আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিল
অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার বিষয়ক
আন্তর্জাতিক চুক্তি, ১৯৬৬
প্রস্তাবনা
এই চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ, জাতিসংঘ সনদের ঘোষিত নীতিমালা অনুসারে মানব পরিবারের সকল সদস্যের সহজাত মর্যাদা এবং সমান ও অবিচ্ছেদ্য অধিকারের স্বীকৃতি যে বিশ্বে স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার এবং শান্তির ভিত্তি তা বিবেচনা করে;
এই অধিকারগুলো যে মানব-ব্যক্তিত্বের সহজাত মর্যাদা থেকে উদ্ভুত তা স্বীকার করে; "মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা" অনুসারে নাগরিক ও রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং ভয় ও অভাব থেকে মুক্তি লাভের মানবিক আদর্শ অর্জন কেবল তখনই সম্ভব যদি এমন অবস্থার সৃষ্টি হয় যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারসমূহের সাথে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারও ভোগ করতে পারে এ কথা মেনে নিয়ে; জাতিসংঘ সনদের অধীন মানবাধিকার ও স্বাধিকারসমূহের প্রতি সর্বজনীন শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও সেগুলো উন্নয়নকল্পে দায়িত্বের কথা বিবেচনা করে;
প্রত্যেক ব্যক্তির যেমন অপর ব্যক্তি ও তার সমাজের প্রতি কর্তব্য রয়েছে তেমনই বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের উন্নতিবর্ধন ও পালনের জন্য কঠোর চেষ্টা করা যে প্রত্যেকেরই দায়িত্ব তা উপলব্ধি করে;
নিম্নলিখিত অনুচ্ছেদসমূহ সম্পর্কে একমত হয়েছে :
প্রথম পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ ১
১.সকল জনগোষ্ঠীর আত্ননিয়ন্ত্রণের অধিকার রয়েছে৷ সে অধিকার বলে তারা অবাধে তাদের রাজনৈতিক মর্যাদা নির্ধারণ করে এবং স্বাধীনভাবে তাদের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মপ্রয়াস অব্যাহত রাখে৷
২. সকল জনগোষ্ঠী, পারস্পরিক সুবিধার নীতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও আন্তর্জাতিক আইন থেকে উদ্ভুত দায়িত্বসমূহ ক্ষুন্ন না করে, নিজেদের স্বার্থে তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও সংস্থান স্বাধীনভাবে ব্যবহার করবে৷ কোনক্রমেই কোন জনগোষ্ঠীকে তাদের জীবিকার উপায় থেকে বঞ্চিত করা যাবে না৷
৩. অ-স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল এবং অছিভুক্ত অঞ্চল প্রশাসনের দায়িত্ব যেসব রাষ্ট্রের ওপর ন্যস্ত রয়েছে সেসব রাষ্ট্রসহ, বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো আত্ননিয়ন্ত্রণের অধিকার বাস্তবায়নের উন্নতিবর্ধন করবে এবং জাতিসংঘ সনদ অনুসারে ঐ অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাবে৷
দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ ২
১.বর্তমান চুক্তির প্রত্যেক পক্ষ এককভাবে এবং আন্তর্জাতিক সাহাজ্য সহযোগিতা বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও কারিগরি সাহায্য ও সহযোগিতার মাধ্যমে লভ্য সম্পদ সর্বাধিক ব্যবহার করে সকল প্রকার উপযুক্ত উপায়ে এবং বিশেষভাবে আইন প্রণয়ণের মাধ্যমে, বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অধিকারসমূহের পূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷
২. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এরকম অংগীকার করে যে, জাত, ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, নারী-পুরুষ, রাজনৈতিক বা অন্য মতামত, জাতীয় বা সামাজিক উত্পত্তি, জণ্ম অথবা অন্য কোন মর্যাদার ভিত্তিতে কোনরূপ বৈষম্য না করে চুক্তিতে বর্ণিত অধিকারসমূহ ভোগের নিশ্চয়তা দান করবে৷
৩. উন্নয়নশীল দেশসমূহ মানবাধিকার এবং নিজেদের জাতীয় অর্থনীতির কথা যথাযথ বিবেচনা করে বর্তমান চুক্তিতে স্বীকৃত অর্থনৈতিক অধিকারগুলোর কতটুকু বিদেশী নাগরিকদের ক্ষেত্রে নিশ্চয়তা দিবে তা নির্ধারণ করতে পারবে৷
