যাচ তামিম ইকবাল জানালেন তাঁর অনুভূতি আর ভবিষ্যৎ লক্ষ্যের কথা—

l ডাবল সেঞ্চুরি করলেও ইনিংসটা শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হলো না—

তামিম: আমি চেষ্টা করছিলাম, অন্তত চা-বিরতি পর্যন্ত ব্যাটিং করতে। লক্ষ্য ছিল ওটাই। ভেবেছিলাম তাহলে খেলাটা আমাদের জন্য সহজ হয়ে যাবে। পুরোপুরি আমাদের পক্ষে এসে যাবে।

lযেমন যাচ্ছে ক্যারিয়ারের এই সময়টা—

তামিম: একটাই জিনিস—ব্যাটিংটা উপভোগ করছি। এর চেয়ে বেশি নয়। হয়তো ভালো ব্যাটিং করছি, রান হচ্ছে। এই জিনিসটা যত বেশি দিন ধরে রাখা যায় ততই আমার জন্য ভালো হবে। খারাপ সময় কখন আসবে সেটা তো কেউই জানে না। খারাপ সময়ে এই ভালো সময়টা কাজে দেবে।

l বিশ্ব রেকর্ডের অনুভূতি

.তামিম: এটা বিরাট এক অর্জন। একটা বিশ্ব রেকর্ডে বাংলাদেশের দুজনের নাম থাকাটা খুবই আনন্দের। আমরা দুজনই চেষ্টা করব বাংলাদেশকে যতটা সম্ভব ভালো শুরু এনে দেওয়ার।
নিজের ব্যাটিং ও জুটি নিয়ে পরিকল্পনা
তামিম: আমি সব সময়ই আমার জন্য খুব উঁচু একটা মানদণ্ড ঠিক করে নিই। হয়তো বা যেটি ঠিক করেছিলাম, সেখানে পৌঁছাতে পারিনি। তবে ডাবল সেঞ্চুরি করায় একটা স্বপ্ন তো অবশ্যই পূর্ণ হয়েছে। আমি অনেক খুশি। ক্রিকেটার হিসেবে যে লক্ষ্যগুলো ঠিক করেছি, আস্তে আস্তে সেগুলোও যদি পূরণ করতে পারি, আমিই হব সবচেয়ে সুখী মানুষ। আর জুটি নিয়ে বলব...কাল আমাদের সেঞ্চুরি হওয়ার পর, নিজেরা কথা বলেছি। বলেছি আমাদের নিজেদের কাজ শেষ। এখান থেকে যা-ই হবে, দলের জন্য হবে। আমাদের পরিকল্পনা
ছিল সময়ক্ষেপণ করা, তবে তার মধ্যেও ইতিবাচক থাকতে হবে। আজ (গতকাল) যখন ব্যাটিং করতে নামি, নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলাম, আমরা যদি লাঞ্চ পর্যন্ত ব্যাটিং করতে পারি খেলাটা আমাদের দিকে এসে যাবে। দুর্ভাগ্যক্রমে ইমরুল লাঞ্চের কিছুক্ষণ আগে আউট হয়ে যায়। তবে আমি মনে করি, পুরো ইনিংসে সে যেভাবে ব্যাটিং করেছে, এককথায় অসাধারণ। ব্যতিক্রমীও বলব, কারণ কখনোই সে তার ব্যাটিংয়ের চরিত্র থেকে বের হয়নি। আমার দেখা অন্যতম সেরা ইনিংস।

টেস্ট ড্রয়ে ইমরুলের সেঞ্চুরির অবদান

তামিম: আমি মনে করি দুজনের সমানই অবদান আছে। শুধু আমি আর ইমরুল নয়, তাইজুলের কথাও বলতে হবে। তাইজুল যদি ৬ উইকেট না পেত তাহলে হয়তো ওরা আরও কিছু সময় ব্যাটিং করত। তখন আমাদের জন্য আরও কঠিন হতো। তা ছাড়া আমি আর ইমরুল আউট হয়ে যাওয়ার পর সাকিব যেভাবে খেলেছে, রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাই যেভাবে খেলেছেন, তাদেরও সমান কৃতিত্ব দেব।

