হাওয়ায় টুংটাং...
নেই পাখির কলতান, নেই টিনের চালে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ার ধ্বনি। যান্ত্রিকতার শহরে হাইড্রোলিক হর্নের শব্দে কান পাতা দায়। শব্দদূষণ হানা দেয় অন্দরেও। একটু শান্তি কোথায়! যন্ত্রমানব সেজে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে উঠেছেন নিশ্চয়। অন্দরে প্রশান্তির আবহ আনতে তাই মিষ্টি আওয়াজের কিছু ব্যবস্থা করে নিতে পারেন নিজেই।
উইন্ড চাইম। আক্ষরিক অর্থ হাওয়া ঐকতান। হাওয়ায় আন্দোলিত হয়ে ধ্বনির ঐকতান তৈরি করে বলেই এমন নাম। অন্দরসজ্জায় এ অনুষঙ্গের ব্যবহার মনে জাগায় প্রশান্তির আমেজ।
রেডিয়েন্ট ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের প্রধান ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনার গুলশান নাসরীন চৌধুরী বলেন, ‘ঘরের যে জায়গাটা দিয়ে সব সময় বাতাস চলাচল করে, সেখানটায় উইন্ড চাইম রাখা যেতে পারে। আজকাল বেশ সুন্দর নকশার উইন্ড চাইম পাওয়া যায়। এগুলোর ব্যবহারে ঘরের সৌন্দর্যও বাড়বে।’
অন্দরসজ্জায় এর ব্যবহার সম্পর্কে আরও জানালেন গুলশান নাসরীন চৌধুরী, সদর দরজার বাইরে উইন্ড চাইম লাগানো যেতে পারে। বাড়িতে কেউ এলে কলবেল না বাজিয়ে উইন্ড চাইমে স্পর্শ করলেও আপনি বুঝতে পারবেন দরজার বাইরে তার উপস্থিতি।
ড্রয়িং রুম আর ডাইনিং রুমের মাঝের জায়গাটাতেও উইন্ড চাইম রাখা যায়। এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাওয়ার সময় বাড়ির কোনো সদস্য হয়তো আলতো করে ছুঁয়ে দিলেন; কিংবা কারও মাথার সামান্য স্পর্শেই তা বেজে উঠল টুংটাং। সব সময় এই মিষ্টি ধ্বনি অনুভব করতে চাইলে এটিকে বারান্দায় রাখতে পারেন। হাওয়ায় ক্রমাগত বাজতে থাকবে।
শোয়ার ঘরে বা অন্য কোনো ঘরের দরজায় রাখতে পারেন। আবার কোনো ঘরের জানালায়ও রাখা যায়। জানালায় রাখলে এটি সহজেই হাওয়া পাবে, আর হাওয়ার দুলুনিতে ভেসে আসবে টুংটাং আওয়াজ।
কিনতে চাইলে
অন্দরসজ্জার সরঞ্জামাদি পাওয়া যায়, এমন অনেক দোকানেই দেখা পাবেন উইন্ড চাইমের। যেমনটা দেখা মিলল ঢাকার বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের ‘অন্য কিছু’ নামের দোকানটিতে। ছোট-বড় নানা আকারের উইন্ড চাইম রয়েছে সেখানে। উইন্ড চাইমের বিভিন্ন উপাদানের আকৃতিতেও রয়েছে বৈচিত্র্য। ঘণ্টার আকৃতি ছাড়াও রয়েছে ধাতব ফাঁপা টিউবের ব্যবহার। সবগুলোর আলোড়নেই শব্দ কম্পন তৈরি হয়।
ফ্যাশন হাউস আড়ং, যাত্রা আর রঙ-এ মিলবে নকশাদার কিছু উইন্ড চাইম। পুঁতি, কাঠ আর ঝুনঝুনির ছোট্ট সংস্করণ মিলিয়ে তৈরি করা এসব উইন্ড চাইম দেবে খানিকটা হালকা আওয়াজ। অন্দরে ব্যবহৃত রঙের সঙ্গে মিল রেখে কিনে নিতে পারেন আপনার পছন্দের উইন্ড চাইমটি। আড়ংয়ের উইন্ড চাইমে রয়েছে পাটের ব্যবহার।
১০০-৮৫০ টাকার ভেতরে নানা ধরনের উইন্ড চাইম কিনতে পাবেন। চাইলে পুঁতি, বিডস আর টুংটাং আওয়াজের জন্য ছোট্ট ঝুনঝুনি কিনে নিয়ে আপনি নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন পছন্দসই উইন্ড চাইম।