এম এ আজিজ স্টেডিয়াম হলে অনায়াসেই বলা যেত, খেলাটা হচ্ছে তামিম ইকবালের দুয়ারে! একেবারে দুয়ারে না হলেও জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম তো চট্টগ্রামেই। চাটগাঁয়ের দর্শকদের পূর্ণ সমর্থন বাংলাদেশ দলের প্রতি থাকেই। তবে সব সময়ই তাদের আলাদা একটা ভালোবাসা বরাদ্দ থাকে ঘরের ছেলে তামিমের দিকেও। বাঁহাতি ওপেনার ব্যাটিংয়ে নামলেই গ্যালারি ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয় ‘তামিম-তামিম’!
অবশ্য দর্শকের এই ভালোবাসার প্রতিদান দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে তামিম সব সময়ই দেওয়ার চেষ্টা করেন। যদিও একটা সময় চট্টগ্রামের মাটিতে তাঁর ব্যাটিংয়ে দ্যুতি ছড়ায়নি ধারাবাহিকভাবে। চট্টগ্রাম তামিমকে হতাশ করেছে। বরং বলা ভালো, তামিমই চট্টগ্রামকে হতাশ করেছেন। সেঞ্চুরি দূরের কথা, চট্টগ্রামে নিজের প্রথম ১১ আন্তর্জাতিক ইনিংসে তামিমের ফিফটিই ছিল মোটে একটি। ২০১৪ সালের ২০ মার্চ, নিজের জন্মদিনে চট্টগ্রামে তামিম আউট হয়েছিলেন শূন্য রানে। এটাই ছিল চট্টগ্রামের সঙ্গে তাঁর অতীত সম্পর্কের প্রতীকী গল্প!
২০০৮ সালে প্রথম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে খেলার পর ৩২ ইনিংসে তামিম সেঞ্চুরির স্বপ্নটা পূরণ করতে পারেননি। একবার অবশ্য ৯৫ করেও আউট হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু জন্মদিনে শূন্য পাওয়ার সেই হতাশাময় দিনটার পর থেকেই বদলে যেতে থাকল তাঁর সঙ্গে চট্টগ্রামের এই আপনকে পর বানিয়ে রাখার সম্পর্ক।
সেই শূন্যের পর টেস্ট-ওয়ানডে মিলে চট্টগ্রামে তামিমের সর্বশেষ ছয় ইনিংস ছিল এমন : ১০৯, ৬৫, ৫, ৭৬, ৬১* ও ৫৭। এরপর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গত ম্যাচে করলেন ৪৫। আগে ৩২ ইনিংসে এ মাঠে ২৬.৯৬ গড়ে করেছিলেন ৮৩৬ রান। পরের ৭ ইনিংসেই সেটি ৬৯.৬৬ গড়ে ৪১৮। একটি সেঞ্চুরি, চারটি ফিফটি। তামিমের সঙ্গে চট্টগ্রামের রসায়ন যে ক্রমেই বাড়ছে, পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে।
চট্টগ্রাম এমনিতে বাংলাদেশের ‘সৌভাগ্যে’র মাঠ। আর তামিমের জন্য সেটা তো উঠোন। যদিও তিনি বহুবার বলেছেন, খেলোয়াড়দের জন্য সব মাঠই সমান। কিন্তু ঘরের মাঠ যে তাঁকে বেশ অনুপ্রাণিত করে, একটা উদাহরণ দিলেই বুঝবেন। গত বছর অক্টোবরে চট্টগ্রামে জাতীয় লিগে বরিশালের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে তামিমের টুইট ছিল, ‘আমার দল চট্টগ্রামের হয়ে কিছু রান করতে পেরে ভালো লাগছে। ঘরের মাঠে খেলাটা সব সময়ই বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেয়।’
কালও নিশ্চয়ই আত্মবিশ্বাসী হয়ে নামবেন তামিম।