গতকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হয়ে গেল, ড্যাফোডিল ইন্টরন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত এক আন্তজার্তিক মানের সেমিনার। উক্ত সেমিনারে অংশ গ্রহণ করেন ‘আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের স¦নামধণ্য প্রকৌশলীগণ। আলোচ্য বিষয়- Urban Development Directorate for planned Urbanization of Bangladesh (Director, Urban Development Directorate (UDD), Ministry of Housing &Public Works, GoB)
আলোচনার শুরুতেই ‘আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ এর পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার ফজলে মুহাম্মদ বিন ফরিদ ‘একজন প্রকৌশলীর দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ক’ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তিনি তার উপস্থাপনা কার্যধারার বর্ণনায় আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ এর বিভিন্ন প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন। স্থাপত্য নির্মানে একজন প্রকৌশলীর কি করনীয়, তার সমুচিত ব্যাখ্যা প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ এর সিনিয়র প্ল্যানার উদিত শংকর দাস তার এক লম্বা বিষয়-ভিত্তিক বক্তব্যে স্থাপত্য শিল্প নির্মানের বিষয়বস্তু ব্যাখ্যা করেন। এদিক থেকে, আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেডের দেশ ব্যাপী বিভিন্ন প্রকল্প, ও তা বাস্তবায়নের দিক গুলো তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের বিশেষ বক্তব্য রাখেন, ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, দেশের অন্যমত আর্কিটেক্ট প্রফেসর খায়রুল আনাম। তিনি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে স্থাপত্য শিল্প বিনির্মানের যৌক্তিকতা তুলে ধরেন এবং বর্তমান সরকারের কাছে ‘আবাসিক শিল্পে একজন প্রকৌশলীর স্বাধীন চিন্তা বিকাশের পরিবেশ দাবি করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থপতি জনাব মুবাশ্বের হোসাইন। তিনি একজন স্থপতির করণীয়, বাংলাদেশে স্থাপত্য শিল্প বিনির্মানে যৌক্তিক সমস্যা, রাজনৈতিক নেতাদের দূবৃর্ত্তপনা এবং স্থাপত্য শিল্পীদের অর্থলোলুপ দৃষ্টি ভঙ্গিসহ স্থাপত্য নির্মানের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার বিশ্লেষন করেন। এই শিল্পে আগত ভবিষ্যৎ প্রকৌশলীদের দায়িত্ব নিয়ে, সঠিক চিন্তা বিকাশে স্থাপত্য নির্মানে এগিয়ে আসার আহব্বান জানান।
তিনি অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণকারী ‘আরবান ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রশংসা করেন বলেন, দেশের স্থাপত্য নির্মান, প্রকল্প প্রনয়নে ৯৫ ভাগ কাজ ‘রুরাল ডেভলপমেন্ট’ করলেও তাদের চিন্তা-চেতনায় অস্বচ্ছতা রয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি রুরাল ডেভলপমেন্ট কোঃ কে রাজনৈতিক কারাবেড়ী পেরিয়ে উন্মুক্ত সূর্য্যের আলোয় এসে আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার আহব্বান জানান। তিনি ঘনবসতিপূর্ন ঢাকাকে পরিবেশ-সম্মত করতে প্রশাসনের বিকেন্দ্রীকরণের কথা উল্লেখ্য করেন। তিনি, প্রকৌশল বিষয়ের অধ্যয়ণরত ছাত্র-ছাত্রীদেরকে টাকার মেশিনে পরিনত না হয়ে, মানুষ ও মনুষ্যত্বের ধারক হয়ে সর্বজীব বৈচিত্রের এক নির্মান প্রকৌশলী হবার আহব্বান জানান।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল বিভাগের ডিন জনাব প্রফেসর ড. শামছুল আলম। তিনি বলেন, নাগরিক জীবনে সমস্যা আছে এবং থাকবে। সভ্যতা বিকাশে নাগরের প্রয়োজন অনস্বীকার্য। বিশ্ব-নগরায়নের এই যুগে দেশের সকল নাগরিককে এক যুগে কাজ করতে হবে। তিনি আরো বলেন, একজন স্থাপত্য শিল্পীকে পরিবেশ পরিস্থিতি বিশ্লেষন, সঠিক দর্শন নিয়ে, নিজ প্রজ্ঞা ও মেধার দ্বারা সু-নাগরিকের মনোভাব নিয়ে স্থাপত্য নির্মানের কাজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল বিশ্বাবদ্যালয়ের সির্ভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের নান্দিক উপস্থাপনায় ও বক্তাদের তথ্য সম্বলিত যৌক্তিক উপস্থাপনায়, উপস্থিত কয়েকশত ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার সৃষ্টি হয়। পরিশেষে বক্তাগণ ভবিষ্যতে ‘বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তুলার’ দৃপ্ত অঙ্গিকার ব্যক্ত করে সেমিনারে ইতিবৃত্ত টানেন।