মানালি হিমাচল প্রদেশের অন্যতম সুন্দর শহর এবং ভারতের বিখ্যাত শৈলশহর গুলির মধ্যে একটি। পর্যটকদের কাছে মানালি সবসময় আকর্ষনীয়। বিপাশা নদীর স্বচ্ছ জলরাশি, দেবদার-পাইনের জঙ্গল এবং পাহাড়ের মিলিত সৌন্দর্য্য অপরিসীম। পূর্নিমার রাতে মানালির শোভা অপরূপ। শীতের সময় সাদা বরফের চাদরে মুড়ে থাকে মানালি। সারা মানালি ছড়িয়ে রয়েছে প্রচুর আপেল, পিচ ও চেরি গাছ।
মানালির বাজার এবং ম্যাল অঞ্চলটি বেশ জমজমাট, সুন্দর সাজানো দোকানপাট, হোটেল, রেস্তরাঁ দিয়ে সাজানো। সবসময় প্রচুর লোকের আনাগোনা। হাঁটা পথেই ঘুরে নিন মানালি ম্যাল।
বাজারের পিছনেই রয়েছে একটি তিব্বতি মনেষ্ট্রি। যার ভিতরে বিশাল বুদ্ধমূর্তি ছাড়াও রয়েছে বৌদ্ধধর্ম ও তিব্বতি সংস্কৃতির নানা নিদর্শন।
মানালি সাইট সিয়িং-এ প্রথমেই দেখে নিন ডুংরি পাহাড়ের কোলে ষোড়শ শতকে মহারাজা বাহাদুর সিংহের তৈরি হিড়িম্বা মন্দির, যা স্হানীদের কাছে ডুংরি মন্দির নামে পরিচিত। দেওদার গাছে ঘেরা অপরুপ পরিবেশে তৈরি ২৭ মিটার উচু কাঠের মন্দির ও এর কারুকার্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। এর পাশেই রয়েছে ভীম ও ঘটেৎকচের মন্দির।
এবার চলুন আপ্পুঘর এবং হিমাচল লোকসংস্কৃতির নানা নিদর্শন সমৃদ্ধ হিমাচল ফোক মিউজিয়ামে, তারপর নেহরু পার্ক হয়ে নদী পেরিয়ে ওল্ড মানলি গ্রাম। যেতে পারেন মানসলু নদীর ধারে মানালি ক্লাব হাউসে। টিকিটের মূল্য ১০ টাকা। এখানে রোলার স্কেটিং সহ নানা ইনডোর গেমসের ব্যবস্হা আছে। কাছেই রয়েছে মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট।
বশিষ্ঠ মুনির আশ্রম রয়েছে এখানে। পাহাড়ের মধ্যে প্রকৃতির মাঝে এই আশ্রমের গর্ভগৃহে রয়েছে কালো কষ্টি পাথরের বশিষ্ঠ মুনির মূর্তি। রয়েছে একটি উষ্ঞপ্রস্রবন। এখানে স্নানের ব্যবস্হা আছে। আর রয়েছে প্রাচীন রাম মন্দির। রাম-সীতা-হনুমানের শ্বেতপাথরের মূর্তি আপনাকে মুগ্ধ করবে।
এবার চলুন রোটাং পাস, মানালির সেরা আকর্ষন। মানালি থেকে গাড়ি নিয়ে পৌছে যান রোটাং পাস, দূরত্ব ৫১ কিমি। জুন-জুলাই থেকে অক্টোবর-নভেম্বর আদর্শ সময় রোটাং পাস যাওয়ার। বাকি সময় বরফের জন্য রাস্তা বন্ধ থাকে। যতই উপরে উঠবেন চোখে পড়বে তুষারশৃঙ্গ। চারিদিকে বরফ আর বরফ। এই বরফ নিয়ে খেলতে খেলতে হারিয়ে যান তুষার রাজ্যে। এখানে অনেক রকম অ্যাডভেঞ্চার স্পোটর্সের ব্যবস্হাও রয়েছে। চাইলে আপনি এর মজা নিতে পারেন। ফেরার পথে দেখে নিন সোলাং ভ্যালি। দেবদারু গাছে ঘেরা এই সবুজ ভ্যালির শোভাও অপরিসীম। এখানে প্যারাগ্লাইডিং-এর ব্যবস্হা আছে।
হাওড়া থেকে কালকা মেলে কালকা, সেখান থেকে বাস বা ভাড়া গাড়িতে পৌছে যান মানালি। সাইট সিয়িং জন্য ছোটো ভাড়া গাড়ির ব্যবস্হা আছে।
কেনাকাটা:- এখানকার বিভিন্ন দোকানে সঠিক মূল্যে শীতবস্ত্র পেয়ে যাবেন। যেমন- শাল, সোয়াটার, টুপি, জ্যাকেট ইত্যাদি। কুলুতে শালের ফ্যাক্টরি রয়েছে, তবে দেখে কিনবেন। আসল উল বলে দেদার বিকোচ্ছে অ্যাক্রিলিক উলের জিনিস। মানালির ফ্রেশ ফলের জ্যাম, জেলি খুবই লোভনীয়।
বরফ দেখতে হলে যাবেন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে মার্চ পর্যন্ত।