« on: June 13, 2015, 04:48:45 PM »
বিদ‘আত
যে বিশ্বাস বা কাজ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করেননি কিংবা পালন করার
নির্দেশ দেননি সেই ধরনের বিশ্বাস বা কাজকে দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত করা,এর অঙ্গ বলে সাব্যস্ত করা,সওয়াব বা আল্লাহর
নৈকট্য লাভের উপায় মনে করা, এই ধরনের কাজ করার নাম বিদ‘আত। আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলে কারীম
সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:“যে আমাদের এ ধর্মে এমন কোন নতুন বিষয় উদ্ভাবন করবে যা ধর্মে
অন্তর্ভুক্ত ছিল না তা প্রত্যাখ্যাত হবে”। (বুখারী ও মুসলিম) এ হাদীস দ্বারা স্পষ্ট হল যে,নতুন আবিস্কৃত বিষয়টি যদি
ধর্মের অন্তর্ভুক্ত বা আল্লাহর নৈকট্য লাভের উপায় বলে ধরে নেয়া হয় তাহলে তা বিদ‘আত ও প্রত্যাখ্যাত।
হাদীসে আরো এসেছে:“যে ব্যক্তি এমন কাজ করল যার প্রতি আমাদের (ইসলামের) নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত”।(মুসলিম) এ
হাদীসে “যার প্রতি আমাদের নির্দেশ নেই” বাক্যটি দ্বারা এ কথা বুঝানো হয়েছে যে, বিষয়টি ধর্মীয় হতে হবে। ধর্মীয় বিষয়
হিসাবে কোন নতুন ‘আমল করলেই বিদ‘আত হবে।
1. উচ্চ স্বরে যিকির করা ।
2. ইল্লাল্লাহর যিকির করা ।
4. শবে বরাত পালন করা, শবে বরাতে হালুয়া রুটি তৈরী করা এবং ইহাকে ছওয়াবের কাজ মনে করা।
6. জন্মদিন পালন (খ্রীষ্টানদের ন্যায়)
7. ঈদ ছাড়া অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের উৎসব পালন (যেমন ক্রিষ্টমাস ডে, নিউ ইয়ার ডে, বৈশাখে উল্কি কাঁটা, সূর্যের
পুজা বা বৈশাখের বন্দনা, ভ্যালেন্টাইনস ডে, হোলি, পুজা পার্বণ, এপ্রিলস ফুল, ইত্যাদি দিবস যা অমুসলিমদের
ধর্মীয় আচার থেকে এসছে)
8. ফরজ নামাজের পর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করা ।
10. ঈদে মিলাদুন্নবি পালন করা।
12. মৃত ব্যক্তির জন্য চারদিন পর কুলখানি, চল্লিশ দিন পর চল্লিশা এর পর মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা।
13. অর্থের বিনিময়ে কুরআন পাঠ করা।
14. গুরু জনদের ‘কদমবুসি’ করা।
15. বিয়ে/এনগেজমেন্ট-এর আংটি পরা।
16. সুন্নাহ-র আংটি বহির্ভুত আংটি পড়া ছেলেদের সোনার চেইন, আংটি পরা।
17. পুরুষদের পায়ের গিড়ার নীচে প্যান্ট/পোষাক পরা।
18. দাড়ি শেভ করা (দাড়ি রাখা সুন্নাত, আর কাঁটা হারাম হিসেবে বিবেচিত! অথচ আমরা অনেকেই তা জানিনা বা খেয়াল
19. সিল্ক-এর পাঞ্জাবি পরা ইত্যাদি আরো অসংখ্য বিদআত ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
1. বিদ’আতীর কোন আমল কবুল করা হবে ।
2. বিদ’আত পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত বিদ’আতীর কোন প্রকার তওবাহ করার সুযোগ জুটবে না ।
3. বিদ’আতী নবী (সাঃ) এর হাওযে কাওসারের পানি পান করা হতে বঞ্চিত হবে ।
5. বিদ’আতীর নিকট যাওয়া ও তাকে সম্মান করা ইসলামকে ধ্বংস করার শামিল ।
বাংলাদেশে প্রচলিত কিছু বিদ‘আত
বিদআত এর পরিণাম
6. আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট হতে বিদ’আতীর দূরত্ব বাড়তেই থাকবে ।
7. বিদ’আত ইসলামী লোকদের মাঝে দুশমনী , ঘৃণা , বিভেদ ও বিভক্তি সৃষ্টি করে ।
