মেঘে ঢাকা তারা
পরিচালনা: কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়
অভিনয়: শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, অনন্যা চট্টোপাধ্যায়, আবির চট্টোপাধ্যায়
এ ছবির দর্শক দু’রকমের। সেই জন্যই তাঁদের প্রতিক্রিয়া দু’রকমের পাওয়া যাতে পারে। এক, যাঁরা ঋত্বিক ঘটকের জীবন, কাজ গুলে খেয়েছেন এবং দুই, যাঁরা খাননি। স্বভাবতই, যাঁরা গুলে খেয়েছেন, তাঁদের কমলেশ্বরের ‘মেঘে ঢাকা তারা’ অসামান্য লাগতে পারে এবং বলা বাহুল্য, দ্বিতীয় দলের লাগবে না। আর দুভার্গ্যবশত, এই দ্বিতীয় দলটাই সংখ্যায় হয়তো বেশ ভারী। আসলে পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, ঋত্বিক ঘটক নামক এক বিতর্কিত চরিত্রকে কেন্দ্রে রেখে প্রায় তিন ঘণ্টার এমন একটি আখ্যান রচনা করেছেন, যেখানে তিনি এবং তাঁর কাজটাই মুখ্য। যদিও, কমলেশ্বরের হোমওয়র্ক, ঋত্বিক ঘটককে নিয়ে রিসার্চ প্রশ্নাতীত, কিন্তু মুশকিল হল, এই গবেষণার ঠেলায় ছবিটি বেশ কঠিন এবং নীরসই হয়েছে। ছবির ক্যামেরার কাজ এবং ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোর, চোখ এবং কানের আরাম দেয় ঠিকই, কিন্তু গণনাট্য আন্দোলন, এপার বাংলা-ওপার বাংলা, রিফিউজি সমস্যা, ঋত্বিকের ছবি, তাঁর জীবনদর্শন এতটাই জট পাকিয়েছে যে, একটা সময়ের পরে ঠাহর করা মুশকিল, কোনটি ঋত্বিকের (এখানে নীলকণ্ঠ) জীবন, কোনটি তাঁর ছবি, কোনটিই বা তাঁর স্বপ্ন! তা বলে ছবিতে ভাল কি কিছুই নেই? নিশ্চয়ই আছে। ক্যামেরা বা ব্যাকগ্রাউন্ড স্কোরের কথা তো বলা হলই। তা ছাড়াও আছে, নীলকণ্ঠের ভূমিকায় শাশ্বতর অসামান্য অভিনয় এবং দুর্দান্ত কিছু মুহূর্ত। বিশেষ করে ছবির শেষ দৃশ্যের কথা আলাদা করে বলতেই হয়।
