অনেক কারণে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ধমনিতে ব্লক সৃষ্টি হলে বা আমাদের জীবনযাত্রা প্রণালির বিশেষ কোনো ত্রুটির জন্য হার্টের সমস্যা দেখা দিতে পারে। আবার বংশানুক্রমের কারণেও হতে পারে। এর বাইরেও আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ঘটনা বা ত্রুটিপূর্ণ অভ্যাস হার্ট অ্যাটাক ডেকে আনতে পারে। যেমন, অনেকেরই সিগারেটের নেশা আছে। সিগারেটের জন্য ক্যানসার যেমন হতে পারে, তেমনি এটা হার্ট অ্যাটাকেরও একটি কারণ হতে পারে। এ ধরনের আরও কিছু কারণ সম্পর্কে সচেতন হলে হার্টের সমস্যা বেশ কিছুটা কমানো যেতে পারে।
১. হঠাৎ রেগে ওঠার অভ্যাস হার্টের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। বেশি রাগের লক্ষণ হলো সামান্য কারণে উঁচু গলায় প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করা, রাগে শরীর কাঁপা, দুই হাতে আঙুল চেপে ধরা, দাঁত কিড়মিড় করা ইত্যাদি। এগুলো স্নায়ুর ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ঘন ঘন রাগ হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ায়। অস্ট্রেলিয়ায় ৩১৩ জন রোগীর হার্ট অ্যাটাকের বিষয়ে অনুসন্ধান করে চিকিৎসকেরা দেখেছেন, প্রচণ্ড রাগের ঘণ্টা দু-একের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা সাড়ে আট গুণ বাড়তে পারে।
২. কম্পিউটারে দিনে একটানা চার ঘণ্টারও বেশি কাজ করলে বা এ রকম দীর্ঘ সময় টিভি দেখলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা ১২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। অনেক বেশি সময় বসে থাকলে শরীরে লাইপো প্রোটিন লাইপেজের ঘাটতি দেখা দেয়। এই এনজাইম শরীরের চর্বি ক্ষয় করে এবং ধমনির ভেতরের বাধা (ক্লগড আর্টারি) অপসারণ করে। যদি দিনের বেশির ভাগ সময় বসে থাকতে হয়, তাহলে ২০ মিনিট পর পর সামান্য হাঁটা দরকার। বসে থাকার তুলনায় শুধু দাঁড়িয়ে থাকলেও ৩০ শতাংশ বেশি ক্যালরি পোড়ে।
৩. রাতে সাত থেকে নয় ঘণ্টা ঘুমানো সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি। কিন্তু ঘুম যদি নিয়মিত এর চেয়ে কম হয়, তাহলে তা হার্টের জন্য অশুভ হতে পারে। স্ক্যান্ডিনেভিয়ান জার্নাল অব ওয়ার্ক এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড হেলথের এক গবেষণায় জানা গেছে, জাপানি ছেলেদের মধ্যে যারা ছয় ঘণ্টারও কম ঘুমায়, তাদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা, যারা সাত-আট ঘণ্টা ঘুমায় তাদের তুলনায় প্রায় পাঁচ গুণ বেশি।
৪. ধোঁয়া ও ধুলায় আচ্ছন্ন পরিবেশে সব সময় থাকলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বাড়ে। সুস্থ হার্টের জন্য পরিষ্কার বাতাস খুব প্রয়োজন।
৫. খুব বেশি বা খুব কম তাপমাত্রায় থাকলে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বেশি। আবহাওয়ার তাপমাত্রা হার্টের ওপর প্রভাব ফেলে।
সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট, অনলাইন