প্রাক মুক্তিযুদ্ধের কিছু সংক্ষিপ্ত ইতিহাস

Author Topic: প্রাক মুক্তিযুদ্ধের কিছু সংক্ষিপ্ত ইতিহাস  (Read 1818 times)

Offline Sadat

  • Newbie
  • *
  • Posts: 41
  • Test
    • View Profile
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে এটি সুস্পষ্টরূপে প্রতীয়মান হয় যে, বাঙালির ভাগ্য পরিক্রমা চিরদিন ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকে ঘুরেছে। ভাগ্য বিপর্যয় বারবার দাসত্বের আকারে তাদের ললাটলিখন হয়ে আবির্ভূত হয়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর ময়দানে লর্ড ক্লাইভের নেতৃত্বাধীন ইংরেজ বাহিনীর সঙ্গে মরণপণ যুদ্ধে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা শোচনীয়ভাবে পরাজিত হন। যদিও এ পরাজয়ের অন্যতম কারণ ছিল সিরাজউদ্দৌলার সেনাপতি মীর জাফর আলি খাঁ ও তার অনুচরদের বিশ্বাসঘাতকতা। এ যুদ্ধে পরাজয়ের মধ্য দিয়েই বাংলার স্বাধীনতার সূর্য প্রায় দু শ’ বছরের জন্য অস্তমিত হয়ে যায়। এর পরের ইতিহাস ইংরেজ শাসকদের অত্যাচার, অনাচার, নির্যাতন আর বঞ্চনার নির্মম ইতিহাস। কিন্তু বাঙালি জনগণ কখনোই ওই ঔপনিবেশিক শাসন ও শোষণকে মেনে নেয়নি। এর বড় আকারে প্রকাশ ঘটে ১৮৫৭ সালে। এ সময় জনতার অসন্তোষ সিপাহী বিদ্রোহের আকারে রূপ নেয়, যদিও তা চূড়ান্ত সফলতার মুখ দেখতে পায়নি। পরবর্তীতে বাংলার বীর সন্তান তিতুমীর, টিপু সুলতান ও হাজী শরীয়তুল¬াহ প্রমুখের প্রতিরোধ সংগ্রাম, চট্টগ্রামের বিপ্লবী মাস্টারদা সূর্যসেন প্রমুখের সশস্ত্র প্রতিবাদ।

বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার জন্য গঠিত হয় ভারতীয় কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ। এ দুটি দলের মাধ্যমে চলে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা এবং অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভারতবর্ষ দু ভাগ হয়ে পাকিস্তান ও হিন্দুস্তান নামে দুটো স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম হয়। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারতবর্ষের পূর্ব ও পশ্চিম এর দুটো অংশ নিয়ে গঠিত হয় পাকিস্তান। কিন্তু পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে দূরত্ব ছিল প্রায় দেড় হাজার মাইলের মতো। স্বাধীন হয়েও পূর্ব পাকিস্তান ধীরে ধীরে পশ্চিম পাকিস্তানের কলোনি হয়ে ওঠে, এখানকার বাঙালিরা আগের মতোই রয়ে গেল বঞ্চিত। পরিবর্তন হলো না তাদের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থার।

পাকিস্তান শাসনামল (১৯৪৭-১৯৭১):
পাকিস্তান মূলত এমন একটি দেশ ছিলো যার দু খণ্ডের মানুষে-মানুষে শুধুমাত্র ধর্ম ছাড়া আর কোনই মিল ছিল না। হাজার মাইলের দূরত্ব ছাড়াও সংস্কৃতি, ভাষা, আচার-আচরণ এমনকি অর্থনৈতিক অবস্থানেও ছিল ব্যাপক ব্যবধান। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পটভূমি অনুসন্ধান করে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই শুরু হয় পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণমূলক আচরণ। কেবল অর্থনৈতিক শোষণ নয়, বাঙ্গালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপরও নিপীড়ন শুরু হয় এবং এর প্রথম দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয় যখন পাকিস্তানের জনক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে ঘোষণা দেন “উর্দু এবং কেবলমাত্র উর্দুই হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা”। পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ জিন্নাহর এ ঘোষণা জনগণ মেনে নেয়নি। যার ফলশ্র“তিতে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫১ সালের ২১ ফেব্র“য়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ছাত্র-জনতা। পুলিশের গুলিতে প্রাণ দিয়ে আহমদ, রফিক ও জব্বাররা প্রমাণ করে যায় যে, পৃথিবীতে একমাত্র জাতি হিসেবে আমরা বাঙ্গালিরাই ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি।

