পুরুষেরা তাদের সব কিছুই নিয়ে বেশি উদাসীন থাকেন। দেহের যেকোনো সমস্যাকে সাধারণ সমস্যা মনে করে পাত্তাই দিতে চান না। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে, এই সাধারণ সমস্যাগুলোই একদিন হয়ে যেতে পারে, মরণ ব্যধি ক্যান্সার।
আবার অনেক সমস্য ক্যান্সার শরীরে বাসা বাঁধার পরে যখন মারাত্মক আকার ধারণ করে তখন ছোট ছোট উপসর্গ দিয়ে সেটা জানান দেয়। তাই দেহের কোনো অর্থাৎ যেকোনো পরিবর্তনকে অবহেলা করলে চলবে না। আসুন তাহলে আজ জেনে নিন, আপনিও কি আছেন এমন ঝুঁকিতে।
যৌনাঙ্গে পরিবর্তন: নারীদের যেমন নিজেদের স্তনে পরিবর্তন দেখা গেলে স্তন ক্যান্সারের জন্য টেস্ট করাতে হয়, তেমনি পুরুষেরও যৌনাঙ্গ বিশেষ করে অন্ডকোষে কোনোরকম পরিবর্তন দেখা গেলে অতিসত্বর ডাক্তারকে জানাতে হবে। অণ্ডকোষের আকার আকৃতিতে পরিবর্তন, স্ফীতি, ওজনে ভারী হয়ে যাওয়া বা এতে কোনো পিন্ড স্রিস্তি হওয়া হতে পারে অণ্ডকোষের ক্যান্সারের লক্ষণ।
ত্বকে দৃশ্যমান পরিবর্তন: ত্বকের ক্যান্সারের দিকে বেশিরভাগ মানুষই লক্ষ্য করেন না। ত্বকে নতুন কোনো তিল, আঁচিল অথবা কালো দাগ ত্বকের ক্যান্সারের পুর্বাভাস দেয়। আপনি যদি দেখেন এগুলো আগের চাইতে আকারে বড় হচ্ছে বা ছড়িয়ে পরছে তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।
মুত্রত্যাগে সমস্যা: অনেক দিন ধরে মুত্রত্যাগের সময়ে ব্যাথা, মুত্রের সাথে রক্ত যাওয়া, শুক্রাণুর সাথে রক্ত যাওয়া এগুলো হতে পারে প্রস্টেট ক্যান্সারের লক্ষণ।
মুখে ক্ষত অথবা ব্যাথা: মুখে ব্যাথা হলে তা ঠিক করা ডেন্টিস্টের কাজ। কিন্তু আপনি যদি দেখেন এমন কোনো ক্ষত বা ব্যাথা যা দীর্ঘদিন ধরে আছে, সারছে না কোনোভাবেই, তাহলে আপনি ডাক্তারকে জানাবেন অবশ্যই। যারা ধূমপান করেন তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি নিঃসন্দেহেই বেশি।
মলের সাথে রক্ত: মলের সাথে রক্ত গেলে তা পাইলস বা এ ধরণের রোগ হতে পারে তা সত্যি। কিন্তু এটা কোলোন ক্যান্সারেরও লক্ষণ হতে পারে। আগে এটা বয়স্ক মানুষের মাঝে বেশি দেখা যেত কিন্তু এখন তা কম বয়সীদের মাঝেও দেখা যায় তাই সাবধান থাকা জরুরি।
পেটে ব্যাথা অথবা বমি ভাব: সাধারণ বদহজমের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামানোর মতো কিছুই নেই। কিন্তু ঘন ঘন পেট ব্যাথা, পেটের পেশিতে টান পড়া এবং সব সময় বমি বমি লাগাটা মোটেও স্বাভাবিক নয়। এটা হতে পারে লিউকেমিয়া অথবা ইসোফ্যাগাল, লিভার, প্যানক্রিয়াটিক অথবা কলোরেকটাল ক্যান্সারের লক্ষণ।
ঘন ঘন জ্বর বা ইনফেকশন: সাধারণত আপনার স্বাস্থ্য ভালোই। কিন্তু সম্প্রতি ঘন ঘন জ্বর হচ্ছে আপনার, ফ্লু-এর মতো উপসর্গ দেখা দিচ্ছে, ইনফেকশন হচ্ছে সহজে। তবে তা হতে পারে লিউকেমিয়ার লক্ষণ। কারন এটি শরীরের রগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেঙে দেয়।
ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া: গলা খুসখুস করা এবং ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া একদিকে যেমন গলা এবং পাকস্থলীর ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে, তেমনি হতে পারে লাং ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়ের উপসর্গ।
শরীরে কালশিটে পড়া: ছোটখাটো ব্যাথা পেলেই সহজে ত্বকে কালশিটে পড়ে যাওয়া, এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই শরীরের এখানে ওখানে অযথাই কালশিটে পড়াটা হতে পারে লিউকেমিয়ার আরেকটি লক্ষণ।
অপ্রত্যাশিত ওজন কমা: ওজন কমানোটাকে অনেকেই স্বাগত জানান। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই দ্রুত অনেকটা ওজন ঝরে জাওয়াটা মোটেই ভালো নয়। এটা বিভিন্ন ধরণের ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে।
অকারণ ক্লান্তি: ক্লান্তি সবার মাঝেই দেখা যায়। বিশেষ করে সপ্তাহের শেষের দিনটা তো সবারই কাটে ঘুমে ঘুমে। কিন্তু মাসখানেক ধরে প্রতিদিনই ক্লান্ত লাগছে, অথবা সহজেই হাঁফ ধরে যাচ্ছে, তবে ডাক্তার দেখাতেই হবে। এটা হতেপারে লিম্ফোমা বা লিউকেমিয়ার লক্ষণ।
প্রচণ্ড মাথাব্যাথা: মাইগ্রেনের সমস্যা বা তেমন মাথাব্যাথা সমস্যা নেই। কিন্তু হঠাৎ করেই প্রচণ্ড মাথাব্যাথায় ভুগছেন কিছুদিন ধরেই, তবে তা ব্রেইন টিউমারের লক্ষণ হতে পারে।