Entertainment & Discussions > Story, Article & Poetry
History of Muslim'S
Md. Zakaria Khan:
প্রতিবেশীর সাথে সদাচরণ করা :
জান্নাতে প্রবেশ করার অন্যতম মাধ্যম
প্রতিবেশীর সাথে উত্তম ব্যবহার করার জন্য রাসূল (ছাঃ) বিশেষভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, জিবরীল (আঃ) এসেই আমাকে প্রতিবেশী সম্পর্কে উপদেশ দেন। মনে হচ্ছিল তিনি যেন প্রতিবেশীকে আমার উত্তরাধিকারী বানিয়ে দিবেন। মানুষ অধিকহারে নফল ছালাত-ছিয়াম আদায় ও দান-ছাদাক্বা করেও যদি প্রতিবেশীর সাথে দুর্ব্যবহার করে তাহ’লে সে জান্নাতে যেতে পারবে না। আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত তিনি বলেন, একদা জনৈক ব্যক্তি বলল,
يَا رَسُوْلَ اللهِ إِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ كَثْرَةِ صَلاَتِهَا وَصِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا غَيْرَ أَنَّهَا تُؤْذِيْ جِيْرَانَهَا بِلِسَانِهَا قَالَ هِيَ فِي النَّارِ، قَالَ يَا رَسُوْلَ اللهِ فَإِنَّ فُلاَنَةَ تُذْكَرُ مِنْ قِلَّةِ صِيَامِهَا وَصَدَقَتِهَا وَصَلَاتِهَا وَإِنَّهَا تَصَدَّقُ بِالْأَثْوَارِ مِنْ الْأَقِطِ وَلَا تُؤْذِيْ بِلِسَانِهَا جِيْرَانَهَا قَالَ هِيَ فِي الْجَنَّةِ-
‘হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা অধিক ছালাত পড়ে, ছিয়াম রাখে এবং দান-ছাদাক্বাহ করার ব্যাপারে প্রসিদ্ধি লাভ করেছে। তবে সে নিজের মুখের দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয়। তিনি বললেন, সে জাহান্নামী। লোকটি আবার বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! অমুক মহিলা যার সম্পর্কে জনশ্রুতি আছে যে, সে কম ছিয়াম পালন করে, দান-ছাদাক্বাও কম করে এবং ছালাতও কম আদায় করে। তার দানের পরিমাণ হ’ল পনীরের টুকরা বিশেষ। কিন্তু সে নিজের মুখ দ্বারা স্বীয় প্রতিবেশীদেরকে কষ্ট দেয় না। তিনি বললেন, সে জান্নাতী’।[1]
প্রতিবেশীকে কষ্ট দানকারী ব্যক্তি মুমিন নয় বলে রাসূল (ছাঃ) ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, واللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ، وَاللهِ لاَ يُؤْمِنُ قِيلَ : مَنْ يَا رَسُول الله؟ قَالَ الَّذِي لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। আল্লাহর কসম! সে ঈমানদার নয়। জিজ্ঞেস করা হ’ল হে আল্লাহর রাসূল (ছাঃ)! সে কে? তিনি বললেন, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[2] এ ধরনের লোক জান্নাতে প্রবেশ করবে না। তিনি বলেন, لاَ يَدْخُلُ الجَنَّةَ مَنْ لاَ يَأمَنُ جَارُهُ بَوَائِقَهُ- ‘সে ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যার প্রতিবেশী তার অনিষ্ট হ’তে নিরাপদ নয়’।[3]
[1]. আহমাদ, বায়হাক্বী, মিশকাত হা/৪৯৯২; ছহীহ আত-তারগীব ওয়াত তারহীব হা/২৫৬০।
[2]. বুখারী হা/৬০১৬; মিশকাত হা/৪৯৬২।
[3]. মুসলিম হা/৪৬; মিশকাত হা/৪৯৬৩।
Md. Zakaria Khan:
কিয়ামতের দিন রাসুল
(সঃ) কে যে তিনটি স্থানে পাওয়া যাবে:-
