খাবারের সাথে এক্সট্রা লবন গ্রহণ স্বাস্থ্যের ওপর যথেষ্ট ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণের ফলে আমাদের রক্তচাপ বৃদ্ধি পায় এবং মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক), হার্ট অ্যাটাক, কিডনি ও হার্ট ফেইলিউরের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ করলে উচ্চ রক্তচাপ ছাড়াও অস্টিওপোরোসিস, পাকস্থলির ক্যান্সার, শারীরিক স্থূলতা হতে পারে এবং অ্যাজমা থাকলে এর উপসর্গগুলো বৃদ্ধি পায়।
----লবণের ক্ষতিকারক দিক---
- লবণ এক ধরনের স্ট্রেস ফুড। সিমপ্যাথেটিক নার্ভ সিস্টেমকে উদ্দীপিত করে।
- লবণ শরীরে পানি ধরে রাখে। বেশি লবণ খেলে হাই ব্লাড প্রেশারের আশঙ্কা থাকে।
- হাড় থেকে ক্যালসিয়াম শুষে নিয়ে লবণ হাড়ের ক্ষতি করে।
- শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের হবার কাজে লবণ ব্যাঘাত ঘটায়। এর জন্য ইউরিক অ্যাসিড, বাত দেখা দেয়। অতিরিক্ত লবণ খেলে কিডনির ওপর চাপ পড়ে, কিডনি দুর্বল হয়ে যায়।
-----লবণ খাওয়া কমাতে চাইলে----
- রান্নার সময় যতটা প্রয়োজন ততটা লবণ ব্যবহার করুন। খাবার টেবিলে বারবার লবণদানী থেকে কাঁচা লবণ নিয়ে খাওয়ার অভ্যাস কমান।
- রান্নার ধরনে পরিবর্তন আনুন। মাঝে মাঝে লো সল্ট রেসিপিতে রাঁধুন। নানা রকম ভেষজ ও মশলা দিয়ে খাবার বানাতে পারেন। লো সোডিয়াম জাতীয় সবজি যেমন গাজর, ব্রকোলি, ভুট্টা, শসা ইত্যাদি খান। লো সোডিয়াম জাতীয় সবজিতে ফ্যাটের পরিমাণও কম। আচার, টমেটো স্যুপ, ভেজিটেবল স্যুপ জাতীয় হাই সোডিয়াম খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি।
- ফ্রোজেন ফুড, রেডিমেড স্যুপের প্যাকেটের মতো প্যাকেটজাত খাবাবে সোডিয়ামের পরিমাণ বেশি থাকে। প্যাকেটজাত খাবার কেনার সময় ভালো করে লেবেল পড়ে নিন। লো সোডিয়াম স্যুপ খান। বাড়িতে তৈরি খাবার খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়।
----লবণের ভালো দিক-----
হার্ট, লিভার থেকে শুরু করে কিডনি, অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ডের মতো শরীরের বিশেষ অংশগুলোর কাজকর্ম কিছুটা হলেও লবণের ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত আমাদের ধারণা লবণ খেলেই ব্লাড প্রেশার বেড়ে যায়। লবণের ভালো এবং মন্দ - দুটো দিকই রয়েছে। সব মিলিয়ে লবণ খাবারের গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ।
- নার্ভ সেলের কার্যকলাপের জন্য লবণ খুবই দরকারি।
- লো ব্লাড প্রেশারের জন্য লবণ উপকারী।
- সর্দি কমানোর জন্য, সাইনাসের কনজেশন ভাব দূর করার জন্যও লবণ বেশ কাজ করে।
- পেশীর ব্যথা প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও লবণ সমান জরুরি।
- শুকনো কাশির সময় মুখে সামান্য লবণ রাখলে ঘন ঘন কাশির হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
- ব্লাড ভেসেল ও সেলগুলোকে লবণ কিছুটা সংকুচিত করে রাখে বলে শরীর গরম থাকে। এ কারণেই শীতকালে লবণ খাওয়া হয় বেশি।
------সামুদ্রিক লবণ-----
উপকারিতা
সামুদ্রিক লবণ সিলিকন, ক্যালসিয়াম, কপার, নিকেল সমৃদ্ধ। সামুদ্রিক লবণে উপস্থিত এসব মিনারেল ও অন্যান্য উপাদান ব্লাডসেল রক্ষা করতে সাহায্য করে। সাধারণ লবণের মধ্যে এত রকমের মিনারেল উপস্থিত থাকে না।
অপকারিতা
সামুদ্রিক লবণে আয়োডিন অনুপস্থিত। তাই সাধারণ লবণের চেয়ে এই লবণ খুব একটা উপকারী নয়। সামুদ্রিক লবণ খেলে খাদ্যতালিকায় আয়োডিনসমৃদ্ধ অন্যান্য খাবারও রাখুন।