সব ধরনের সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে দেশের ছয়টি পোশাক কারখানা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয়েছে। এগুলো হচ্ছে গ্রিন টেক্সটাইল, কুন টং অ্যাপারেলস, লন্ড্রি ইন্ডাস্ট্রিজ, লেনি অ্যাপারেলস, অপটিমাম ফ্যাশনস ও ইউনিভোগ লিমিটেড। উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের জোট অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি এই স্বীকৃতি দিয়েছে।
এদিকে কর্মপরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে ছোট ও মাঝারি পোশাক কারখানার সংস্কারে অর্থায়নের ঘোষণা দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি। অর্থের পরিমাণটি এখনো চূড়ান্ত না হলেও সংস্থাটি ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার দিতে পারে বলে অ্যালায়েন্সের কর্মকর্তারা জানান।
অ্যালায়েন্স প্রতিষ্ঠার দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে মূল বক্তব্য দেন অ্যালায়েন্সের নির্বাহী পরিচালক জেমস এফ মরিয়ার্টি, যিনি এর আগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ছিলেন।
এসময় এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সংস্কার কার্যক্রম কিছুটা ধীর গতিতে এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেন জেমস মরিয়ার্টি। তিনি বলেন, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে এমনটা হচ্ছে। যেমন ফায়ার ডোর আমদানি করতে হয়। চাহিদা অনুযায়ী মানসম্পন্ন পণ্যটির খোঁজ-খবর ও মান যাচাই করে এনে কারখানায় স্থাপন করতে অনেক সময় লেগে যায়। তবে তাঁর প্রত্যাশা, অ্যালায়েন্সের নির্ধারিত সময় ২০১৮ সালের মধ্যেই সব কারখানায় সংস্কারকাজ শেষ হবে।
অ্যালায়েন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেসবাহ রবিন বলেন, ‘আটটি কারখানায় চূড়ান্ত পরিদর্শন হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হয়েছে ৬টি। মানোত্তীর্ণ কারখানাগুলোকে এক-দুই দিনের মধ্যে স্বীকৃতির সনদ দেওয়া হবে।’ তিনি জানান, অ্যালায়েন্সের সদস্য কারখানার সংখ্যা ৭৯০টি। এর মধ্যে ৬৬২টি সক্রিয় আছে। আর প্রথম সংস্কার যাচাই পরিদর্শন (আরভিভি) সম্পন্ন হয়েছে ৫২৮টি কারখানায়। ১৭টি কারখানার দ্বিতীয় আরভিভি হয়েছে। প্রথম আরভিভিতে কারখানাগুলোর গড়ে ৩২ শতাংশ এবং দ্বিতীয় আরভিবির কারখানাগুলোর ৮৭ শতাংশ ত্রুটি সংস্কার শেষ হয়েছে।
অ্যালায়েন্সের পাশাপাশি ইউরোপীয় ক্রেতাদের জোট অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশও কারখানা পরিদর্শন করছে। তাদের সদস্য কারখানার মধ্যে দুটি—কনকর্ড ফ্যাশন এক্সপোর্ট লিমিটেড ও জিকন সব ধরনের ত্রুটি সংস্কার করেছে। সে অনুযায়ী দেশে সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত আটটি কারখানা আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হলো।
২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধসের আড়াই মাস পর ১০ জুলাই কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে উত্তর আমেরিকার ২৬টি ব্র্যান্ড পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে অ্যালায়েন্স গঠন করে।