হযরত আনাস রা.বলেন, আমি নবী সাল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে কিয়ামতের দিন আমার জন্য সুপারিশের আবেদন জানালাম । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
(হ্যাঁ)আমি তোমার জন্য সুপারিশ করব। আমি বললাম,হে আল্লাহর রাসূল! আমি (সেদিন) আপনাকে কোথায় খুঁজব। নবীজী বললেন,প্রথমে (পুল)সিরাতেরকাছে খুঁজবে। বললাম,সেখানে যদি আপনার
সাথে আমার সাক্ষাৎ না হয় তাহলে কোথায়খুঁজব? তিনি বললেন,তাহলে আমাকে মীযানের কাছে খুঁজবে। আমি বললাম, সেখানেওযদি আপনাকে না পাই?নবীজী বললেন,তাহলে হাউজের
(হাউজে কাউসার)কাছে খুঁজবে। কারণ আমি সেদিন এই তিন স্থানের কোনো না কোনো স্থানে থাকবই।
{জামে তিরমিযী,
হাদীস : ২৪৩৩;
মুসনাদে আহমাদ,
হাদীস : ১২৮২৫
Md. Zakaria Khan:
মহাবীর আলেকজান্ডার মৃত্যু শয্যায় তাঁর সেনাপতিদের ডেকে বলেছিলেন-
“আমার মৃত্যুর পর আমার তিনটা ইচ্ছা তোমরা পূরণ করবে। এতে যেন কোনো ব্যঘাত না ঘটে।”
• আমার প্রথম অভিপ্রায়- "শুধু আমার চিকিৎসকেরা আমার কফিন বহন করবেন"।
•আমার দ্বিতীয় অভিপ্রায়- "আমার কফিন যে পথ দিয়ে গোরস্থানে নিয়ে যাওয়া হবে,সেই পথে আমার কোষাগারে সংরক্ষিত সোনা,রুপা
ও অন্যান্য মূল্যবান পাথর ছড়িয়ে দিবে"।
• আমার শেষ অভিপ্রায় - "কফিন বহনের সময় আমার দুই হাত কফিনের বাইরে ঝুলিয়ে রাখেবে"।
মৃত্যু শয্যায় উপস্থিত লোকজন তাঁর এই অদ্ভুত অভিপ্রায়ে বিস্মিত হন। কিন্তু এ ব্যাপারে তাঁকে কিছু জিজ্ঞেস
করার সাহস পাচ্ছিলেন না কেউ। তখন তাঁর একজন প্রিয় সেনাপতি তাঁর হাতটা তুলে ধরে চুম্বন করে বলেন-
‘হে মহামান্য, অবশ্যই আপনার সব অভিপ্রায় পূর্ণ করা হবে; কিন্তু আপনি কেন এই বিচিত্র
অভিপ্রায় ব্যক্ত করলেন?’ একটা দীর্ঘ শ্বাস গ্রহণ করে আলেকজান্ডার বললেন - আমি দুনিয়ার সামনে
তিনটি শিক্ষা রেখে যেতে চাই।
• 'আমার চিকিৎসকদের কফিন বহন করতে বলেছি এ কারণে যে,যাতে লোকে অনুধাবন করতে পারে চিকিৎসকেরা
আসলে কোনো মানুষকে সারিয়ে তুলতে পারেন না। তাঁরা ক্ষমতাহীন আর মৃত্যুর থাবা থেকে কাউকে রক্ষা করতে অক্ষম।’
• ‘গোরস্থানের পথে সোনা-দানা ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে এটা বোঝাতে যে ওই সোনা-দানার একটা কণাও আমার
সঙ্গে যাবে না।আমি এগুলো পাওয়ার জন্য সারাটা জীবন ব্যয় করেছি, কিন্তু নিজে সঙ্গে কিছুই নিয়ে যেতে পারছি না।
মানুষ বুঝুক ধন-সম্পদের পেছনে ছোটা সময়ের অপচয় মাত্র।’
• ‘কফিনের বাইরে হাত ছড়িয়ে রাখতে বলেছি মানুষকে এটা জানাতে যে- খালি হাতে আমি এই পৃথিবীতে এসেছিলাম;
আবার খালি হাতেই পৃথিবী থেকে চলে যাচ্ছি।’
আল্লাহ, আমাদের সহি বুঝ দান করুণ আমিন।
Md. Zakaria Khan:
মুহাম্মদ আগে মাছি প্রসঙ্গে (সা.) ১৪০০ বছর
প্রায় ১৪০০ বছর আগে নাজিল হওয়া আল কোরআনের বিশ্লেষণ করে মানুষ মঙ্গল গ্রহ পর্যন্ত পৌঁছেছে। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ১৪০০ বছর আগে মাছি প্রসঙ্গে যে কথাটি বলেছিলেন, তা আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানও মেনে নিয়েছে।
বুখারী ও ইবনে মাজাহ হাদীসে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তোমাদের কারো পাত্রে মাছি পতিত হয় সে যেন উক্ত মাছিটিকে ডুবিয়ে দেয়। কেননা তার একটি ডানায় রোগজীবাণু রয়েছে, আর অপরটিতে রয়েছে রোগনাশক ঔষধ’(বুখারী)।