ওপেনিং সঙ্গী হিসেবে ইমরুল মূল্যায়ন

তামিম: আমার ক্যারিয়ারে অনেক ওপেনিং সঙ্গীই এসেছে। সবার সঙ্গেই আমি ব্যাটিংটা উপভোগ করি। এ রকম কেউ নেই যে কারও সঙ্গে ব্যাটিং উপভোগ করি না। হ্যাঁ, ইমরুলের সঙ্গে জুটিটা ভালো হয়। এটা অবশ্যই একটা প্লাস পয়েন্ট। আর ও যেভাবে ক্রিকেট খেলছে, ওর সঙ্গে যেকোনো ব্যাটসম্যানই ব্যাটিং উপভোগ করবে।

২৯৬ রানে পিছিয়ে থাকার পর ব্যাটিং নিয়ে পরিকল্পনা

তামিম: আমাদের কোনো বাড়তি চাপ দেওয়া হয়নি। কোচ বলেছিলেন, মনে করো প্রথম ইনিংস ব্যাট করছ। যা ভালো মনে হয় তাই করবে। এটা আমার কাছে খুব ইতিবাচক মনে হয়। যার যেটা খেলা উনি সেটাকেই সমর্থন করেন। এমনকি আক্রমণাত্মক খেলতে গিয়ে কেউ যদি ১০ রান করেও একটা ছয় মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায়, তাতেও তাঁর কোনো সমস্যা থাকে না।

ছক্কা মেরে ডাবল সেঞ্চুরি

তামিম: ১৬৯-এ যখন ছিলাম তখন থেকে ডাবল সেঞ্চুরি নিয়ে চিন্তা শুরু করি। তারপর তো তিনটি ছয় হয়ে গেল। ১৯৫-এর সময় আমি জানতাম সে ওই জায়গায়ই বল করবে। পরিকল্পনাটা আমার জন্য খুব ভালো ছিল। আর ৯৫-৯৬ রানে গেলে তাড়াতাড়ি সেঞ্চুরি করে ফেলাটাই আমি উপভোগ করি।

টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ও মুশফিকের প্রতিক্রিয়া

তামিম: আমার কাছে মনে হয় আগামী এক বছরের মধ্যে রেকর্ডটা আবারও ভাঙবে। মুশফিক যেভাবে ব্যাটিং করে, ওর-ই সেটা ভাঙার সম্ভাবনা বেশি। আমাদের দলের সেরা ব্যাটসম্যান ও। তবে মুশফিক ভাঙুক বা অন্য কেউ, সেটা কোনো ব্যাপার না। বাংলাদেশি একজন ভাঙলেই হয়। আমি রেকর্ড ভাঙায় মুশফিকের খারাপ লেগেছে, ও এটা রসিকতা করেই বলেছে বলে আমার বিশ্বাস। আমার খারাপ সময়ে সেই আমাকে সমর্থন দিয়েছে, আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে। আমার মনে হয় না তার খারাপ লেগেছে। আমি নিশ্চিত সে আমার মতোই খুশি।

পরশু সেঞ্চুরির পর সেটা আগের রাতে মারা যাওয়া ফুপুকে উৎসর্গ করেছেন। ডাবল সেঞ্চুরি কাকে উৎসর্গ করবেন?

তামিম: কাল (পরশু) আমার জন্য খুব দুঃখের দিন ছিল। আজ (গতকাল) দুই শ রান করেছি। এটা দলকেই উৎসর্গ করতে চাই। তবে দুই শ রানের চেয়ে বেশি ছিল অত সময় ধরে ব্যাটিং করতে পারা। এটা টেস্ট ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।

বাংলাদেশের হয়ে সব ফরম্যাটের ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের মালিক আপনি

তামিম: আমার আসলেই খুব ভালো লাগছে এতে। ক্রিকেটের বড় খেলোয়াড়দের দেখবেন, ভালো সময়ে তারা এমন সব বড় বড় কীর্তি গড়ে রাখে যে, বাজে সময়ে খারাপ কিছু আলোচনার সুযোগই থাকে না। আমিও ও রকম কিছু করতে চাই।