রিয়াল মাদ্রিদের জার্সিতে প্রতিটি ম্যাচকেই এখন থেকে হয়তো ‘অভিষেক’ ভেবেই খেলতে নামবেন মার্কো অ্যাসেনসিও!
উয়েফা সুপার কাপে সেভিয়ার বিপক্ষে রিয়ালের জার্সিতে তাঁর প্রথম মাঠে নামা। বক্সের বাইরে থেকে দুর্দান্ত গোল করে সেদিন নিজেকে চিনিয়েছিলেন ২০ বছর বয়সী স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। রিয়াল সোসিয়েদাদের বিপক্ষে লিগ অভিষেকটাও রাঙিয়ে রাখলেন গোল করে। পরশু হলো চ্যাম্পিয়নস লিগ অভিষেক। অ্যাসেনসিও এখানেও গোলহীন থাকলেন না!
অ্যাসেনসিওর স্মরণীয় রাতটা রিয়ালেরও গেল দুর্দান্ত। জিনেদিন জিদানের দল ঘরের মাঠে লেগিয়া ওয়ারশকে হারিয়েছে ৫-১ গোলে। গ্রুপের অন্য ম্যাচে স্পোর্টিং ক্লাব ডি পর্তুগালের মাঠ থেকে ২-১ গোলে জিতে ফিরেছে ডর্টমুন্ড। এর বাইরে পরশু চ্যাম্পিয়নস লিগে ছিল ১-০ স্কোরের ‘হ্যাটট্রিক’—লিওঁর মাঠে জিতেছে জুভেন্টাস, সেভিয়া জিতেছে ডায়নামো জাগরেবের মাঠে, আর লেস্টার সিটি ঘরের মাঠে হারিয়েছে কোপেনহেগেনকে।
এদিক থেকে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুর দর্শকেরা ভাগ্যবান, একপেশে ম্যাচ হলেও ছয়টি গোল দেখা গেল। ১৬ মিনিটে গ্যারেথ বেলের গোলে সূচনা, চার মিনিট পর দ্বিতীয়টি। যদিও মার্সেলোর শটটি লেগিয়ার টমাশ ইয়োদোভিয়েৎসের পায়ে লেগে ঢোকে জালে। পরের মিনিটেই পেনাল্টি থেকে একটি গোল শোধ করেন লেগিয়ার মিরোস্লাভ রাদোভিচ। গোল তো নয়, যেন সাপের লেজে পা দেওয়া। যার ফল—৩৭ মিনিটে অ্যাসেনসিওর গোলের পর দ্বিতীয়ার্ধে আরও দুবার লেগিয়াকে লুকাস ভাসকেজ ও আলভারো মোরাতার ‘ছোবল’।
একটু অপরিচিত ঠেকছে না গল্পটা? রিয়াল পাঁচটি গোল করেছে, অথচ স্কোরলাইনে ‘ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো’ নামটি নেই! মৌসুমজুড়েই এবার একই অবস্থা—পর্তুগিজ যুবরাজ রিয়ালের হয়ে এখন পর্যন্ত গোল করেছেন মাত্র চারটি! ২০০৯ সালে মাদ্রিদে পা রাখার পর এবারই পথটা যেন সবচেয়ে কঠিন মনে হচ্ছে রোনালদোর জন্য।
গোল না পেলেও সতীর্থদের দিয়ে গোল ঠিকই করিয়ে যাচ্ছেন ৩১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড। পরশুও অ্যাসেনসিও ও মোরাতার গোল দুটি বানিয়ে দিয়েছেন। রোনালদোর ফর্ম নিয়ে তাই মোটেও চিন্তিত নন জিদান, ‘সবাই চায় রোনালদো প্রতি ম্যাচে তিন-চার-পাঁচটি গোল করুক। আজও সুযোগ পেয়েছিল ও। তবে শনিবারই তো (লিগে) গোল পেয়েছে, আগামী সপ্তাহেও পাবে। আজ গোল না পেলেও দুটি বানিয়ে দিয়েছে, এটিও ভালো।’
এই জয়ের পরও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে গ্রুপে দ্বিতীয় রিয়াল। সবার ওপরে থাকা ডর্টমুন্ড পরশু স্পোর্টিংয়ের মাঠে পিয়ের-এমেরিক অবামেয়াং ও জুলিয়ান ভাইগেলের সৌজন্যে প্রথমার্ধেই দুবার এগিয়ে যায়। ৬৭ মিনিটে বক্সের ভেতরে ইনডিরেক্ট ফ্রি-কিক থেকে গোল করে ব্রুনো সিজার স্পোর্টিংকে ম্যাচে ফেরালেও ড্র আর পাওয়া হয়নি।
পরশু অন্য ম্যাচে লিওঁতে দেখা গেল ৩৮ বছরের ‘বুড়ো’ হাড়ের ভেলকি। বুড়োটা জিয়ানলুইজি বুফন! ৫৪ মিনিটে ১০ জনের দল হয়ে পড়া জুভেন্টাস জিতেছে কুয়াদ্রাদোর ৭৬ মিনিটের গোলে। কিন্তু আসল নায়ক তো বুফন। ৩৫ মিনিটে ল্যাকাজেতের পেনাল্টি ঠেকিয়েছেন, বিরতির পর দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতায় ফিরিয়েছেন নাবিল ফেকির ও তোলিসোর দুটি শটও। জুভে কোচ মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি ম্যাচ শেষে তাই আরেকবার বললেন জানা কথাটিই—‘ও স্রেফ অন্য সবার চেয়ে আলাদা।’ এএফপি, গোলডটকম।
এক নজরে
সিএসকেএ ১: ১ মোনাকো
লেভারকুসেন ০: ০ টটেনহাম
স্পোর্টিং ১: ২ ডর্টমুন্ড
রিয়াল মাদ্রিদ ৫: ১ লেগিয়া
লেস্টার ১: ০ কোপেনহেগেন
ব্রুগা ১: ২ পোর্তো
জাগরেব ০: ১ সেভিয়া
লিঁও ০: ১ জুভেন্টাস