সূরা আল বাকারায় হাজার হাজার আদেশ, নিষেধ, হেকমত ও সংবাদ

Author Topic: সূরা আল বাকারায় হাজার হাজার আদেশ, নিষেধ, হেকমত ও সংবাদ  (Read 1344 times)

Offline sharifmajumdar

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 108
  • You have to control your emotion to get success
    • View Profile
সূরা অাল বাকারা মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে। এ সূরার আয়াত সংখ্যা হলো ২৮৬টি, কোরআন শরিফের দ্বিতীয় এবং সবচেয়ে বড় সূরা। এই সূরা প্রথম পারা থেকে শুরু করে তিন নম্বর পারার আট পৃষ্ঠায় গিয়ে শেষ হয়েছে। ইসলামের মৌলিক নীতি, বিশ্বাস ও শরিয়তের বিধিবিধানের যতটুকু বিস্তারিত বর্ণনা সূরা বাকারায় করা হয়েছে, ততটুকু আলোচনা অন্য কোনো সূরায় করা হয়নি। এই সূরার মধ্যে আয়াতুল কুরসি নামে যে আয়াতখানা তা কোরআনের অন্য সব আয়াত থেকে উত্তম এবং শেষের যে দুইখানা আয়াত আছে সেটাও মহান আল্লাহর বিশেষ রহমতের ভাণ্ডার থেকে দেয়া হয়েছে। এই আয়াতেরও অনেক ফজিলত আছে। এ সূরায় এক হাজার আদেশ, এক হাজার নিষেধ, এক হাজার হেকমত এবং এক হাজার সংবাদ ও কাহিনী আছে।

সূরা বাকারার ৬৭ থেকে ৭৩নং পর্যন্ত আয়াতে একটি গাভীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, যে গাভীটি জবেহ করার জন্য বনি ইসরাইলকে আদেশ করা হয়েছিল। সে হিসাবেই এ সূরার নাম সূরা বাকারা। আরবিতে বাকারা অর্থ গাভী (গরু)।

সূরা বাকারার ফজিলত
এক. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরখানা বানাবে না। নিশ্চয় শয়তান ওই ঘর থেকে পলায়ন করে যে ঘরে সূরা বাকারা তেলাওয়াত করা হয়। -সহিহ মুসলিম

দুই. হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, যখন জিবরাঈল (আ.) হুজুর (সা.)-এর কাছে বসা ছিলেন, তখন তিনি ওপরের থেকে একটি আওয়াজ শুনতে পেলেন। ফলে তিনি মাথা উঠালেন এবং বললেন, এটা আসমানের একটি দরজা, যা আজকে খোলা হয়েছে। এর আগে কখনও খোলা হয়নি। এরপর সেখান থেকে একজন ফেরেশতা অবতরণ করলেন, অতঃপর বললেন, এই ফেরেশতা আজকের আগে আর কখনও জমিনে অবতরণ করেনি। ফেরেশতা সালাম দিয়ে বললেন, দুটি নূরের সুসংবাদ গ্রহণ করুন, যা আপনার আগে আর কোনো নবীকে দেয়া হয়নি। একটি হলো ফাতেহাতুল কিতাব আর অন্যটি সূরা বাকারার শেষ আয়াত। -সহিহ মুসলিম

তিন. হজরত আবু উমামা বাহেলি (রা.) থেকে বর্ণিত আমি হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, তোমরা কোরআন পড়ো। কেননা তা কেয়ামতের দিন তার পাঠকারীর জন্য সুপারিশকারী হবে (বিশেষ করে) তোমরা এই দুটি নূরানী সূরা বাকারা ও আলে ইমরান পড়ো। কেননা এগুলো কেয়ামতে তার পাঠকারীকে এভাবে ছায়া দেবে এগুলো যেন দুটি মেঘ খণ্ড অথবা শামিয়ানা বা পাখির ঝাঁক। এগুলো তার পাঠকদের পক্ষ থেকে (আজাব) প্রতিরোধ করবে। তোমরা সূরা বাকারা তেলাওয়াত করো, কেননা এটা অর্জন করা খুবই বরকতের বিষয় আর বর্জন করা অত্যন্ত আক্ষেপ ও অনুতাপের ব্যাপার। আর অলস লোকেরা এটা করতে পারে না। -সহিহ মুসলিম

চার. হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত প্রতিটি জিনিসের একটি শীর্ষচূড়া থাকে। আর কোরআনের শীর্ষচূড়া হলো সূরা বাকারা। এতে এমন একটি আয়াত আছে, যা কোরআনের সব আয়াতের সরদার। তা হলো আয়াতুল কুরসি। -জামে তিরমিজি

পাঁচ. হজরত আবুজর (রা.) থেকে বর্ণিত হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা সূরা বাকারাকে এমন দুই আয়াতের মাধ্যমে শেষ করেছেন, যা আমাকে তার আরশের নিচের ভাণ্ডার থেকে দান করা হয়েছে। সুতরাং নিজেরা তা শিখো এবং তোমাদের স্ত্রী-সন্তানদের শেখাও, কেননা এই আয়াতগুলো হলো দোয়া-দুরুদ ও কোরআন। -মুসতাদরাকে হাকেম

ছয়. হজরত নুমান ইবনে বশীর (রা.) থেকে বর্ণিত নবীজি (সা.) বলেন, নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা জমিন ও আসমান সৃষ্টির দুই হাজার বছর আগে একটি কিতাব লিপিবদ্ধ করেছেন। তার থেকে দুটি আয়াত সূরা বাকারার মাধ্যমে শেষ করেছেন। যে ঘরে তিন দিন এটা পড়া হবে না, শয়তান সেই ঘরের নিকটবর্তী হয়ে যাবে। -জামে তিরমিজি
Shariful Islam Majumdar
Lecturer, Department of MCT
Daffodil International University