সন্তানকে বাসায় রেখে অফিস করছেন আপনি। অফিসে কাজের চাপও থাকে অনেক। তার ওপর লম্বা সময় ধরে মিটিং চলছে বিকালে। এতো কাজের মাঝে সারাদিনে মাত্র একবার ফোন করতে পেরেছেন আপনার সন্তানটিকে। আপনার সন্তান আজ আপনাকে একটু তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরতে বলেছে আর আজই অফিসে মিটিং এর কারণে দেরী হলো। মনটা হঠাৎ করেই খুব খারাপ হয়ে যায় আর নিজেকে দোষী ভাব শুরু করলেন আপনি।
অনেক কর্মজীবি মা সন্তানকে প্রচুর সময় দিতে পারেন না বলে অপরাধ বোধে ভোগেন প্রতিদিন। যে সব মা পেশায় গৃহিণী তাঁরা কর্মজীবি মাদের তুলনায় সন্তানকে অনেক বেশি সময় দিতে পারেন। আর তাই কর্মজীবি মায়েরা গৃহিণী মায়েদের সাথে নিজেকে তুলনা করেন এবং মনকষ্টে ভুগে থাকেন। কিন্তু আপনি একজন কর্মজীবি মা হয়ে সমাজে এবং আপনার পরিবারে অনেক অবদান রাখছেন এ কথা ভুলে গেলে চলবে না। আসুন জেনে নেয়া যাক যে ৬টি কারণে একজন কর্মজীবি মা হিসেবে নিজেকে দোষী ভাবা উচিত নয় আপনার।
নারীদের জন্য অনুপ্রেরণা
আপনি কি জানেন কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য নারীরাই সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা? আপনি একজন মা হয়েও নিষ্ঠার সাথে অফিসের উচ্চ পদে কাজ করছেন দেখলে আরো অনেক নারীই চাকরী করতে আগ্রহী হবে। আমাদের দেশে যেহেতু চাকরীর ক্ষেত্রে পারিবারিক অনেক বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। তাই আপনি যদি সাহসিকতার সাথে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারেন তাহলে অন্য নারীদের জন্য আপনি নিজেকে একজন আদর্শ হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন।
চাকরী ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে পারবেন
অনেক নারীই প্রথম দিকে এগিয়ে যান চাকরী ক্ষেত্রে, কিন্তু সন্তান হওয়ার পর হয় চাকরী ছেড়ে দেয় নাহলে পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু আপনার সন্তান জন্মের পর যে পাঁচটি বছর চাকরী ক্ষেত্রে সবাই ক্ষতির সম্মুখীন হয় সেই সময়গুলোকে যদি আপনি কাজে লাগাতে পারেন তাহলে অন্যদের তুলনায় অনেক এগিয়ে যেতে পারবেন। এই সময়টিতেও আপনি কাজে লেগে থাকলে আপনার দক্ষতা, চাকরীর পদ এবং বেতন সবকিছুই অনেক বেড়ে যাবে এবং আপনি একজন সফল নারী হয়ে উঠতে পারবেন। তাই সংসার, সন্তান ও কাজকে পাশাপাশি এগিয়ে নিতে মোটেও অপরাধ বোধে ভুগবেন না।
আপনার সন্তানরা ভালো আছে
নিজেকেই অনেক কিছু করতে হয়
আপনি যখন একজন মা তখন আপনার দ্বায়িত্ব অনেক বেড়ে যায়। অফিসের কাজ সামলে দিন শেষে বাচ্চার জন্য কেনাকাটা কিংবা বাচ্চার প্রিয় খাবার রান্না করার কথাও আপনারই মাথায় রাখতে হয়। এছাড়াও ডাক্তারের কাছে যাওয়া কিংবা অন্যান্য জরুরী কাজ গুলোও তো আপনাকেই করতে হয়। অর্থাৎ আপনি একাই অনেক গুলো দিক সামলে নিতে পারেন এসময়ে। তাই অবশ্যই নিজেকে অযোগ্য মনে করবেন না।
নিজের টাকায় কেনাকাটা করতে পারেন
আপনি চাকরী করছেন মানে আপনি একজন স্বাবলম্বী মানুষ। মার্কেটে আপনার কোনো পোশাক পছন্দ হলে স্বামীর টাকা খরচ করার চাইলে আপনি নিজের টাকায় কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবেন। স্বামীর টাকা দিয়ে কিছু কিনতে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই আপনার মধ্যে কিছুটা অস্বস্তি কাজ করবে। তাছাড়া সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো কেনার জন্যও আপনার অন্য কারো উপর নির্ভর করতে হবে না। নিজের উপার্জিত অর্থ থেকেই কিনে ফেলতে পারবেন প্রয়োজনীয় সব কিছু। আর এক্ষেত্রে কাউকে খরচের হিসাবও দিতে হবে না আপনার। ব্যাপারটা কি চমৎকার নয়?
আত্মবিশ্বাসী দেখাবে
আপনি চাকরী করলে আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে এবং আপনাকে দেখতে অনেক বেশি স্মার্ট লাগবে। চাকরিজীবী মায়েরা গৃহিণী মায়েদের তুলনায় কথা বার্তা, কাজ কর্মে অনেক বেশি চটপটে থাকে এবং বেশ আত্মবিশ্বাসের ছাপ থাকে তাদের চেহারায়। ফলে অন্যদের তুলনায় তাদের কে অনেক বেশি ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন লাগে এবং স্মার্ট দেখায়।
- See more at:
http://www.priyo.com/2013/10/19/36292.html#sthash.QT4Xy7n3.dpuf