মাটির তৈজস
বরণ করে নেওয়ার মৌসুমে নিজেদের সাজপোশাকে যেমন থাকে ‘ষোলো আনা বাঙালিয়ানা’র ছাপ, তেমনটি রাখতে চাই আমাদের নিজ নিজ ঘরের অন্দরে-বাহিরে। যে পান্তা-ইলিশ ছাড়া বৈশাখের সকালটাই অনেকের কাছে মিছে, সেই পান্তা-ইলিশ খাবেন কিসে? আলপনা আঁকা পোড়ামাটির সানকি ছাড়া এই পদ কি জমবে!
এমন আরও অনেক তৈজস আছে, যা ব্যবহার করতে পারেন প্রতিদিনের উপকরণ হিসেবে। মাটির জিনিস হলেও নকশা আর আকারে সেটা কোনো অংশেই কম নয়।
চা কিংবা পানি পানের মগ, জগ, গ্লাস, মাটির পাত্র, ফুলের নকশা আঁকা রঙিন হাঁড়ি, কলস, সরা বা ঢাকনাসহ আরও নানা উপকরণ আছে এই তালিকায়। শুধু রান্নাঘর বা খাবার টেবিল নয়, অন্দরের শোভা বাড়াতেও মাটির নানা ধরনের শোপিস ব্যবহার করতে পারেন। পয়লা বৈশাখকে কেন্দ্র করে যাঁরা মাটির তৈজসে খাবার টেবিল কিংবা ঘর সাজাতে চান, তাঁদের জন্য এখানে রইল কিছু তথ্য।
যা যা পাওয়া যায়
মাটির তৈজসের মধ্যে রয়েছে পোড়ামাটির সানকি, পানি পানের জগ-মগ, চায়ের কাপ, হালিমের বাটি, মাটির বল (ভাত বা ঝোল রাখার জন্য) ইত্যাদি। নিতে পারেন ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের হাঁড়ি কিংবা কলস। ঘর সাজানোর জন্য আছে শিকায় ঝোলানো শখের হাঁড়ি। কিছু মাটির পাত্রে রং দিয়ে নকশা করাই থাকে। আবার চাইলে আপনার ইচ্ছেমতো নকশাও করে নিতে পারেন। সাধারণত ফুলদানি, সরা, হাঁড়ি ও কলসিতে নকশা করা যেতে পারে। আবার ফরমায়েশে কম দামে নকশা ছাড়া হাঁড়ি কিংবা কলস কিনে নিতে পারেন, পরে নিজের মতো করে নকশা এঁকে নিতে পারেন। নিতে পারেন চকচকে আয়নার টুকরা বসানো হাঁড়ি, কলস কিংবা ফুলের টবও। পাওয়া যায় মাটির তৈরি বিভিন্ন আকারের ল্যাম্পশেড। দেয়াল সাজাতে নিতে পারেন টেরাকোটার ফলক কিংবা বিখ্যাত মনীষীদের প্রতিকৃতি। এ ছাড়া ঘর সাজানোর অনুষঙ্গ হিসেবে ছোট ছোট মাটির খেলনা বসানো ডালা বা কুলা কিনে নিতে পারেন। প্রজাপতি, হাতি, ঘোড়া, বাঘ, মাছসহ বিভিন্ন ফুল ও ফলের অবয়ব কিংবা মাটির পুতুলসহ নানা কিছু পাবেন।
দরদাম
পোড়ামাটির সানকি পাবেন ২৫ থেকে ৫০ টাকায়, পানির মগ ১৫ থেকে ২৫ টাকা, চায়ের কাপ প্রতিটি ৫ টাকা, ছোট-বড় হালিমের বাটি ১৫ থেকে ৩০ টাকা, বিভিন্ন আকারের মাটির পাত্র ৩৫ থেকে ৬০ টাকায়। নকশা আঁকা রঙিন হাঁড়ি কিংবা কলস কিনতে পারেন ১০০ টাকার মধ্যেই। তবে নকশা ছাড়া হাঁড়ি কিংবা কলস কিনে নিতে পারেন অনেক কম দামে—প্রতিটি ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। ছোট ছোট নকশা আঁকা হাঁড়িভর্তি ‘নকশা করা পাটের শিকা’ নিতে পারেন ১০০ টাকায়। চকচকে আয়নার টুকরা বসানো হাঁড়ি, কলস কিংবা ফুলের টব ২০০ থেকে ৪০০ টাকা। মাটির তৈরি বিভিন্ন আকারের ল্যাম্পশেড পাবেন ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। টেরাকোটার ফলক কিংবা বিখ্যাত মনীষীদের প্রতিকৃতি পাওয়া যাবে ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়। মুখোশ ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। এ ছাড়া ছোট ছোট রঙিন হাঁড়িতে সাজানো ডালা বা কুলা নিতে পারেন ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। পুতুলের মাঝে প্রজাপতি, হাতি, ঘোড়া, বিভিন্ন ফলের অবয়ব কিংবা ‘গৃহবধূর’ মাটির পুতুল নিতে পারবেন ১০ থেকে ২০ টাকায়।
কোথায় পাবেন
রাজধানী ঢাকার শাহবাগ, শিশু একাডেমী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের সামনে দোয়েল চত্বরে, কারওয়ান বাজারের ১ নম্বর ডিআইটি মার্কেটের নিচতলা, কলাবাগান, ধানমন্ডি ২৭, গুলশান ২, রাজাবাজারসহ উত্তরার বিভিন্ন জায়গায় পাওয়া যায়। এ ছাড়া আড়ং এবং অঞ্জন’স–এর শোরুমেও মিলবে এমন সব অনুষঙ্গ।