‘আমি চাই মেয়েরা প্রতিবাদ করুক’ - শারমিন আক্তার

Author Topic: ‘আমি চাই মেয়েরা প্রতিবাদ করুক’ - শারমিন আক্তার  (Read 1282 times)

Offline Kazi Sobuj

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 53
  • Test
    • View Profile


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ (আইডব্লিউসি) ২০১৭’ পুরস্কার পাওয়া বাংলাদেশের ঝালকাঠির মেয়ে শারমিন আক্তার। সে নিজেই নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছে। পুরস্কার পাওয়ার পর শারমিনের সাহস আরেকটু বেড়েছে। সবার কাছ থেকে দোয়া, ভালোবাসা পাচ্ছে। পুরস্কার নিয়ে ফেরার পর একজন দোয়া করে বলেছেন, ‘তুমি প্রধানমন্ত্রী হবা।’ বলেই শারমিনের হাসি। তারপর বলল, ‘আমার চিন্তাভাবনা ছিল আইনজীবী হব, পুরস্কার পাওয়ার পর মনে হচ্ছে আরও বড় কিছু হইতে হবে।’
গতকাল রাজধানীর ইএমকে সেন্টারে মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত অনুষ্ঠানে শারমিন তার স্বপ্নের কথা জানায়। একই সঙ্গে দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করে, ‘মেয়েরা নিজেরা নিজেদের অসহায় ভাবে। ভাবে ছেলেরা বেশি শক্তিশালী। কিন্তু তা না। মেয়েরা বিপদে পড়লে পুলিশের কাছে গেলে পুলিশ সাহায্য করবে। পুলিশ না করলে শিক্ষক, সহপাঠী বা কেউ না কেউ করবেই।’ পুরস্কার পাওয়া প্রসঙ্গে শারমিন বলে, ‘আমি নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকাইলাম। প্রথম আলো আমারে নিয়ে নিউজ করল। চ্যানেল আইয়ের স্বর্ণ কিশোরী ফাউন্ডেশন আমারে পুরস্কার দিল। আমেরিকান সেন্টার আমারে খুঁইজা পেল। তারপর আমেরিকা গিয়ে পুরস্কার নিলাম।’
মার্কিন দূতাবাস আয়োজিত মিট দ্য প্রেসে শারমিন বলে, ‘বিভিন্ন দেশ থেকে পুরস্কার পাওয়া নারীরা আমার কথা জানতে চান। আমি আমেরিকার হোয়াইট হাউস ও সংসদে গেছি। নিউইয়র্কের একটি স্কুলে যাই। ওই স্কুলের শিক্ষার্থীরা জানতে চায়, আমি তাদের সাহায্য করব কি না। আমি বলি, সাহায্য করব।’
‘এ পুরস্কার শুধু আমার জন্য না, আমার দেশের সব মেয়ের জন্য। আমি চাই, ওরা আমার মতো কিছু করুক, প্রতিবাদ করুক।’ বারবার শারমিন এ কথা উচ্চারণ করে।
বাংলাদেশ সময় গত ২৯ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প এসএসসির ফলের অপেক্ষায় থাকা শারমিনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। শুধু তাই নয়, তিনি শারমিনকে জড়িয়েও ধরেছিলেন বলে জানায় শারমিন। কিছু একটা মনে পড়েছে সেই ভঙ্গিতে নিজেই বলে, ‘আমেরিকা থেকে একটা জিনিস শিইখা আসছি। আমেরিকায় বাল্যবিবাহ দিলে তার জন্য কোনো আইন নাই। বাংলাদেশে কিন্তু আইন আছে। তাই এই আইন কাজে লাগাইতে হবে।’ এ কথা বলেই শারমিন যোগ করে, বাবা-মা মেয়েদের লেখাপড়া করাক। তাঁরা মেয়েদের যাতে বোঝা মনে না করেন। যে বাবা-মা মেয়ের বাল্যবিবাহ দেবেন, তাঁদের শাস্তি দিতে হবে। আর মেয়েদেরও প্রতিবাদ করতে হবে। তাদেরও বলতে হবে, ‘আমি লেখাপড়া করব, বিয়ে করব না।’
২০১৫ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় শারমিনের মা তাকে জোর করে বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। সে বান্ধবীর সহযোগিতায় স্থানীয় এক সাংবাদিকের কাছে ঘটনার কথা জানায়। তারপর সাংবাদিকের সাহায্যে থানায় গিয়ে মা এবং যাঁর সঙ্গে তার বিয়ে ঠিক হয়েছিল, তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করে।
মিট দ্য প্রেসে মার্কিন দূতাবাসের প্রধান প্রেস কর্মকর্তা মেরিনা ইয়াসমিন ও প্রেস অ্যাসিস্ট্যান্ট নুসরাত হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
Md. Tarekol Islam Sobuj
Daffodil International University