১) ধৈর্যঃ
“এবং আল্লাহ্ তাদেরকে ভালবাসেন যারা (সাবিরুন) ধৈর্য ধারনকারী।”(সূরা ইমরান ৩:১৪৬)
২) ন্যায় প্রতিষ্ঠা এবং পক্ষপাতহীন হওয়াঃ
হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোন সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ করো না। সুবিচার কর এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় কর। তোমরা যা কর, নিশ্চয় আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত। (সূরা মায়িদা ৫:৮)
“আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা সুবিচার করে এবং নায়বান।”[সূরা আল হুজুরাত ৪৯:৯]
৩) আল্লাহ্র প্রতি বিশ্বাস রাখা:
“অবশ্যই, আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাঁর প্রতি বিশ্বাস রাখে।”(সূরা ইমরান ৩:১৫৯)
৪) দয়া:
আয়েশা (رضي الله عنها)বলেছেন:আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেন:
“আল্লাহ্ প্রতি বিষয়ে দয়া ভালোবাসেন।”(বুখারি)
৫) অনুশোচনা:
“যথার্থভাবে,আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা অনুশোচনায় আল্লাহ্র কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে।”(সূরা বাকারা ২:২২২)
৬)দয়া:
“যথার্থভাবে, আল্লাহ্ তাদেরকে পছন্দ করেন যারা আল-মুত্তাকুন(দয়ালু)। ”(সূরা ইমরান ৩:৭৬)
“আল্লাহ্ ভালোবাসেন ন্যায়পরায়ণদের (দয়ালু)”[সূরা আল তওবা ৯:৪]
সাদ বিন আবু ওয়াক্কাস (رضي الله عنه ) বলেছেন: আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ) বলেছেন, “আল্লাহ্ একজন দাসকে ভালোবাসেন যে দয়ালু,যার কোন চাহিদা নেই এবং যাকে কেউ গ্রাহ্য করেনা। ”
৭) ভালো কাজ করা:
“প্রকৃতপক্ষে,আল্লাহ্ ভালোবাসেন আল-মুহসিনুন(যে ভালো কাজ করে)।”(সূরা বাকারা ২:১৯৫)
৮) পবিত্রতা:
“এবং আল্লাহ্ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা নিজেদেরকে পরিষ্কার এবং পবিত্র রাখে।”(সূরা তওবা ৯:১০৮)
৯) ধনীদের নম্রতা:
সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস(رضي الله عنه )বলেছেনঃ আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ) বলেছেনঃ “আল্লাহ্ বিশ্বাসীদের ভালোবাসেন যারা ধার্মিক এবং ধনী ,কিন্তু অহংকার করে দেখিয়ে বেড়ায় না। ”(মুসলিম)
১০) মহানুভবতাঃ
আল হাকিম বলেছেনঃ আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ) বলেছেনঃ “আল্লাহ্ সর্বাপেক্ষা মহানুভব এবং তিনি ক্রয়,বিক্রয় এবং বিচারের রায়ে উদারতা ভালোবাসেন।”
১১)নীতিবানঃ
আল্লাহ্র নবী( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেছেনঃ “আল্লাহ্ ভালবাসেন সেই সব গরীব বিশ্বাসীদের যাদের অনেক সন্তান আছে কিন্তু ভিক্ষাবৃত্তি থেকে বিরত থাকে। ”(মুসলিম এবং আহমেদ)
১২)আল্লাহ্কে খুশি করার জন্য ভালবাসাঃ
আল তারাবানি, ইবনে ইয়াহিয়া,ইবনে হিব্বান এবং আল-হাকিম বলেছেনঃ আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেছেনঃ “যদি দুই জন একে অপরকে আল্লাহ্র কাজ বা আল্লাহ্ কে খুশি করার জন্য ভালবাসে তাহলে যে তুলনামূলক অপরকে বেশি ভালবাসে,তাঁকে আল্লাহ্ ও বেশি ভালোবাসবেন।”
১৩)ক্রমাগত সৎকর্ম করে যাওয়াঃ
আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেছেনঃ “আল্লাহ্ সবচেয়ে পছন্দনীয় কাজ হলো সেসব যেগুলো সংখ্যায় অনেক কাজ না হলেও অনবরত করে যাওয়া হয়।”(বুখারি এবং মুসলিম)
১৪)সাবর(ধৈর্য):
“এবং আল্লাহ্ ভালোবাসেন যারা দৃঢ় এবং অবিচল (আস-সাবিরিন(ধৈর্যধারণকারী))।”[সূরা আল ইমরান ৩:১৪৬]
১৫)সময়মত নামাজ আদায় করাঃ
“আল্লাহ্ সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন যখন তাঁর বান্দারা সময়মত নামাজ আদায় করে।”(হাদিস-বুখারি)
১৬)ভালো ব্যবহার ও ভালো আচরণঃ
আল-তিরমিধির বর্ণনায়ঃ আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেছেনঃ “তারাই আমার সবচেয়ে ভালবাসার মানুষ এবং শেষ বিচারের দিনে আমার সবচেয়ে কাছের আসনে বসবে যাদের ব্যবহার ও আচরণ তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে ভালো, যারা আন্তরিক,অন্যদের সাথে ভালো সম্পর্ক রেখেছে এবং বিনয়ী এবং তারা আমার দ্বারা সবচেয়ে বেশি ঘৃণিত হবে এবং সবচেয়ে দূরের আসনে বসবে যারা বাঁচাল এবং উগ্র। ”
আল্লাহ্র প্রতি ভালো বাসা হচ্ছে আমাদের প্রার্থনা যা একমাত্র তাঁর প্রতি সরাসরি করা হয়। অন্য ভালবাসাগুলিও তাঁকে খুশি করার জন্য হতে হবে। আল্লাহ্ যা আদেশ করেছেন তা মেনে চলা এবং যা নিষেধ করেছেন তা এড়িয়ে চলা,এর সাথে রাসুলুল্লাহ ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) এর সুন্নাতকে অনুসরণ করাই আল্লাহ্র প্রতি ভালোবাসা। যারা আল্লাহ্ এবং তাঁর নবী( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ), ছাড়া অন্য কেউ বা অন্য কিছুকে মেনে চলে,অথবা তাঁদের ছাড়া অন্য কারো বানীকে মেনে চলে ,অথবা আল্লাহ্ ছাড়া অন্য কিছুকে ভয় করে অথবা আল্লাহ্কে এড়িয়ে নিজের সুখ খুঁজে,অথবা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে সে আল্লাহ্ অথবা তাঁর নবী( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) কাউকেই ভালবাসেনা। মুসলিমদের একে অপরকে ভালবাসা উচিৎ এবং অপরের ভালো কামনা করা উচিৎ। আল্লাহ্র নবী ( صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ) বলেছেনঃ “বিশ্বাসী সেই যে নিজের জন্য যা পছন্দ করে তা নিজের ভাই এর জন্যও পছন্দ করে।”(বুখারি)