« on: April 02, 2018, 03:50:54 PM »
বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের কথা একবার চিন্তা করি, যারা ভাষার বিকাশে পিছিয়ে আছে, যারা অতি চঞ্চল, যার সামাজিক আচরণের দক্ষতায় ঘাটতি রয়েছে; যে কিনা কোনো নির্দেশনা অনুসরণ করে না, তাদের জন্য গতানুগতিক একটি শ্রেণিকক্ষ কি আরও একটি বড় চ্যালেঞ্জ নয়?
যে শিশুটি পেন্সিল ধরে না, তার জন্য প্রতিদিনের শ্রেণিকক্ষের লেখার কাজ, আর লিখিত মূল্যায়ণপত্র অনেক বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের উপযোগী শ্রেণিকক্ষ, প্রশিক্ষক, মূল্যায়ণ পদ্ধতি ইত্যাদি একটি শিশুর অধিকার। একটি উন্নয়ণশীল জাতি হিসেবে আমরা যত দেরি করবো এই অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ততই সম্ভাবনার দ্বার থেকে পিছিয়ে যেতে থাকবো, আর হারাতে থাকবো অনেক প্রতিভা। অটিজম বা অন্যান্য বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদেরকে বুঝতে না পারা এবং তার প্রয়োজনকে মূল্যায়ন না করা তার প্রতি অন্যায় করার শামিল।
গত ৯ বছর ধরে আমি অটিজম এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের রোগ নির্ণয়, প্রশিক্ষণ পদ্ধতি, স্পেশাল শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি বিষয়ে নিবিড়ভাবে কাজ করে আসছি। কাজ করতে গিয়ে আমি বাংলাদেশে ভিন্ন প্রেক্ষাপট দেখেছি। যদিও সরকারের গৃহীত ‘সকল শিশুর জন্য শিক্ষা’ আইনটি সব শিশুদের জন্য সুযোগ এনে দিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন এই যে- বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুরা এতে কতটুকু লাভবান হচ্ছে?
কিছু শিশুর বেলায় তো এমনটি ঘটছে যে কোনো স্কুলই তাকে ভর্তি নিচ্ছে না কারণ কোন শিক্ষকই তাকে শিক্ষা প্রদানে উৎসাহী নন। স্কুলের পাঠ্যক্রম, শিক্ষকের আচরণ, অসহযোগিতা কিংবা স্কুলে বা পরিবারের অতিরিক্ত চাপের সাথে প্রতিনিয়ত খাপ খাওয়াতে অনেকেই যুদ্ধ করে যাচ্ছে। কিন্তু এই চিত্রগুলি যদি কিছুটা পরিবর্তন করা যায় আমার বিশ্বাস এই অবহেলিত শিশুরাও তাদের সকল সীমাবদ্ধতাকে পেড়িয়ে সামনে এগিয়ে যাবে। নিজের যোগ্যতা দিয়ে সমাজের উন্নয়নের মূলধারায় নিজেকে সম্পৃক্ত করতে পারবে।
পজিটিভ থিংকিং এ আমরা বিশ্বাস করি যে, প্রত্যেক শিশুর মাঝেই সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেক শিশুই শিখতে পারে- কিন্তু শিক্ষা পদ্ধতিতে আনতে হবে ভিন্নতা।
একটি শ্রেণিকক্ষে থাকতে হলে শিশুদের যেসব দক্ষতা থাকা বাঞ্ছনীয়-
• যোগাযোগের দক্ষতা
• ভাষাগত এবং
• প্রাক – প্রাথমিক দক্ষতা
• ইশারা
• অঙ্গ সঞ্চালনের দক্ষতা
• ক্ষুদ্র অঙ্গ সঞ্চালনের দক্ষতা। যেমন: পেন্সিল ধরা, তুলি ধরা ইত্যাদি।
• বড় ধরণের অঙ্গ সঞ্জালনের দক্ষতা। যেমন: খেলাধূলা করা।
• ইন্দ্রিয়ের সমন্বয়গত দক্ষতা
• দৃষ্টিগত দক্ষতা
• শ্রবণের দক্ষতা
• মনোযোগের দক্ষতা
• দীর্ঘমেয়াদী
• স্বল্পমেয়াদী
• সামাজিক দক্ষতা
• আদান প্রদান মূলক আচরণ
শ্রেণিকক্ষের আচরণ। যেমন:
শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করা, প্রশ্নের উত্তর দেওয়া
অগ্রহণযোগ্য আচরণ না থাকা,
যেমন: অযথা চিৎকার করা, থুথু ছিটানো, সিটে না বসা ।
আমাদের স্বপ্নের পথে পথ চলা সহজ নয়, আমরা জানি, কিন্তু তা অসম্ভবও নয়।
Source: লেখক: নুরুন্নাহার নুপুর , ম্যানেজিং ডিরেক্টর, পজেটিভ থিংকিং- সার্ভিসেস ফর স্পেশাল নিডস চিলড্রেন

Logged
Md. Abdur Rumman Khan
Senior Assistant Registrar