যদি কারও কাজে লাগে :
১১০০ টাকায় কিডনির ডায়ালাইসিস হবে গণস্বাস্থ্যে
কিডনি বিকল হলে রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করার একমাত্র উপায় হলো ডায়ালাইসিস। বর্তমানে বাংলাদেশে এই চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম উদাহরণ তৈরি করতে যাচ্ছে রাজধানীর ধানমণ্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল। কম খরচে সর্বোচ্চ চিকিৎসাসেবা দিতে আগামী সপ্তাহ থেকে হাসপাতালের গণস্বাস্থ্য ডায়ালাইসিস সেন্টারে শুরু হতে যাচ্ছে এই সেবা কার্যক্রম।
বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে কিডনি রোগীদের প্রতি মাসে ডায়ালাইসিস করতে খরচ হয় ৩০ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা। এতে দরিদ্র রোগীদের চিকিৎসা খরচের ব্যয় বহন করতে হিমশিম খেতে হয়। সে অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে স্বল্প আয়ের রোগীদের জন্য মাত্র এক হাজার ১০০ টাকায় ডায়ালাইসিস করার উদ্যোগ নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আলোচনা সভায় বক্তারা জানান, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট এই সেন্টারে প্রতি সেশনে এক হাজার ১০০ টাকায় দরিদ্র রোগীরা ডায়ালাইসিস করার সুযোগ পাবেন। মধ্যবিত্তদের জন্য প্রতি সেশনে খরচ পড়বে দেড় হাজার টাকা। আর উচ্চবিত্তদের জন্য সেশনপ্রতি খরচ তিন হাজার টাকা। ডায়ালাইসিস সেন্টারে থাকছে ২৪ ঘণ্টা সেবার সুযোগ। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। সেন্টারে আছে ১০ শয্যার একটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)।
আলোচনা সভা থেকে জানানো হয়, বর্তমানে দেশে প্রায় দুই কোটি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। এর মধ্যে আট লাখ রোগীর ডায়ালাইসিসের দরকার। চিকিৎসা করাতে সক্ষম প্রায় ৩০ হাজার কিডনি রোগী প্রতিবছর ডায়ালাইসিস চিকিৎসা পদ্ধতির আওতায় আসেন। কিন্তু চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করতে না পারায় প্রতিবছর প্রায় ৪০ হাজার রোগী মারা যান।
বক্তারা আরো জানান, বাংলাদেশে ডায়ালাইসিস মেশিন আছে প্রায় ৬৫০টি। এর উল্লেখযোগ্য অংশই বিকল। এমন বাস্তবতায় দরিদ্র রোগীদের সেবায় এগিয়ে আসতে উদ্যোগী হয়েছে গণস্বাস্থ্য নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র।
ডায়ালাইসিসের ব্যয় নিয়ে কথা বলতে গিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী রোগীদের ভোগান্তির কিছু বেদনাদায়ক পরিস্থিতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে যেকোনো ভালো সেন্টারে ডায়ালাইসিস করতে তিন থেকে আট হাজার টাকা খরচ হয়। ভারতে প্রতিবার ডায়ালাইসিসে খরচ হয় এক হাজার রুপি। পাকিস্তানের করাচিতে সিন্ধ ইনস্টিটিউট অব ইউরোলজিক্যাল সায়েন্সেস ও সিন্ধ হাসপাতালে করাচিবাসীর জন্য বিনা খরচে ২৪ ঘণ্টা ডায়ালাইসিসের সুবিধা রয়েছে।