8. বিদ’আত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর শাফা’আত প্রাপ্তি হতে বাধা প্রদান করবে ।
9. বিদ’আত সহীহ সুন্নাহকে বিতাড়িত করে তার স্থলাভিষিক্ত হয় ।
10. বিদ’আত সৃষ্টিকারী তার নিজের ও তার অনুসরণকারী বিদ’আতের সাথে জড়িত প্রত্যেক ব্যক্তির সমপরিমাণ গুনাহের
11. বিদ’আতীর উপর দুনিয়াতে বেইজ্জতী আর আখেরাতে আল্লাহর ক্রোধ চাপিয়ে দেয়া হবে ।
12. সুন্নাতের বিরোধীতা করার কারণে বিদ’আতী নিজেকে ফিতনার মধ্যে নিক্ষেপ করে ।
13. বিদ’আতের অন্যতম ভয়াবহতা কারণ এই যে , সহীহ সুন্নাহ , তার ধারক – বাহক ও তার উপর আমলকারীকে বিদ’আতী
ঘৃণা করবে এবং তাকে মন্দ জানবে ।
14. বিদ’আতী নিজেকে শরী’আতের মধ্যে কিছু সংযোজনকরী হিসাবে প্রকাশ করে ।
15. বিদ’আত হচ্ছে জ্ঞান ছাড়া আল্লাহর ব্যাপারে কথা বলা ।
কুরআন ও সুন্নাহ হল মুসলিম উম্মাহ ও ইসলামের রক্ষা কবচ। ইসলাম ধর্মের অস্তিত্বের একমাত্র উপাদান। তাইতো
বিদায় হজ্জেও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : আমি তোমাদের জন্য দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি
যতক্ষণ তোমরা তা আঁকড়ে রাখবে ততক্ষণ বিভ্রান্ত হবে না।
বিদ‘আত অনুযায়ী ‘আমল করলে কুরআন ও সুন্নাহর মর্যাদা মানুষের অন্তর থেকে কমে যায়। ‘যে কোন নেক ‘আমল
কুরআন ও সুন্নাহ দ্বারা প্রমাণিত হতে হবে’ – এ অনুভূতি মানুষের অন্তর থেকে ধীরে ধীরে লোপ পেতে থাকে। তারা
কুরআন ও হাদীসের উদ্ধৃতি বাদ দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি, পীর-মাশায়েখ ও ইমামদের উদ্ধৃতি দিয়ে থাকে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : শুনে রেখ! হাউজে কাউছারের কাছে তোমাদের সাথে আমার দেখা
হবে। তোমাদের সংখ্যার আধিক্য নিয়ে আমি গর্ব করব। সেই দিন তোমরা আমার চেহারা মলিন করে দিওনা। জেনে রেখ!
আমি সেদিন অনেক মানষু কে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করার চেষ্টা চালাব। কিন্তু তাদের অনেককে আমার থেকে দূরে সরিয়ে
নেয়া হবে। আমি বলব : হে আমার প্রতিপালক! তারা তো আমার প্রিয় সাথী-সঙ্গী, আমার অনুসারী। কেন তাদের দূরে
সরিয়ে দেয়া হচ্ছে? তিনি উত্তর দিবেন : আপনি জানেন না যে, আপনার চলে আসার পর তারা ধমের্র মধ্যে কি কি নতুন
বিষয় আবিস্কার করেছে। (ইবনে মাজাহ)
অন্য এক বর্ণনায় আছে এর পর আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তাদের উদ্দেশে বলবেন :দূর
প্রত্যেক ইমাম-ই যদি বিদআতগুলোর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন, তবে সাধারণ মুসলমানরা অবশ্যই সেগুলো ছাড়তে বাধ্য !
অতএব সকল ইমাম ও ওয়ায়েজগনের উচিৎ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ কাজে নেমে পরা !
মহান আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদেরকে পরিশুদ্ধ আকীদা ও বিশ্বাস সহকারে ঈমান রক্ষা
করে বিদ‘আত মুক্ত জীবন গড়ার তাওফীক দান করেন। আমীন!
« Last Edit: June 16, 2015, 04:49:12 PM by habib »

Logged
Md. Habibur Rahman
Officer, Finance & Accounts
Daffodil International University (DIU)
Corporate Office, Daffodil Family
Phone: +88 02 9138234-5 (Ext: 140)
Cell: 01847-140060, 01812-588460