ওই সময়ের উল্লেখযোগ্য ঘটনাবলী:

১৯৫৪: নির্বাচনে মুসলিম লীগের বিপক্ষে যুক্তফ্রন্টের জয়। ঐ বছরের ৩ এপ্রিল শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুক হক চার সদস্য বিশিষ্ট যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভা গঠন করেন। কিন্তু ৩১ মে পাকিস্তানের গভনর জেনারেল গোলাম মোহাম্মদ যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিপরিষদ বাতিল করে দিয়ে শাসনতন্ত্রের ৯২ (ক) ধারা জারির মাধ্যমে প্রদেশে গভর্নরের শাসন প্রবর্তন করেন।
১৯৫৬: ২৩ মার্চ ১৯৫৬ পাকিস্তানের প্রথম শাসনতন্ত্র কবে কার্যকর হয় এবং এ বছর পাকিস্তানকে ইসলামী প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
১৯৫৮: আইয়ুব খানের নেতৃত্বে সামরিক শাসন জারি।
১৯৬২: ছাত্রদের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন শুরু।
১৯৬৬: আওয়ামী লীগ নেতা শেখ মুজিবর রহমান ছয় দফা দাবি নিয়ে পূর্ব পাকিস্তানে গণতন্ত্র ও স্বায়ত্ত্বশাসন প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করেন।
১৯৬৮: শেখ মুজিবর রহমান, কিছু বাঙালি সাধারণ মানুষ এবং সেনা সদস্যের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। ইতোমধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র কমিটি তাদের ১১ দফা আন্দোলন শুরু করে।
১৯৬৯: আইয়ুব বিরোধী গণঅভ্যুত্থান চরম রূপ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আসাদ, নবকুমার স্কুলের ছাত্র মতিউর রহমান এবং গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে শহীদ হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহাম্মদ শামসুজ্জোহা
১৯৭০: জেনারেল আইয়ুব খান জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরে যান। চরম চাপের মুখে ইয়াহিয়া খান সাধারণ নির্বাচনের ঘোষণা দেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের মধ্যে ১৬৭টি আসন পায়, যা সমগ্র পাকিস্তানের সর্বমোট ৩০০ আসনের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিল। তৎকালীন সামরিক সরকার ফলাফল মেনে নিলেও বিজয়ী দল আওয়ামী লীগের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে।

Offline 710001603

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 102
  • Test
    • View Profile
Regards,

Md. Golam Rosul(GR)

Department of Electrical and Electronic Engineering
Faculty of Engineering
Daffodil International University (DIU)
Room:506, 4th Floor, Main Campus
102, Shukrabad, Dhaka -1207
Contact:+8801747805992

Offline mnsalim

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 78
  • Enjoy your time by learning
    • View Profile
    • Learning Review
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গর্ব আমাদের অহংকার :)
Md. Nazmul Hoq

Offline arif_mahmud

  • Jr. Member
  • **
  • Posts: 90
  • Test
    • View Profile

Offline Arfuna Khatun

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 139
  • সর্বশ্রেষ্ঠ আদালত হচ্ছে মানুষের বিবেক।।
    • View Profile
Mosh. Arfuna Khatun
Lecturer in Mathematics
Dept. of GED