অনুচ্ছেদ ৩
বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ চুক্তিতে উল্লিখিত সকল অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে৷
অনুচ্ছেদ ৪
বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যে, চুক্তি অনযায়ী রাষ্টৃ কর্তৃক প্রদত্ত অধিকারসমূহ উপভোগের ক্ষেত্রে আইনের দ্বারা এরূপ অধিকারগুলোর ওপর এমন বাধানিষেধ আরোপ করতে পারে যা এসব অধিকারের বৈশিষ্ট্যের সাথে সংগতিপূর্ণ এবং যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে কেবল সাধারণ কল্যাণ বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন৷
অনুচ্ছেদ ৫
১. এই চুক্তির কোন কিছুরই এমন ব্যাখ্যা প্রদান করা যাবে না যার অর্থ এই দাঁড়ায় যে, এতে স্বীকৃত অধিকার অথবা স্বাধিকারগুলোর বিকাশ সাধনের উদ্দেশ্যে অথবা বর্তমান চুক্তিতে যেরূপ বাধানিষেধের বিধান রয়েছে তা অপেক্ষা অধিক বাধা নিষেধ আরোপ করার উদ্দেশ্যে কোন কাজে প্রবৃত্ত হওয়ার অথবা কোন কাজ সম্পাদন করার অধিকার কোন রাষ্ট্রগোষ্ঠী অথবা ব্যক্তির রয়েছে৷
২. কোন দেশের আইন, প্রথা, নিয়ম-কানুন, অথবা রীতিনীতি অনুসারে স্বীকৃত অথবা প্রচলিত মৌলিক মানবাধিকারগুলোর ওপর এ অজুহাতে বাধানিষেধ আরোপ করা কিংবা সেগুলো হ্রাস করা যাবে না যে, চুক্তি অনুরূপ অধিকার স্বীকার করে না অথবা অপেক্ষাকৃত গৌণরূপে স্বীকার করে৷
তৃতীয় পরিচ্ছেদ
অনুচ্ছেদ ৬
১. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো কর্মের অধিকার স্বীকার করে৷ এই স্বীকৃতির অন্তর্ভুক্ত থাকবে স্বাধীনভাবে প্রত্যেকের কাজ পছন্দ বা গ্রহণ করার অধিকার যার মাধ্যমে সে তার জীবিকা অর্জনের সুযোগ লাভ করতে পারে৷ রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই অধিকার রক্ষণের জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
২ এই অধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়ণের উদ্দেশ্যে বর্তমান চুক্তির রাষ্টপক্ষগুলো যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে তার মধ্যে থাকবে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক দিকনির্দেশনা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক উন্নয়ন সুষম ও নিয়মিতভাবে অর্জনের জন্য নীতি, কৌশল ও কর্মসূচি; এবং ব্যক্তির মৌলিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সংরক্ষণকারী শর্তের অধীনে পূর্ণ ও উত্পাদনশীল কর্মসংস্থান৷
অনুচ্ছেদ ৭
বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেক ব্যক্তির ন্যায়সংগত ও সুবিধাজনক কর্মের শর্ত উপভোগের অধিকার স্বীকার করে; অনুরূপ শর্তাদি বিশেষভাবে নিম্নোক্ত বিষয়সমূহ নিশ্চিত করবে:
(ক) সকল শ্রমিকের জন্য পারিশ্রমিকের এমন ব্যবস্থা যার মধ্যে কমপক্ষে থাকবে-
(i) ন্যায্য মজুরি এবং কোনরূপ তারতম্য না করে সমান মানের কাজের জন্য সমান পারিশ্রমিক; বিশেষ করে নারীদেরকে সমান কাজের জন্য সমান বেতনসহ পুরুষদের অপেক্ষা নিকৃষ্ট নয় এমন কর্মের শর্তাবলি সম্পর্কে নিশ্চয়তা দান;
(ii) বতর্মান চুক্তির বিধানাবলি অনুসারে শ্রমিকদের এবং তাদের পরিবারের জন্য সন্তোষজনক জীবিকার সংস্থান ;
(খ) নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর কর্মপরিবেশ;
(গ) কেবল জ্যেষ্ঠ্যতা ও যোগ্যতার শর্ত সাপেক্ষে প্রত্যেক ব্যক্তির চাকুরিক্ষেত্রে যথোপযুক্ত উচ্চতর পদে পদোন্নতি লাভের
সমান সুযোগ;
(ঘ) বিশ্রাম,অবকাশও যুক্তিসংগত কর্মসময় এবং নির্দিষ্ট সময়ান্তরে বেতনসহ ছুটি ও সরকারি দিনসমূহের জন্য পারিশ্রমিকের ব্যবস্থা৷
অনুচ্ছেদ ৮
১. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ নিম্নোক্তগুলো নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি প্রদান করে :
