টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য "তাঁত শিল্প"

Author Topic: টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য "তাঁত শিল্প"  (Read 1087 times)

Offline khyrul

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 138
  • Test
    • View Profile
বাংলাদেশের তাঁত শিল্পের ইতিহাস অতি প্রাচীন।এই শিল্পের সাথে জড়িত আছে এদেশের সংস্কৃতি। আর তাঁত শিল্প আমাদের অন্যতম ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক। দেশের সর্ববৃহৎ কুটির শিল্প বা লোকশিল্পও এটি। টাঙ্গাইল জেলার তাঁত শিল্প সেই সর্ব বৃহৎ শিল্পের অন্যতম অংশীদার।

প্রাচীন কাল থেকে টাঙ্গাইলের দক্ষ কারিগররা তাদের বংশ পরম্পরায় তৈরি করছেন নানা জাতের কাপড়। আর কাপড় তৈরিতে লাগে সূতো। সূতো তৈরি হয় তুলো থেকে। টাঙ্গাইল জেলার প্রাচীন অঞ্চল মির্জাপুর উপজেলা বিখ্যাত গবেষক জেম্স টেলর মির্জাপুরের তুলোর কথা লিখেছেন। এখানে বাপ্তা হাম্মাম ও অন্যান্য পাঁচমিশালী বস্ত্রের সূতো কাটা হতো তুলো থেকে। তা ছাড়া বিখ্যাত পর্যটক ইবনে বতুতা ও হিউয়েন সাং- এর ভ্রমণ কাহিনীতে টাঙ্গাইলের বস্ত্র শিল্প অর্থাৎ তাঁত শিল্পের উল্লেখ রয়েছে। সে দিক থেকেও বলা যায় টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্পের ঐতিহ্য অতি প্রাচীন, এটি আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও সংস্কৃতি। বর্তমানে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির জন্যই টাঙ্গাইলের সুনাম বা পরিচিতি দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিশ্বব্যাপী।

তাঁত শিল্পের বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে টাঙ্গাইলের সফট সিল্ক ও কটন শাড়ি। এই শাড়ি বুনন ও ডিজাইন দৃষ্টি কাড়ে। টাঙ্গাইলের শাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো- পাড় বা কিনারের কারু কাজ। রেশমী সূতী মিশ্রনের সূতো শাড়ি ও লুঙ্গি প্রস্ত্তত হয়ে থাকে। এ ছাড়াও টাঙ্গাইলের তাঁতিরা তাঁতের শাড়ির, লুঙ্গি, গামছা ও চাদর তৈরি করে থাকে।

টাঙ্গাইলের তাঁতিরা একদা মসলিন শাড়ি বুনতেন বলে শোনা যায়। এক সময় দিল্লির মোগল দরবার থেকে বৃটেনের রাজ প্রাসাদ পর্যন্ত এই মসলিনের অবাধ গতি ছিল। বিদেশী বণিক চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে মসলিন কাপড় কালের প্রবাহে হারিয়ে গেছে। কিন্তু তার সার্থক উতরাধিকারী হয়ে আজও টিকে রয়েছে টাঙ্গাইলের জামদানী, বেনারসী ও তাঁতের শাড়ি।

