পটুয়াখালী: শিশুদের সু-শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে কুয়াকাটায় বিনা খরচে লেখাপড়া করানোর দায়িত্ব হাতে নিয়েছেন কুয়াকাটার মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহারের দায়িত্বরতরা।
সীমা বৌদ্ধ বিহারের সীমানার ভেতরেই লোকাসুখ বৌদ্ধ বিহার দরিদ্র ছাত্র উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামে টিনশেড একটি স্কুলে ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।
এর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কুয়াকাটার মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহারের উত্তম ভিক্ষু। পাশাপাশি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন চানাফ্রু নামে একজন রাখাইন শিক্ষক।
দায়িত্বরতরা জানান, এ স্কুলটিতে বর্তমানে ৩৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যারা দিনের বেলায় এ স্কুলে প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠগ্রহণ করে।
উত্তম ভিক্ষু জানান, কোনো সাহায্য সহযোগিতা ছাড়াই স্কুলটি চলছে। কেউ যদি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতো তবে এটি আরো ভালোভাবে চালানো সম্ভব হতো।
এদিকে, মিশ্রিপাড়ার সীমা বৌদ্ধ বিহারের তাৎপর্য তুলে ধরে তিনি বলেন, শত বছরের পুরোনো এখানকার বৌদ্ধমূর্তিটি ৩২ ফুট লম্বা এবং গৌতম বুদ্ধের আসন আবক্ষের মূর্তি এটি।
এ মূর্তিটি উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় বুদ্ধমূর্তি বলেও নানান সময়ে রচিত হয়েছে। সু-বিশাল এ বিহার এলাকায় ওই স্কুল ও মূর্তির সংরক্ষিত ঘরটি ছাড়াও রয়েছে একটি পানির কূপ। রয়েছে সংরক্ষিত বটবৃক্ষ। এ বটবৃক্ষের নীচে ধ্যানে বসে গৌতম বুদ্ধের জ্ঞান লাভ হওয়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বলেন তিনি।
এছাড়াও গোলঘর, আর দ্বিতল টিনশেডের ঘর ছাড়া পুরো এলাকায় শুধুই সবুজের সমারোহ।
সম্প্রতি নিরাপত্তা জনিত কারণে মূল গেটটি বন্ধ রেখে একটি ছোট পকেট গেট খুলে রাখা হয়েছে। সেদিক দিয়েই দর্শনার্থী ও ধর্মীয় অনুসারীরা বিহারের ভেতরে যাতায়াত করে। এসময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কার্যক্রমও চোখে পড়ে।
সামগ্রিক বিষয়ে বিহারাধ্যক্ষ উত্তম ভিক্ষু বলেন, সীমা বৌদ্ধ বিহার পরিদর্শনে প্রতিদিন বহু লোক আসেন। তাদের নিজস্ব সিকিউরিটির একজন লোক রয়েছেন, তার পাশাপাশি ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা রয়েছেন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে দেশে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনায় আতঙ্কিত রয়েছেন তিনিসহ বিহারের সদস্য ও স্থানীয় ২৮টি রাখাইন পরিবার। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পর্যটকরা এসে অনায়াসে ভেতরে চলে আসেন। এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে পুলিশ থাকলেও তাদের কাছে কোনো অস্ত্র নেই। কিন্তু বছর দেড়েক আগেও অস্ত্রধারী ৪ জন পুলিশ এ বিহারে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতেন।
অপরদিকে, কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতের কাছে বেড়িবাঁধের পাশেই রয়েছে কুয়াকাটা শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার। সেখানেও প্রাচীন একটি কূপ ও বেশকিছু মূর্তি রয়েছে।