ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট কাকে পাঠাব আর কাকে নয়

Author Topic: ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট কাকে পাঠাব আর কাকে নয়  (Read 757 times)

Offline Raihana Zannat

  • Sr. Member
  • ****
  • Posts: 392
  • Test
    • View Profile
মাস ছয়েক আগের ঘটনা। হুট করে এক বন্ধু ফোন করে জানায়, তার ফেসবুক প্রোফাইলে থাকা ছবি ব্যবহার করেছে অন্য একজন। ছবি যে ব্যবহার করেছে, সে তার প্রোফাইলে যুক্ত করেছে। বন্ধু কী করবে তা জানতে চায়।

প্রশ্ন করলাম, ছবিটি কি পাবলিক করা ছিল? জবাব এল, ‘ছবিটি যাতে শুধু বন্ধুরাই দেখতে পারে, সে ব্যবস্থা করা ছিল।’ তার মানে যে ছবিটি ব্যবহার করেছে সে ওই বন্ধুর পরিচিত। বন্ধু বলল, ‘বাস্তবে তার সঙ্গে পরিচয় নেই। একটি ফেসবুক গ্রুপে বিভিন্ন পোস্ট ভালো লাগত। একদিন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় গ্রুপটির এক অ্যাডমিন।’

সেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করার পর ফেসবুকের পর্দায় ‘পিপল ইউ মে নো’ সুবিধায় এমন কিছু নাম চোখের সামনে আসে, যারা কিনা ওই পেজে বিভিন্ন পোস্ট দিত। তাদের পোস্টে আমার বন্ধুও মন্তব্য করত। বন্ধুর দেওয়া পোস্টেও তারা মন্তব্য করত। পিপল ইউ মে নোতে আসা কয়েকজনকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায় আমার বন্ধু। আর তাদেরই একজন পরবর্তী সময়ে বন্ধুর ছবি ব্যবহার করে।

কোথাকার জল কোথায় গিয়ে দাঁড়াল। ফেসবুক বা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম চায় তাদের ব্যবহারকারী বাড়ুক। মানুষ বেশি বেশি একজন আরেকজনের ‘বন্ধু’ হয়ে উঠুক। ফেসবুকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর প্রোগ্রামের মাধ্যমে আপনার তথ্য, ফেসবুক ব্যবহারের প্রবণতা, পছন্দ-অপছন্দ বুঝে নতুন বন্ধু করার পরামর্শ দেয়। আর ফেসবুকে বন্ধুর বন্ধুদের নাম তো আসেই। স্বয়ংক্রিয়ভাবে পিপল ইউ মে নো হিসেবে এ নামগুলো আপনার ফেসবুকে চলে আসে।

পিপল ইউ মে নো সুবিধা যে খারাপ তা নয়। এর মাধ্যমে নিয়মিতই বন্ধু খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু যেসব নাম আসবে, তাদের সবাইকে কি বন্ধু হওয়ার অনুরোধ (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট) পাঠাবেন? আবার কোনো বিখ্যাত, তারকাখ্যাতিসম্পন্ন মানুষের নাম এ তালিকায় এলেও কি অনুরোধ পাঠাবেন?

না চিনে, বাস্তবে কোনো যোগাযোগ না হলে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট না পাঠানোই ভালো। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানোর ব্যাপারে যেসব বিষয় মাথায় রাখতে হবে তা সংবাদমাধ্যম বিজনেস ইনসাইডার-এ প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে। সেগুলো হলো-

 

যাকে রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছেন তাকে চেনেন?

চেনা মানুষকেই ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। অপরিচিত কাউকে পাঠানো ভদ্রতার মধ্যে পড়ে না। আর তা ছাড়া যাকে পাঠাচ্ছেন, সেও বিরক্ত হতে পারে। মোটামুটি বেশির ভাগ সচেতন ফেসবুক ব্যবহারকারীই অপরিচিতদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট গ্রহণ করে না।

 

কেন পাঠাবেন?

আপনি কী কারণে কাউকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছেন তা খেয়াল রাখবেন।

 

কার সঙ্গে কী শেয়ার করতে চাচ্ছেন তা খেয়াল করছেন তো?

ভার্চ্যুয়াল জগৎ হলেও আপনার ফেসবুক প্রোফাইলজুড়ে থাকে আপনার কর্মকাণ্ড। এখানে আপনার ব্যক্তিগত সুখ-দুঃখের স্ট্যাটাস, ছবিসহ অনেক কিছুই থাকতে পারে। তাই কে আপনার বন্ধু হচ্ছে কিংবা কাকে বন্ধু বানাতে চাচ্ছেন, তা খেয়াল রাখা জরুরি।

 

কারও বন্ধু হওয়ার আগ্রহ?

কারও স্ট্যাটাস ভালো লাগে বা কারও জানাশোনার প্রতি আপনার ভালো লাগা আছে? হতে পারে ভিন্ন কোনো কারণে আপনি মানুষটির প্রতি মুগ্ধ। তখন কী করবেন? এটি সম্পূর্ণ আপনার ব্যক্তিত্বের ওপর নির্ভর করবে। সে রিকোয়েস্ট গ্রহণ না করলে তাকে কোনোভাবেই বিরক্ত করবেন না। কিংবা পরে ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে কখনো তার কোনো পাবলিক পোস্টে বাজে মন্তব্য করবেন না।

 

নিজের সীমাবদ্ধতা জানুন

কেউ আপনার বন্ধুত্বের অনুরোধে সাড়া দিচ্ছে না? তখন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট বাতিল করে আবার রিকোয়েস্ট পাঠানো ঠিক নয়। আবার কেউ হয়তো আপনাকে তার বন্ধু তালিকা থেকে বাদ (আনফ্রেন্ড কিংবা ব্লকড) দিয়ে দিয়েছে? এমন মুহূর্তে তাকে আবার রিকোয়েস্ট পাঠানো ঠিক নয়। আর সেই মানুষ সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণা পোষণ করা থেকে বিরত থাকুন। বরং নিজের সীমাবদ্ধতাকে জানুন।

আরেকটি অভিজ্ঞতার কথা শোনা যাক। ২০১০ সালের দিকের ঘটনা। দেশের এক ফ্লাইং একাডেমির ফেসবুক পেজে আগ্রহীরা কোনো প্রশ্ন করলে তাতে বিভিন্ন পরামর্শ দিতে দেখা যায় এক তরুণকে। যিনি সে সময় ফিলিপাইনে প্রশিক্ষণ নিচ্ছিলেন বিমান চালনায়। এ বিষয়ে আগ্রহ থাকায় তাঁকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালেন একজন। এরপর দুজনে বন্ধু হলে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে ফেসবুকে আলাপ চলতে থাকে। তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। ভার্চ্যুয়াল জগতের বন্ধুত্ব বাস্তবেও টিকে আছে। সব সময় তো আর এমন হয় না, তাই বুঝেশুনে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান।
(collected)
Raihana Zannat
Senior Lecturer
Dept. of Software Engineering
Daffodil International University
Dhaka, Bangladesh