 মুসলমান তাঁতীদেরকে বলা হতো জোলা। এই জোলা তাঁতীদের সংখ্যাধিক্য ছিল টাঙ্গাইল, কালিহাতী ও গোপালপুর এলাকায়। আবার যুগী বা যুঙ্গীদের নাথপন্থী এবং কৌলিক উপাধি হিসেবে দেবনাথ বলা হয়। ক্ষৌম বস্ত্র বো মোটা কাপড় বোনার কাজে এদের একচেটিয়া অধিকার ছিল। সূতো কাটার চরকা এদের প্রত্যেক পরিবারেই ছিল এবং পুত্র কন্যাসহ পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই সূতো কাটা ও কাপড় বুনতে সারাদিন ব্যস্ত থাকতো। টাঙ্গাইল কালিহাতী ও গোপালপুর এলাকায় যুগী সম্প্রদায়ের বসতি ছিল। যুগীরা ক্ষৌম, গামছা, মশারী তৈরি করে প্রায় স্বাধীন ভাবেই ব্যবসা চালাত। আরো জানা যায় টাঙ্গাইলের হিন্দু তাঁতীদের মৌলিক উপাধি বসাক। বাজিতপুর ও নলসুন্দা গ্রামেই এদের সংখ্যাধিক্য। কিন্তু বল্লা ও রতনগঞ্জে মুসলিম কারিগর (জোলা) সংখ্যায় হাজার খানেক এবং অনেকেই বেশ ধন সম্পদশালী।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বসাক সম্প্রদায়ের তাঁতিরাই হচ্ছে টাঙ্গাইলের আদি তাঁতি অর্থাৎ আদিকাল থেকেই এরা তন্তুবায়ী গোত্রের লোক। এদেরকে এক শ্রেণীর যাযাবর বলা চলে- শুরুতে এরা সিন্ধু অববাহিকা থেকে পশ্চিম বঙ্গের মুর্শিদাবাদে এসে তাঁতের কাজ শুরু করেন। কিন্তু সেখানকার আবহাওয়া শাড়ির মান ভালো হচ্ছে না দেখে তারা নতুন জায়গার সন্ধানে বের হয়ে পড়েন, চলে আসেন বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে। সেখানেও আবহাওয়া অনেকাংশে প্রতিকূল দেখে বসাকরা দু’দলে ভাগ হয়ে একদল চলে আসে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর, অন্যদল ঢাকার ধামরাইয়ে। তবে এদের কিছু অংশ সিল্কের কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে রাজশাহীতেই থেকে যায়। ধামরাইয়ে কাজ শুরু করতে না করতেই বসাকরা নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সংঘাতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফলে ভাগ হয়ে অনেক বসাক চলে যান প্রতিবেশী দেশের চোহাট্টা অঞ্চলে। এর পর থেকে বসাক তাঁতিরা চৌহাট্টা ও ধামরাইয়া’ এ দু’গ্রুপে স্থায়ীভাবে বিভক্ত হয়ে পড়েন। ধামরাই ও চৌহাট্টায় তন্তুর কাজ ভালোই হচ্ছিল। তবে আরো ভালো জায়গায় খোঁজ করতে করতে অনেক বসাক টাঙ্গাইলে এসে বসতি স্থাপন করেন। এখানকার আবহাওয়া তাদের জন্য অনকূল হওয়াতে পুরোদমে তাঁত বোনার কাজে লেগে পড়েন। টাঙ্গাইলে বংশানুক্রমে যুগের পর যুগ তারা তাঁত বুনে আসছেন। এক কালে টাঙ্গাইলে বেশির ভাগ এলাকা জুড়ে বসাক শ্রেণীর বসবাস ছিলো, তারা বসাক সমিতির মাধ্যমে অনভিজ্ঞ তাঁতিদেরকে প্রশিক্ষণ দান ও কাপড়ের মান নিয়ন্ত্রন করতেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে দেশভাগ ও ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর অনেক বসাক তাঁতি ভারত চলে যান। এ সময় বসাক ছাড়াও অন্যান্য সম্প্রদায়ের লোকেরাও তাঁত শিল্পের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে পড়েন। তারা বসাক তাঁতিদের মতোই দক্ষ হয়ে উঠেন।

টাঙ্গাইল জেলার ১১টি উপজেলা আর ১টি থানার মধ্যে টাঙ্গাইল সদর, কালিহাতী, নাগরপুর, সখীপুর উপজেলা হচ্ছে তাঁতবহুল এলাকা। তাছাড়া ভূঞাপুর উপজেলায়ও তাঁত শিল্প রয়েছে।

টাঙ্গাইল সদর উপজেলার তাঁতবহুল গ্রামগুলো হচ্ছে- বাজিতপুর, সুরুজ, বার্থা, বামনকুশিয়া, ঘারিন্দা, গোসাইজোয়াইর, তারটিয়া, চন্ডি, নলুয়া, দেওজান, এনায়েতপুর, বেলতা, গড়াসিন, সন্তোষ, নলসুন্দা, কাগমারী প্রভৃতি।

কালিহাতী উপজেলার বল্লা, রামপুর, বাংরা, সহদেবপুর, ভূক্তা, আকুয়া, ছাতিহাটি, আইসরা, রতনগঞ্জ কোবডোরা প্রভৃতি।

দেলদুয়ার উপজেলা পাথরাইল, নলসোধা, চন্ডি, বিষ্ণুপুর প্রভৃতি। এছাড়া গোপালপুর ও ভূঞাপুর উপজেলার কিছু কিছু গ্রামে তাঁত শিল্প আছে। এ সকল গ্রামে দিন রাত শোনা যায় মাকুর মনোমুদ্ধকর খটখট শব্দ। মাকুর খটখটির পাশাপাশি তাঁতিদের ব্যতিব্যস্ত নিরস্তর হাতে নিপুর শাড়ি বোনার দৃশ্য ও সত্যিই মনোমুগ্ধকর। টাঙ্গাইলের তাঁতের সঙ্গে প্রায় পাঁচ লাখ লোকের জীবন জীবিকা জড়িত। আর টাঙ্গাইলে তাঁত রয়েছে লক্ষাধিক। এই লক্ষাধিক তাঁতের সবগুলোতেই আবার টাঙ্গাইলের শাড়ি তৈরী হয় না। টাঙ্গাইলের ঐতিহ্যবাহী শাড়ি তৈরি হয় এ রকম তাঁতের সংখ্যা টাঙ্গাইলে ২০ হাজারেরও কম। আর এই ঐতিহ্যবাহী শাড়ি তৈরি হয় প্রধানত বাজিতপুর, পাথরাইল, নলসুন্দা, চন্ডি, বিষ্ণপুর ও বিন্নাফৈর গ্রামে।

টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি তৈরি করতে হাতের কাজ করা হয় খুব দরদ দিয়ে,গভীর মনোসংযোগের সাথে অত্যন্ত সুক্ষ্ণ ও সুদৃশ্য ভাবে। পুরুষেরা তাঁত বোনে; আর চরকাকাটা, রঙকরা, জরির কাজে সহযোগিতা করে বাড়ির মহিলারা। তাঁতিরা মনের রঙ মিশিয়ে শাড়ির জমিনে শিল্প সম্মতভাবে নানা ডিজাইন করে বা নকশা আঁকে, ফুল তোলে।

টাঙ্গাইলের শাড়ির বৈশিষ্ট্য হলো- পাড় বা কিনারের কারুকাজ। টাঙ্গাইলের শাড়ি বোনার তাঁত দু’ধরনেরঃ (১) চিত্তরঞ্জন (মিহি) তাঁত, (২) পিটলুম (খটখটি) তাঁত। এ দু’ধরনের তাঁতেই তৈরি করা হয় নানা রং ও ডিজাইনের নানা নামের শাড়ি। যেমন- জামদানী বা সফ্ট সিল্ক, হাফ সিল্ক, টাঙ্গাইল বি.টি, বালুচরি, জরিপাড়, হাজারবুটি, সূতিপাড়, কটকি, স্বর্ণচুড়, ইককাত, আনারকলি, দেবদাস, কুমকুম, সানন্দা, নীলাম্বরী, ময়ুরকন্ঠী এবং সাধারণ মানের শাড়ি।