জ্ঞানবিজ্ঞানের যখন অগ্রগতি হলো, যখন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস জীবাণু সম্পর্কে জ্ঞানের অগ্রগতির মাধ্যমে বর্ণিত হচ্ছে, মাছি মানুষের শত্রু, সে রোগজীবাণু বহন করে এবং স্থানান্তরিত করে। মাছির ডানায় রোগজীবাণু রয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই।’ তাই যদি হয় তাহলে কিভাবে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোগজীবাণু বহনকারী মাছিকে ডুবিয়ে নেয়ার আদেশ করলেন?
এ বিষয়ে কিং আব্দুল আজীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উস্তাদ ডক্টর ওয়াজিহ বায়েশরী এই হাদীসের আলোকে মাছি নিয়ে কয়েকটি পরীক্ষা চালান। জীবাণুমুক্ত কিছু পাত্রের মধ্যে কয়েকটি মাছি ধরে নিয়ে জীবাণুমুক্ত টেস্ট টিউবের মধ্যে আবদ্ধ করে রাখেন। তারপর নলটি একটি পানির গ্লাসে উপুড় করেন। মাছিগুলো পানিতে পতিত হওয়ার পর উক্ত পানি থেকে কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখতে পান, সেই পানিতে অসংখ জীবাণু রয়েছে।
তারপর জীবাণুমুক্ত একটি সূঁচ দিয়ে মাছিকে ওই পানিতেই ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে পরীক্ষা করে দেখেন, সেই পানিতে আগের মত আর জীবাণু নেই, বরং কম। তারপর আবার ডুবিয়ে দেন। তারপর কয়েক ফোঁটা পানি নিয়ে আবার পরীক্ষা করেন। এমনিভাবে কয়েকবার পরীক্ষা করে দেখেন যে, যত বার মাছিকে ডুবিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন ততই জীবাণু কমেছে অর্থাৎ ডক্টর ওয়াজীহ এটা প্রমাণ করে দেখিয়েছেন, মাছির একটি ডানায় রোগ জীবাণু রয়েছে এবং অপরটিতে রোগনাশক ঔষধ রয়েছে।
সম্প্রতি সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত অষ্টম চিকিৎসা সম্মেলনে কানাডা থেকে দু’টি গবেষণা-রিপোর্ট পাঠিয়েছিল যাতে বর্ণিত ছিল, মাছিতে এমন কোন বস্তু রয়েছে যা জীবানুকে ধ্বংস করে দেয়। শাইখ মোস্তফা এবং শাইখ খালীল মোল্লা এই বিষয়ে জার্মান ও ব্রিটেন থেকে রিসার্চগুলো ধারাবাহিক সংগ্রহের মাধ্যমে একটি বই বের করেছেন যার মূল বিষয় ছিল:
‘নিশ্চয়ই মাছির একটি ডানায় রয়েছে রোগ, আর অপরটিতে রয়েছে রোগ নাশক ঔষধ’ (বুখারী)।
মাছি যখন কোন খাদ্যে বসে তখন যে ডানায় জীবাণু থাকে সে ডানাটি খাদ্যে ডুবিয়ে দেয়। অথচ তার অপর ডানায় থাকে প্রতিরোধক ভাইরাস। যদি মাছিকে ডুবিয়ে দেয়া হয়, তাহলে প্রতিরোধক ভাইরাস খাদ্যের সঙ্গে মিশে মারাত্মক জীবাণুগুলিকে ধ্বংস করে দেয় এবং সেই খাদ্য স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য অনুকূল থাকে। নতুবা এই খাদ্যই জীবাণুযুক্ত হয়ে মানব ধ্বংসের কারণ হতে পারে।
সেই চৌদ্দশ বছর পূর্বে এই ক্ষুদ্র জীবাণু দেখার শক্তি মানুষের ছিল না। অথচ রাসূল (স:) সেগুলোর দিকে ইঙ্গিত করেছেন এবং সে সম্পর্কে কথা বলেছেন এবং ঐ বিপদজনক দিক বর্ণনা করেছেন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক।
Md. Zakaria Khan:
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবি (রহ): দুনিয়াতে খুব সামন্য সম্পদই রেখে গেছেন...
