সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য কামনার গুরুত্ব

Author Topic: সর্বাবস্থায় আল্লাহর সাহায্য কামনার গুরুত্ব  (Read 1326 times)

Offline rumman

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 1020
  • DIU is the best
    • View Profile
আল্লাহতায়ালা মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন। তাই জীবনের সবক্ষেত্রে মানুষ আল্লাহর মুখাপেক্ষী। এটা কোরআনেরও কথা। তাই মানুষের কর্তব্য হলো, সর্বাবস্থায় মহান আল্লাহতায়ালার কাছে কল্যাণ প্রার্থনা করা এবং যাবতীয় অকল্যাণ থেকে মুক্তি চাওয়া। কেননা তিনি মানুষকে তার কাছে প্রার্থনা করতে বলেছেন এবং তা কবুল করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে হাদিসে কুদসিতে বলা হয়েছে, ‘বান্দা যখন আমার কাছে কিছু প্রার্থনা করে আমি অবশ্যই তাকে তা দেই। আর যখন আমার কাছে আশ্রয় চায়, আমি তাকে আশ্রয় দান করি।’

বিশেষজ্ঞ আলেমদের অভিমত হলো, আল্লাহতায়ালার কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা শ্রেষ্ঠতম ইবাদত। যে যত বেশি আল্লাহর ইবাদতকারী, সে তত বেশি তার আশ্রয় গ্রহণকারী। তাই দেখা গেছে, দুনিয়ায় প্রেরিত নবী-রাসূলরা আল্লাহর কাছে বেশি বেশি আশ্রয় চাইতেন। বিখ্যাত অলি-আউলিয়াদের অভ্যাসও এমন ছিল। এ বিষয়ে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হচ্ছে, হজরত নুহ (আ.) বলেন, ‘হে আমার রব! আমার জানা নেই এমন কোনো বিষয় প্রার্থনা করা থেকে আমি তোমার কাছেই আশ্রয় চাচ্ছি।’ -সূরা হুদ : ৪৭

কোরআনের বিভিন্ন জায়গায়, আলাদা আলাদাভাবে হরজত ইউসুফ (আ.), হজরত মুসা (আ.) ও হজরত মরিয়ম (আ.)-এর ঘটনা বিবৃত হয়েছে। ওই সব ঘটনায় দেখা যায়, তারা প্রত্যেকেই বিভিন্ন সময়ে, নানাবিধ সমস্যা-সঙ্কটে মহান আল্লাহর আশ্রয় লাভে বিনম্র প্রার্থনা করেছেন।

শেষ নবী হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সর্বদা আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। তিনি শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে রক্ষায় আল্লাহর কাছে দোয়া করতেন। এ মর্মে কোরআনে কারিম ও হাদিসে অসংখ্য আয়াত, দোয়া ও বাক্য বর্ণিত রয়েছে। তিনি বলতেন, ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে দারিদ্র্য, কুফুরি, শিরকি, নেফাকি, যশ-খ্যাতি ও লোক দেখানো ইবাদত থেকে পানাহ চাই।’ –সহিহ বোখারি

দরিদ্রতা ও মাত্রাতিরিক্ত সম্পদ- উভয়ই অকল্যাণের বাহন। তাই নবী করিম (সা.) এসবের খারাবি ও অনিষ্টতা থেকেও আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইতেন। দুনিয়া ও জীবন-মরণের ফেতনা এবং দুশ্চিন্তা, পেরেশানি থেকে আল্লাহর কাছে নামাজ শেষে পানাহ চাইতেন। উপকারবিহীন জ্ঞান, ভয়ভীতিহীন অন্তর, অতৃপ্ত হৃদয় এবং প্রত্যাখ্যাত দোয়া থেকে আল্লাহর আশ্রয় কামনা করতেন। তিনি সাহাবিদেরও আল্লাহর কাছে আশ্রয় গ্রহণের জন্য উৎসাহ দিতেন এবং এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন দোয়া শেখাতেন। মানুষ হিসেবে আমাদেরও উচিৎ এমন অভ্যাসের অনুগামী হওয়া।

এ কথা সর্বজনবিদিত যে, শয়তান মানুষের চির শত্রু। মানুষের ক্ষতি ও অনিষ্ট সাধনে সে সদা তৎপর। শয়তান মানুষের ঘুমের আঁধারেও ক্ষতিসাধনে সচেষ্ট থাকে। তাই শয়তানের যাবতীয় অনিষ্টতা থেকে বাঁচতে আল্লাহর আশ্রয় গ্রহণ অতি প্রয়োজন।

এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘বলুন, হে প্রভু! আমি তোমার কাছে শয়তানদের কুমন্ত্রণা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করি।’ -সূরা মোমিনুন: ৯৭

উপরোক্ত আয়াত ছাড়াও আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমের সর্বশেষ দুইটি সূরা অবতীর্ণ করেছেন। যেখানে জিন ও মানব শয়তানের অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া হয়েছে। এভাবেই দয়াময় আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় সৃষ্টি মানুষকে শয়তানের ধোঁকা ও খপ্পর থেকে বাচাঁতে নানা উপায় বলে দিয়েছেন। চিন্তাশীল ও বুদ্ধিমান মানুষের জন্য এসবে রয়েছে শিক্ষা।

Source: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar