টি-টোয়েন্টি জুজুতে আক্রান্ত ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেট। ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ততম ফরম্যাট বাংলাদেশ খেলতেই পারেনা-এই বিশ্বাসটা ছড়িয়ে পড়েছিল চারিদিকে। কিন্তু দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একমাত্র টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি ৩ উইকেটে জিতে টি-টোয়েন্টির রহস্যটা কিছুটা হলেও ঘুচাতে পেরেছে মুশফিকুর রহিমের ছেলেরা।
অধিনায়ক হিসেবে মুশফিকুর রহিম আজ তাঁর অভিষেক ম্যাচ খেললেন। প্রথম ম্যাচেই সফল তিনি। মাঠেও ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন তিনি। ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়ে নিয়েই ফিরলেন। দলের পক্ষে ‘উইনিং শট’ টিও তাঁর।
বিকেলে টসে জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ। সূচনাটা ভালো করলেও হঠাৎ-ই যেন খেই হারিয়ে ফেলে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা। মারলন স্যামুয়েলস না থাকলে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোরবোর্ডের অবস্থা কি হতো- সেটা অবশ্য তর্কসাপেক্ষ। তবে স্যামুয়েলসের ৫৮ রান ওয়েস্ট ইন্ডিজকে এনে দেয় লড়াই করার মোটামুটি এক সম্বল-১৩২ রান। স্যামুয়েলস ছাড়া ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানটি আসে সিমন্সের ব্যাট থেকে-২৩। বারাথ করেন ১৫ রান।
প্রস্তুতিম্যাচ দুটিতে বাংলাদেশের মূল অস্ত্রদের গোপনই রাখা হয়েছিল। আবদুর রাজ্জাক ও সাকিব আল হাসান প্রমাণ করে দিয়েছেন, অন্যবোলারদের সামালটা প্রস্তুতিম্যাচে ভালোভাবে দিলেও রাজ্জাক ও সাকিবকে খেলার ক্ষমতা যত্সামান্যই ছিল ক্যারিবীয় ব্যাটারদের। সাকিব ও রাজ্জাক নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। পাশাপাশি শফিউল ইসলাম ২টি উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়ে তৈরি করেন বড় ধরনের ক্ষত। এছাড়াও রুবেল হোসেন ও নাঈম ইসলাম দু’জনই ১টি করে উইকেট নিয়েছেন।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৩২ রানের জবাবে বাংলাদেশ সূচনাটা করে উড়ন্ত। তবে মারকুটে তামিমের চেয়ে এক্ষেত্রে অগ্রণী ভূমিকা ছিল ইমরুল কায়েসের। তামিম ব্যক্তিগত ১১ রানে রবি রামপালের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফিরে যান। ইমরুল ফেরেন ২২ রানে। মাঝখানে সাকিব শূন্য ও অলক ২ রানে ফিরে গেলে জয়ের প্রত্যাশায় কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। কিন্তু অধিনায়ক মুশফিক একদিক আঁকড়ে ধরে দারুণ ধৈর্য্যশীল ব্যাটিং করেন। অধিনায়ককে দারুণ সঙ্গ দেন নাঈম ও নাসির। নাঈম ১০ ও নাসির ১৮ রান করে যখন সাজঘরে ফেরেন তখন বাংলাদেশের জয় ছিল সময়ের ব্যাপার। শেষপর্যন্ত মুশফিকুর রহিম সাহসী কাণ্ডারির মতোই ক্যারিবীয় বোলিংয়ের সঙ্গে লড়াই করে বাংলাদেশকে পৌঁছে দেন জয়ের বন্দরে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৩২/৮ (২০ ওভার)
স্যামুয়েলস ৫৮, সিমন্স ২৫
রাজ্জাক ২/২৭, সাকিব ২/২৫, শফিউল ২/১৯
বাংলাদেশ ১৩৫/৭ (১৯.৫ ওভার)
মুশফিকুর রহিম ৪১, আশরাফুল ২৪, ইমরুল ২২, নাসির ১৮
রবি রামপাল ২/২৮, স্যামুয়েলস ২/১৪
(বাংলাদেশ ৩ উইকেটে জয়ী)
Source :
http://www.prothom-alo.com/detail/date/2011-10-11/news/192937