মাত্র ১৯ বছর। এ ১৯ বছর ধরে তিনি তার সুসংগঠিত সৈন্যবাহিনী নিয়ে ইউরোপিয়ানদের দখলকৃত মসজিদে আকসা উদ্ধার করার জন্য অবিরাম লড়াই করেছেন। তার পরিচালিত সর্বমোট যুদ্ধাভিযান সংখ্যা- ৭৪ টি।
ফিরিঙ্গিরা যে মসজিদে আকসা দখল করে রেখেছিল প্রায় ৯১ বছর ধরে- তিনি তার জীবনবাজি রেখে সেই হারানো প্রথম কেবলা আমাদের জন্য উদ্ধার করে দিয়েছিলেন।
এ উদ্ধার অভিযানে শুধু ফিরিঙ্গিরা নয়, তাকে লড়তে হয়েছে অনেক মুনাফিক মুসলিম শাসকের বিরুদ্ধেও। তিনি হাল ছাড়েননি। মসজিদে আকসার বিজয় তার সৌভাগ্যমন্ডিত ললাটে চুমো দিয়েছে।
এ মহান বিজেতার নাম সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়ুবী। শুধু তার নামটুকুই আমরা জানি। আমরা অনেকেই হয়তো জানি না- মৃত্যুকালে তার রেখে যাওয়া সম্পত্তির পরিমাণ। অজস্র যুদ্ধে ইউরোপিয়ানদের বিপক্ষে বিজয়ী এ সেনাপতির সম্পদের পরিমাণ কতো হতে পারে- অনুমান করা যায়?
অবাক হওয়ার মতো তথ্য হল- তার রেখে যাওয়া সম্পদের পরিমাণ ছিল মাত্র ৪৭ দিরহাম এবং একটি দিনার। তার নিজের কোনো ঘর ছিল না, কোনো জমিও ছিল না। তার দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল বন্ধুদের ধার করা দিরহাম-দিনার দিয়ে। ভাবা যায়!
চারদিকে এমন গবেষণা ও এগিয়ে যাওয়ার এ যুগেও আমাদের এ বীরপুরুষ সম্পর্কে আমরা কিছুই জানি না। আমরা বনে-জঙ্গলে পালিয়ে বেড়ানো চে-গু’র ছবি বুকে নিয়ে গর্ব করি, নেপোলিয়ন, মুসোলিনি সম্পর্কে জানতে আগ্রহী, হিটলারের বাঙ্কার আর তার প্রেমিকার নাম-ধাম নিয়ে উৎসাহ বোধ করি- এদের আড়ালে নিজেদের বীর মহাপুরুষদেরকে ভুলে আছি!
শেকড়ের সাথে সংযোগ বিচ্ছিন্ন বলেই আজ আমরা এমন আগাছা-পরগাছা হয়ে বেঁচে আছি। বোঝা যায়!
হে আল্লাহ! আমাদের (কর্ম ও ত্যাগের মাধ্যমে) সালাফদের যুগে ফিরিয়ে নাও । (আমীন)
Navigation
[0] Message Index
[#] Next page
Go to full version