গতকাল চোখের জলে বার্সেলোনার ব্লাউগ্রানা জার্সিকে বিদায় জানিয়েছেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। বার্সেলোনার জার্সিতে এ মৌসুমই হতে যাচ্ছে তাঁর শেষ মৌসুম। বিদায়ের আগে তাঁর নামের পাশে যোগ হয়েছে কত বিশেষণ। ব্যক্তিগত শোকেসে জমা হয়েছে কত ট্রফি। বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ম্যাচসেরা হওয়ার ঘটনা সবারই জানা। তবে এমন কিছু তথ্য আছে, যা অবাক করে দিতে পারে আপনাকেও। এমন ছয়টি অজানা তথ্য—
১ . আজীবন বার্সেলোনার হয়ে খেলা ইনিয়েস্তা ছোটবেলায় কখনোই বার্সেলোনার সমর্থক ছিলেন না। বরং তিনি ছিলেন স্থানীয় আলবাসেতের পাঁড় সমর্থক। এক ম্যাচে আলবাসেতেকে বার্সেলোনা ৭-১ গোলে হারানোর পর বার্সার চিরশত্রু রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থক বনে যান ইনিয়েস্তা। পরে তাঁর সামনে সুযোগ এসেছিল রিয়াল মাদ্রিদে খেলারও। শুধু রিয়াল মাদ্রিদে কোনো আবাসিক ব্যবস্থা না থাকায় তাঁর বাবা-মা তাঁকে মাদ্রিদে দেননি।
২. লা মাসিয়ায় আসার আগে ইনিয়েস্তা আলবাসেতে ক্লাবের জুনিয়র দলে (তখনবার দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব) খেলেছেন দুই বছর। ফলে স্বাভাবিকভাবে ছোটবেলার ক্লাবটির প্রতি ইনিয়েস্তার ভালোবাসা ছিল অন্য রকম। একসময় খেলোয়াড়দের বেতন দিতে না পারায় ক্লাবটি অবনমন হুমকিতে পড়েছিল। তখন প্রায় আড়াই লাখ ইউরো দিয়ে দলের অবনমন রক্ষা করেন ইনিয়েস্তা। সেই থেকে সেই ক্লাবের একটি অংশের মালিক তিনি।
৩. ২০১০ বিশ্বকাপ-যাত্রার আগে সব খেলোয়াড় মার্কায় একটি চিঠি দিয়ে যান। সেখানে লেখা ছিল—বিশ্বকাপ জিতলে তাঁরা কে কী করবেন। সেই চিঠি খোলা হয় বিশ্বকাপ ঘরে আনার পর। ইনিয়েস্তা লিখেছিলেন, যদি তাঁরা বিশ্বকাপ জিততে পারেন তবে তিনি এক তীর্থযাত্রীর মতো সেন্ট জেমসের পথ ধরে সান্তিয়াগো কম্পোস্তেলায় পৌঁছাবেন। বিশ্বকাপ জেতার পর ইনিয়েস্তা, ফার্নান্দো তোরেস ও সার্জিও বুস্কেটস তিনজন এই ৫০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন।
৪. লা মাসিয়াতে আসার তেমন কোনো ইচ্ছেই ছিল না ইনিয়েস্তার। তাঁর বাবা-মাও চাননি তাঁদের প্রিয় সন্তানকে হাতছাড়া করতে। তবে বার্সেলোনার স্কাউট তাঁদের বুঝিয়ে ইনিয়েস্তাকে বার্সেলোনার হয়ে চুক্তিতে স্বাক্ষর করান। প্রথমে ইনিয়েস্তার বাবা-মা কয়েকবার না করে দিলেও পরে বার্সেলোনার সব সুযোগ-সুবিধা দেখে রাজি হয়েছিলেন।
৫. লা মাসিয়ায় আসার পরও পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে উঠতে পারেননি ইনিয়েস্তা। লা মাসিয়ায় থাকার সময়ে তাঁর বাড়ির প্রতি প্রচণ্ড টান ছিল। প্রতি সপ্তাহেই তাঁকে একবার হলেও বাড়ি যেতে হতো। অন্যথায় তাঁকে শান্ত রাখা কঠিন হয়ে পড়ত।
৬. পৈতৃক সম্পত্তি হিসেবে ইনিয়েস্তা পেয়েছেন ওয়াইন তৈরির কারখানা। কিন্তু শুরুতে ইনিয়েস্তা এই ব্যবসায় হাত দেবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু ২০১০ সালে সে সংশয় কাটিয়ে বাবার সঙ্গে ওয়াইন কারখানার ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে এই কারখানা ওই এলাকার সবচেয়ে বড় ওয়াইন কারখানা। এমনকি গ্যারি নেভিলের বিখ্যাত রেস্টুরেন্টেও তা সার্ভ করা হয়।