ডিএনএ ফিঙ্গার-প্রিন্টিং (যাকে ডিএনএ প্রোফাইল বা জেনেটিক ফিঙ্গার-প্রিন্টিং ও বলা হয়), হল একটি অত্যাধুনিক শনাক্তকরণ পদ্ধতি, যার মাধ্যমে কোষের মধ্যে অবস্থিত ডিএনএ এর মাধ্যমে কোন মানুষকে সঠিক ভাবে শনাক্ত করা যায় । প্রতিটি মানুষের আঙুলের ছাপের যেমন স্বাতন্ত্র্যতা থাকে, তেমনি তার কোষস্থ ডিএনএ এর গঠন ভঙ্গিতেও স্বাতন্ত্র্যতা দেখা যায় । দুটি মানুষের মধ্যে যেমন আঙুলের ছাপের পার্থক্য লক্ষণীয় তেমনি ডিএনএ সজ্জার মধ্যেও পার্থক্য দেখা যায় । ডিএনএ এর এমন পার্থক্যের ভিত্তিতে দুটি মানুষকে আলাদা করা যায় । সহোদর যমজ ছাড়া প্রত্যেক মানুষেরই ডিএনএ সজ্জা আলাদা । বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে জেনেছেন যে মানুষের ডিএনএ এর মধ্যে এমন কিছু নিউক্লিওটাইড রিপিট থাকে যা নির্দিষ্ট মাতা এবং পিতার সঙ্গে কেবলমাত্র তাদের সন্তানেরাই ভাগ করে নেয় । মানুষের ক্ষেত্রে শ্বেত-কণিকার বা শুক্ররসে, চুলের গোড়ায় অথবা অস্থিতে অবস্থিত কোষ থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে ফিঙ্গার প্রিন্টিং করা হয়। ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং কে পূর্ণ জিনোম সজ্জাকরন এর সাথে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয় ।
বহুদিন আগে থেকেই অপরাধীকে শনাক্ত করার জন্য একটি নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি বের করার যে চেষ্টা চলছিল, তাকে পূর্ণতা দেয় আঙুলের ছাপের মাধ্যমে শনাক্তের পদ্ধতি। কিন্তু ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের Leicester বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী অ্যালেক জেফ্রিস (Alec Jeffreys) ফরেনসিক গবেষণায় এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন আনলেন ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং আবিষ্কারের মাধ্যমে। ল্যাবটারিতে কাজ করার সময় তিনি একটি পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের ডিএনএ এর এক্স-রে ফিল্মের মধ্যে মিল খুঁজে পান, যা তার ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং পদ্ধতি আবিষ্কারের মুল ভিত্তি। বর্তমানে এই পদ্ধতি National DNA database এ ব্যাপক ভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে।