চাওয়া-পাওয়ার ‘লাইলাতুল বরাত’

Author Topic: চাওয়া-পাওয়ার ‘লাইলাতুল বরাত’  (Read 1120 times)

Offline faruque

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 655
    • View Profile
চাওয়া-পাওয়ার ‘লাইলাতুল বরাত’



  • লাইলাতুল’ বা ‘শব’ অর্থ  রাত। আর বরাত অর্থ মুক্তি। এক কথায় লাইলাতুল বরাত অর্থ মুক্তির রাত। গুনা থেকে মুক্তির রাত। এ রাতটি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত ১৫তম রজনী। বায়হাকি ও ইবনে মাজায় এসেছে— হজরত নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেন, যখন শাবান মাসের ১৫ রজনী আসে অর্থাৎ বরাতের রাত আসে, তখন তোমরা রাত জাগরণ কর! অর্থাৎ নফল ইবাদত কর। বিশেষভাবে নফল নামাজ পড় এবং পরদিন রোজা রাখ। কেননা আল্লাহ রব্বুল আলামিন এই রাতে প্রথম আসমানে চলে আসেন। তিনি তাঁর বান্দাদের ডেকে ডেকে বলতে থাকেন, তোমাদের কেউ ক্ষমা প্রার্থনা করার আছ কি? যে আমার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কেউ আমার কাছে রিজিক চাওয়ার আছ কি? যে রিজিক চাইবে, আমি তাকে রিজিক দান করব। কেউ বিপদগ্রস্ত বা রোগ-শোকগ্রস্ত আছ কি? আমার কাছে রোগ-শোক থেকে মুক্তি চাইবে, আমি তাকে মুক্তি দিয়ে দেব।

 রসুল (সা.) আরও বলেন, এভাবে আল্লাহ একেকটা বিষয় উল্লেখ করে করে বলতে থাকেন, অমুক অমুকটা চাওয়ার কে আছ? আমি তাকে দান করব। আল্লাহ সুবহে সাদিক পর্যন্ত ডেকে ডেকে বলতে থাকেন। আমার কাছে চাও, আমার কাছে চাও, আমার কাছে চাও। উল্লিখিত হাদিসের বর্ণনা দ্বারা বোঝা গেল, লাইলাতুল বরাতে রব্বুল আলামিনের দয়া, করুণা ও ক্ষমা বান্দার খুব কাছে চলে আসে। সুতরাং বোঝা গেল, উল্লিখিত রাতটি আল্লাহর কাছে চাওয়ার রাত। কী কী চাইতে হবে তা হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। এক. আল্লাহর কাছে তামাম গুনা থেকে মুক্তির জন্য চাওয়ার কথা বলা হয়েছে। সব গুনা থেকে মুক্তি নিয়ে কোনো বান্দা কবরে গেলে সে জীবনে সবচেয়ে বড় সফলতা অর্জন করল। পবিত্র কোরআনে এ সম্পর্কে ইরশাদ হয়েছে : ‘তারাই নিজেদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে সুপথপ্রাপ্ত, আর তারাই যথার্থ সফলকাম। ’ (সূরা বাকারা : ৫)। একজন মানুষের জীবনের সব ক্ষেত্রে সফলতা আসে আল্লাহর ভয়কে দিলে  (অন্তরে) রেখে আল্লাহর বিধিবিধান মানার মধ্যে। যুগে যুগে আম্বিয়ায়ে কিরাম (আ.)-এর পর যারাই আল্লাহর ভয় দিলে রেখে শরিয়তের ওপর নিজেদের চালিয়েছেন তারাই জীবনে সফলতা অর্জন করেছেন। বস্তুত  ইমানদার ব্যক্তিরাই এ কথা বুঝতে পারেন যে, এই নশ্বর দুনিয়ার কোনো বস্তুই আমাদের জন্য স্থায়ী নয়। আমাদের জান ও মালের একমাত্র মালিক আল্লাহ। তাই তো ইমানদার ব্যক্তিরা সময়-সুযোগ পেলেই তাঁর ইবাদতে মশগুল হয়ে যান। আল্লাহর বিশেষ দিন ও রাতকে ইবাদত করার জন্য মহামূল্যবান মনে করেন। যদি কখনো শয়তানের ধোঁকায় কোনো গুনা হয়ে যায় সঙ্গে সঙ্গে খালিস দিলে তওবা করেন এবং গুনা থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। বুখারির মধ্যে বড় একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সারসংক্ষেপ হলো : বনি ইসরায়েলের মধ্যে একটি অনিন্দ্যসুন্দরী মহিলা ছিল। তার সুন্দরের আকর্ষণে অনেক মানুষ মুগ্ধ হয়ে যেত। একবার এক লোক ওই মহিলার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। তার সৌন্দর্যে আকৃষ্ট হয়ে কুমতলবে তার পাশে গিয়ে বসে পড়ল।

পরক্ষণেই তার অন্তরে আল্লাহর স্মরণ ও ভয় এসে গেল। সে আপন মনে বলতে লাগল, হায় আল্লাহ! আমি এ কী করছি। আমি কোন মুখে তোমার সামনে দাঁড়াব। এই
লেখক : মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও খতিব, বারিধারা, ঢাকা।