শাড়ির বিভিন্ন নাম ও মান, হাতের কাজ, শাড়ির জমিনের রঙভেদে দাম ও ভিন্ন রকম-সর্বনিম্ন দু’শত টাকা থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে। এর মধ্যে জামদানি বা সফ্ট সিল্কের দাম সবচেয়ে বেশি। জামদানি শাড়ি তৈরি করা হয় আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন ভাবে। এ শাড়ি তৈরি করার জন্য তাঁতিরা ১০০ কাউন্টের জাপানি সুতা ব্যবহার করে থাকেন। এ ছাড়া অন্যান্য শাড়ি তৈরি করতেও ১০০ কাউন্টের সূতা ব্যবহার করা হয়। মাঝে মাঝে নারায়নগঞ্জের সংযোগ শিল্পে প্রস্ত্ততকৃত ৮০, ৮২ ও ৮৪ কাউন্টের সূতাও ব্যবহার করে থাকে।

দেশ ভাগের পূর্বে টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির বাজার বসতো কলকাতায়। টাঙ্গাইলের বিভিন্ন অঞ্চলের তাঁতিরা চারাবাড়ি ঘাট, পোড়াবাড়ি ঘাট, নলছিয়া ঘাট ও সুবর্ণখালী বন্দর থেকে স্টিমার লঞ্চ ও জাহাজে চড়ে কলকাতায় যেতেন। কলকাতা তথা পুরোপশ্চিম বঙ্গের শাড়ি ব্যবসায়ীরা কিনে নিত এসব সুন্দর সুন্দর ডিজাইনের তাঁতের শাড়ি।

দেশ ভাগের পর হতে টাঙ্গাইল তাঁতের প্রধান হাট হচ্ছে টাঙ্গাইলের বাজিতপুর। বাজিতপুর হাট টাঙ্গাইল মূল শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। সপ্তাহের প্রতি সোম ও শুক্রবার হাট বসে। ভোর রাত হতে এখানে হাট শুরু হয়, সকাল ৯-১০টা পর্যন্ত চলে হাটের ব্যতিব্যস্ততা এবং বেচাকেনা। এ হাটের বেশির ভাগ ক্রেতারাই মহাজন শ্রেণীর। মহাজনরা এই হাট থেকে পাইকারি দরে কাপড় কিনে নিয়ে সারা দেশের বিভিন্ন বড় বড় মার্কেটে, শপিং মলে, ফ্যাশন হাউস গুলোতে সাপ্লাই দেন। মহাজনদের পাশাপাশি বিভিন্ন জেলার উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, ধনাঢ্য ব্যবসায়ী ও আমলাদের স্ত্রী-কন্যারাও এ হাট থেকে তাদের পছন্দের শাড়ী কিনে নিয়ে যান। তবে ঢাকা ও বিভিন্ন বিভাগীয় শহর ভিত্তিক ফ্যাশন হাউস গুলোই টাঙ্গাইল শাড়ির বড় ক্রেতা ও সরবরাহকারী।

পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ, যেমন- ইউরোপ, আমেরিকার বিভিন্ন দেশ, জাপান, সৌদিআরব, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যসহ পশ্চিম বাংলায় টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ির ব্যাপক কদর থাকলেও এ শাড়ি আন্তর্জাতিক বাজারে মার খাচ্ছে নানা কারণে- (১) দামের জন্য (কাঁচামালের সরবরাহের সহজলভ্যতা না থাকা, কাঁচামালসহ তাঁত মেশিনের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে টাঙ্গাইল শাড়ি উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে যায়)। (২) ভারতীয় শাড়ির আগ্রাসন (সেখানে কাঁচামালের সহজলভ্যতা ও সূতার স্বল্প মূল্যের জন্য টাঙ্গাইল তাঁতের শাড়ির চেয়ে ভারতের শাড়ি দামে সস্তা হয়ে থাকে বিধায় অনেক ক্রেতাই সে দিকে ঝুকে পড়েছে)। (৩) টাঙ্গাইল শাড়ি বিপণন ব্যবস্থাটি মহাজনি চক্রের হাতে বন্দি, ফলে বিপণন ব্যবস্থা সুষ্ঠু ভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। এ ছাড়া দেশ ভাগ,
পাকিস্তান-ভারত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা, ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দের মুক্তিযুদ্ধের পর টাঙ্গাইল ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়া বসাক তাঁতিরা সেখানে টাঙ্গাইল শাড়ির কারিকুলামে যে শাড়ি তৈরি করছে তা টাঙ্গাইল শাড়ির নাম ভাঙিয়ে বিশ্ববাজার দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তবে এতো প্রতিকূলতার পরেও টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি তার হারানো বাজার পুনরুদ্ধারে সক্ষম হচ্ছে। কারণ টাঙ্গাইল শাড়ি মানেই ভিন্ন সূতায়, আলাদা তাঁতে তৈরি আলাদা বৈশিষ্ট্যের শাড়ি। এর নকশা, বুনন, ও রংয়ের ক্ষেত্রে রয়েছে ব্যাপক বৈচিত্রতা। অন্যান্য শাড়ি ১০ হাত থেকে সর্বোচ্চ ১১ হাত মাপে তৈরি হয়ে থাকে, আর টাঙ্গাইলের তাঁতের শাড়ি তৈরি হয় ১২ হাত মাপে। এ শাড়ি নরম মোলায়েম এবং পরতে আরাম, টেকেই অনেক দিন। এছাড়া সময় ও চাহিদার সাথে তাল রেখে দিন দিন পাল্টে যাচ্ছে টাঙ্গাইল শাড়ির আকর্ষণ ও নক্শার ব্যঞ্জনা।

টাঙ্গাইলের বাজিতপুর, নলসুন্দা, সন্তোষ ও কাগমারী গ্রামে প্রস্ত্তত হয় ধূতি, শাড়ি, লুঙ্গি। কালিহাতীর বল্লা রতন গঞ্জ ও কোবডোহরা গ্রামে লুঙ্গি, গামছা ও ধূতি। কোকডোহরা, ধুতি মিহি ও মোলায়েম। গায়ের বিছানার চাদর, আলোয়ান তৈরি হয় রতন গঞ্জ। বৈন্নাফৈর গ্রামে উৎকৃষ্ট তাঁতের কাপড় প্রস্ত্তত হয়। টাঙ্গাইলের রেশমী সূতী ও মিশ্রনের সূতোর শাড়ি ,লুঙ্গি প্রস্ত্তত হয়ে থাকে। তবে গামছা ও মশারী তৈরিতে যুগী বা দেবনাথ সম্প্রদায় আজো একচেটিয়া অধিকার বজায় রাখতে পেরেছে।

টাঙ্গাইল শাড়ির নতুনত্ত্বের অন্যতম সফল তাঁতিদের মধ্যে বাজিতপুরের আনন্দ মোহন বসাক, সীতানাথ বসাক, চন্ডি গ্রামের নীল কমল বসাক, মনে মন্টু; নলসুন্দা গ্রামের হরেন্দ্র বসাক, পাথরাইল গ্রামের রঘুনাথ বসাক, আনন্দ, গোবিন্দ, সুকুমার বসাক, খুশি মোহন বসাক এর নাম উল্লেখযোগ্য। তারা জানান টাঙ্গাইলের শাড়ি বুনোনের মূল কাজ একেবারেই আলাদা। অনেক পুরোনো একটা ঐতিহ্যের ধারায় চলে একাজ। সেই জ্ঞান ও নিষ্ঠা ছাড়া আসল টাঙ্গাইলের শাড়ি তৈরি করা যায় না। আসল টাঙ্গাইলের শাড়ি তৈরির জন্য এর তাঁতী বা কারিগরদের শিল্পী হয়ে উঠতে হয়। আমাদের টাঙ্গাইলে সেই শিল্পী তাঁতি আছে। তাই টাঙ্গাইলের তাঁত শিল্প ও তাঁতের শাড়ির এতো সুখ্যাতি।

Offline Mohammad Nazrul Islam

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 184
  • Test
    • View Profile