শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ছাড়াই ইঁদুরের শরীর থেকে দু’ধরনের স্টেম সেল নিয়ে গবেষণাগারেই ভ্রূণ তৈরির প্রাথমিক ধাপ সম্পন্ন করেছেন নেদারল্যান্ডসের মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকেরা। পুরোপুরি সফল না হলেও বিজ্ঞানীরা আশাবাদী, ভবিষ্যতে বন্ধ্যত্বের চিকিৎসার ক্ষেত্রে পদ্ধতিটিকে কাজে লাগানো যাবে। তারা আরো জানাচ্ছেন, আগামী তিন বছরের মধ্যেই ইঁদুরের পূর্ণাঙ্গ ভ্রূণ তৈরি করা হয়তো সম্ভব।
যদি শুক্রাণু-ডিম্বাণু ছাড়া ইঁদুরের ভ্রূণ তৈরি করা যায়, তা হলে পরীক্ষাগারে মানুষের ভ্রূণ তৈরি সম্ভব কি না- বিজ্ঞানীরা সেই সম্ভাবনা পুরোপুরি উড়িয়ে দেননি। যদিও কৃত্রিমভাবে মানুষ সৃষ্টি এবং একই মানুষের অনেকগুলো প্রতিরূপ তৈরির কথা নিয়ে নীতিগত সমস্যা দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, ইঁদুরের শরীর থেকে একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের দু’ধরনের স্টেম সেল নিয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। এই জাতীয় কোষগুলি থেকে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি সম্ভব। দেখা যায়, ওই কোষগুলি মিলিত হয়ে তৈরি করেছে ভ্রূণেরই একটি প্রাথমিক চেহারা। জীববিদ্যার ভাষায় যাকে বলে ‘ব্লাস্টোসিস্ট’। সেই ব্লাস্টোসিস্টকে স্ত্রী-ইঁদুরের গর্ভে স্থাপন করা হয়। শুক্রাণু-ডিম্বাণুর নিষেকে তৈরি সাড়ে তিন দিন বয়সী একটি স্বাভাবিক ভ্রূণ থাকলে মাতৃজঠরে যা যা পরিবর্তন ঘটার কথা, এ ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনই ঘটেছিল। তবে পুরোপুরি সফল হয়নি সেই প্রতিস্থাপন। তবু তাতেই আশার আলো দেখেছেন গবেষকেরা।
গবেষক দলের প্রধান মাস্ত্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিকোলাস রিভরন বলেছেন, ‘প্রায় সত্যিকারের ব্লাস্টোসিস্টের মতোই হচ্ছিল ব্যাপারটা। যদিও কোষগুলো খুব একটা সুবিন্যস্ত ছিল না। আশা করছি, আগামী তিন বছরে সেটা তৈরি করতে পারব। এই প্রথম গবেষণাগারে স্টেম সেল থেকে ভ্রূণ, নাড়ি সবটাই তৈরির পথে হেঁটেছিলাম আমরা।’ তবে নিকোলাস জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এই পদ্ধতি মানুষের উপরে প্রয়োগে আমার বিশ্বাস নেই। মানুষ ক্লোন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।’
ইত্তেফাক/সেতু
http://www.ittefaq.com.bd/science-and-tech/2018/05/06/156146.html