প্রতিদিনের কাজকর্ম ভুলে যাওয়া, বাচ্চাদের জন্য খুবই সাধারণ বিষয়। ক্লাসের সময় তারা অমনোযোগী থাকবে এটা একটা নিত্য দিনের ব্যাপার। কিন্তু প্রতিদিনের ক্লাসে বসে দিবাস্বপ্ন দেখা, চিন্তা না করে কাজ করা, খাবারের টেবিলে উদ্বিগ্ন হয়ে যাওয়া এটা চিন্তার বিষয়। অসাবধানতা, ও অমনযোগীতা আপনার শিশুর স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। এ ধরণের সমস্যাকে মনোযোগ ঘাটতি জনিত বিশৃঙ্খল (ADD/ADHD in Children) বলা হয়,আর যে সকল শিশুর এ ধরণের সমস্যা থাকে ধিরে ধিরে এ সকল সমস্যা বেড়ে গিয়ে তাদের কাজ করার সামর্থ নষ্ট করে দিতে পারে।
কি করে বুঝবেন আপানার শিশুর মনোযোগ ঘাটিত জনিত বিশৃঙ্খলা আছে?
মনোযোগ ঘাটতি একপ্রকার হাইপারেক্টিভিটি ব্যাধি (ADHD) যা শৈশবে বাচ্চাদের মধ্যে প্রদর্শিত হয়। ফলে বাচ্চাদের মনোযোগ ঘাটতি এক ধরণের ব্যাধিতে রূপান্তরিত হয়। ফলে তাদের মধ্যেকার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া নষ্ট হয়ে যায়।
যে কারনে এ সমস্যা হয়ে থাকে:
এ রোগের সুনির্দিষ্ট কারণ নিয়ে নানা মত রয়েছে, প্রত্যক্ষ কোনো বিশেষ কারণ জানা না গেলেও বলা হয়, মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল অংশে কিছু রাসায়নিক পদার্থের (নিউরোট্রান্সমিটার) অস্বাভাবিকতার জন্য শিশুর এমন আচরণ হয়ে থাকে। এ ছাড়া রোগটির সঙ্গে বংশগতির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলেও প্রমাণ পাওয়া গেছে। যেসব শিশু দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠে কিংবা শিশুসদনে বা আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বড় হয়, তাদের মধ্যে এ সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা অন্যদের তুলনায় বেশি। সম্প্রতি কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, জিঙ্কের (খনিজ খাদ্য-উপাদান) ঘাটতি ও খাদ্যদ্রব্যে কৃত্রিম রঙের কারণেও এডিএইচডি হতে পারে।
লক্ষ করলে দেখতে পাবেন এডিএইচডি উপসর্গ সাধারণত সাত বছর বয়সের আগে প্রদর্শিত হয়। যাইহোক, এটা মনোযোগ ঘাটতি জনিত বিশৃঙ্খলা এবং স্বাভাবিকতার মধ্যে পার্থক্য করা কঠিন হতে পারে।
করণীয়:
এ রোগে আক্রান্ত শিশুদের দৈনন্দিন কাজের জন্য রুটিন তৈরি করে দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী কাজ করার জন্য উৎসাহিত করতে হবে। বাসার সবার জন্য সাধারণ পালনীয় কিছু নিয়ম তৈরি করতে হবে। যে কোনো নির্দেশনা শিশুকে ভালোভাবে বুঝিয়ে দিতে হবে। শিশুর প্রত্যাশিত আচরণের জন্য তাকে পুরস্কৃত করতে হবে, কিন্তু অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের জন্য কোন প্রকার মারধর বা বকাঝকা করা যাবে না।