(ক) প্রত্যেক ব্যক্তির তার অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্বার্থের উন্নতি সাধন ও সংরক্ষণের জন্য কেবল সংশ্লিষ্ট সংগঠনের নিয়ম-কানুন সাপেক্ষে,শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন ও নিজের পছন্দমত শ্রমিক ইউনিয়নে যোগদানের অধিকার; এই অধিকার প্রয়োগের ক্ষেত্রে, একটি গণতান্ত্রিক সমাজে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা, অথবা অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতা রক্ষার স্বার্থে যেরূপ বাধানিষেধ আবশ্যক এবং যেগুলো আইনের দ্বারা নির্ধারিত হবে সেসব ব্যতীত অন্য কোন বাধানিষেধ আরোপ করা যাবে না৷
(খ) শ্রমিক ইউনিয়নগুলো জাতীয় ফেডারেশন অথবা কনফেডারেশন গঠন করার অধিকার বা শেষোক্তটির আন্তর্জাতিক শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন করার অধিকার এবং এতে যোগদানের অধিকার ;
(গ) একটি গণতান্ত্রিক সমাজে জাতীয় নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা অথবা অন্যের অধিকার ও স্বাধীনতা সংরক্ষণের স্বার্থে যেরুপ প্রয়োজন এবং যা আইনের দ্বারা নির্ধারিত কেবল সেরূপ বাধানিষেধ সাপেক্ষে শ্রমিক ইউনিয়নসমূহের অবাধে কাজ করার অধিকার ;
(ঘ) ধর্মঘট করার অধিকার অর্জন তবে শর্ত থাকে যে, সংশ্লিষ্ট দেশের আইনের সংগে সংগতি রেখে এ অধিকার প্রয়োগ করতে হবে৷
২. সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ বাহিনী অথবা প্রশাসনিক সদস্যদের ক্ষেত্রে এসব অধিকার প্রয়োগের ওপর আইনসংগত বিধিনিষেধ আরোপ করতে এই ধারা নিবৃত করে না;
৩. এই ধারার কোন কিছুই সংগঠনের স্বাধীনতা এবং সংঘবদ্ধ হওয়ার অধিকার সংরক্ষণ সম্পর্কিত ১৯৪৮ সালের আর্ন্তজাতিক শ্রমসংস্থা কনভেনশন-এর রাষ্ট্রপক্ষগুলোকে আইন প্রণয়ন অথবা কোন আইনকে এমনভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতা প্রদান করে না যার ফলে উক্ত কনভেনশন কর্তৃক প্রদত্ত নিশ্চয়তাসমূহ ক্ষুণ্ন হতে পারে৷
অনুচ্ছেদ ৯
বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য সামাজিক বীমাসহ সামাজিক নিরাপত্তার অধিকার স্বীকার করে৷
অনুচ্ছেদ ১০
বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যেঃ
১. পরিবার সমাজের স্বাভাবিক ও মৌল গোষ্ঠী-একক৷৷এই প্রতিষ্ঠানকে যথাসম্ভব ব্যাপক সংরক্ষণ ও সহায়তা প্রদান করা উচিত, বিশেষ করে এর সংস্থাপনের জন্য এবং নির্ভরশীল সন্তানদের লালন ও শিক্ষাদানের দায়িত্ব পালনকালে অনুরূপ সাহায্য দানের প্রয়োজন রয়েছে৷ ভাবী দম্পত্তির অবাধ সম্মতির ভিত্তিতেই বিবাহ বন্ধন স্থাপন করতে হবে৷
২. শিশুর জণ্মদানের পূর্বে এবং পরে একটি যুক্তিসংগত নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত মাতাদেরকে বিশেষ সংরক্ষণ প্রদান করা উচিত৷ এ সময় চাকুরিতে নিযুক্ত মাতাদের বেতনসহ ছুটি অথবা পর্যাপ্ত সামাজিক নিরাপত্তার সুবিধাসহ ছুটি দেওয়া উচিত৷
৩. পিতৃত্ব বা মাতৃত্ব বা অন্য কোন অবস্থার কারণে কোনরূপ বৈষম্য ছাড়া সকল শিশু ও তরুনদের পক্ষ থেকে তাদের সুরক্ষা ও সহায়তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত৷ অর্থনৈতিক ও সামাজিক শোষণ থেকে শিশু ও তরুণদের রক্ষা করতে হবে৷ তাদের নৈতিকতা ও স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর বা জীবনের পক্ষে বিপদজনক অথবা তাদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত করতে পারে এমন কোন কাজে তাদেরকে নিয়োগ করা আইনতঃ দন্ডনীয় হওয়া উচিত৷ রাষ্ট্রের এমন বয়ঃসীমা স্থির করা উচিত যে ঐ সীমার নিম্নবয়স্ক শিশুদের মজুরীযুক্ত কোন কাজে আইনতঃ নিষিদ্ধ ও দন্ডনীয় হবে৷
অনুচ্ছেদ ১১
১. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ স্বীকার করে যে প্রত্যেক ব্যক্তির নিজের এবং নিজ পরিবারের জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানসহ জীবনযাত্রার পর্যাপ্ত মান অর্জন এবং জীবনযাত্রা নিরবিচ্ছিন্নভাবে উন্নত করার অধিকার রয়েছে৷ রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই উদ্দেশ্যে অবাধ সম্মতির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার অপরিহার্য গুরুত্ব স্বীকারপূর্বক এই অধিকার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার জন্য যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷
২. প্রত্যেকের ক্ষুধামুক্ত থাকার মৌলিক অধিকারকে স্বীকৃতি দিয়ে বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এককভাবে এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে নির্দিষ্ট কর্মসূচিসহএমন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে যেগুলো নিম্নলিখিত উদ্দেশ্যে প্রয়োজন :
(ক) কারিগরি ও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের পূর্ণ ব্যবহারের মাধ্যমে পুষ্টিনীতি সম্পর্কিত জ্ঞানের বিস্তারের দ্বারা এবং যাতে প্রাকৃতিক সম্পদসমূহের সর্বাধিক উন্নয়ন ও ব্যবহার অর্জন করা যায় তেমনভাবে কৃষি-ভূমি ব্যবস্থার উন্নয়ন অথবা সংস্কার সাধনের দ্বারা খাদ্যসামগ্রী উত্পাদন, সংরক্ষণ ও বন্টন পদ্ধতির উত্কর্ষ সাধন করা ;
(খ) খাদ্য আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক দেশ উভয়েরই সমস্যাদি বিবেচনা করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্বে সুষ্ঠু খাদ্য সরবরাহের নিশ্চিত করা৷
অনুচ্ছেদ ১২
১. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ প্রত্যেকেরেই মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য অর্জনের সর্বোচ্চ মান ভোগ করার অধিকার স্বীকার করে৷
২. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষসমূহ এই অধিকার বাস্তবায়নের জন্য যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে নিম্নলিখিতগুলো সেসবের অন্তর্ভুক্ত থাকবে :
(ক) মৃত অবস্থায় জণ্ম এবং শিশু অবস্থায় মৃত্যুর হার কমানোর এবং শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ ;
(খ) পরিবেশ ও শিল্প সম্পর্কিত স্বাস্থ্যবিধির সকল দিকের উন্নতি সাধন;
(গ) সংক্রামক, এলাকা ভিত্তিক ও পেশাগত এবং অন্যান্য রোগের প্রতিরোধ, চিকিত্সা ও নিয়ন্ত্রণ;
(ঘ) অসুস্থতার ক্ষেত্রে সর্বরকম চিকিত্সা সেবা ও যন্ত্রের নিশ্চয়তা বিধান করে এমন অবস্থার সৃষ্টি৷
অনুচ্ছেদ ১৩
১. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো প্রত্যেক ব্যক্তির শিক্ষার অধিকার স্বীকার করে৷ তারা একমত যে মানব-ব্যক্তিত্ব এবং শিক্ষা, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান ও মৌলিক স্বাধীনতাকে জোরদার করবে৷ তারা ঐকমত্য পোষণ করে যে, মুক্ত সমাজে কার্যকর অংশগ্রহণ, অন্যের অনুভূতির প্রতি সহমর্মিতা বৃদ্ধি, জাতি-ধর্ম-র্ব-গোত্র নির্বিশেষে সবার মধ্যে সহনশীলতা ও প্রীতির সম্পর্ক তৈরী এবং শান্তি সুরক্ষায় জাতিসংঘের কাজে অংশ গ্রহণের জন্য শিক্ষা সকল ব্যাক্তিকে সমর্থ করে তুলবে৷
২. বর্তমান চুক্তির রাষ্ট্রপক্ষগুলো স্বীকার করে যে,এই অধিকারের পূর্ণ বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে:
(ক) প্রাথমিক শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক এবং সকলের জন্য বিনা খরচে লভ্য করতে হবে;
(খ) কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাসহ যে-কোন ধরণের মাধ্যমিক শিক্ষা যথার্থ পন্থায় বিশেষভাবে অবৈতনিক শিক্ষাক্রম বর্ধিষ্ঞুহারে প্রবর্তেনর মাধ্যমে সবার জন্য সাধারণভাবে সহজলভ্য ও অর্জনযোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা থাকবে;
(গ) সকল প্রকার উপায়ে এবং বিশেষভাবে ক্রমান্বয়ে অবৈতনিক শিক্ষা প্রবর্তনের মাধ্যম উচ্চশিক্ষাকে সামর্থ্যের ভিত্তিতে সকলের নিকট সমভাবে সুগম করতে হবে;
(ঘ) যারা প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ করেনি বা সমাপ্ত করেনি তাদের জন্য মৌলিক শিক্ষাকে যতদূর সম্ভব উত্সাহিত ও জোরদার করতে হবে;
(ঙ) সর্বস্তরে বিদ্যালয় ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য সক্রিয়ভাবে চেষ্টা করতে