Faculty of Humanities and Social Science > Law
শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি
Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৪৬। আশ্রয়স্থল ইত্যাদি :
(১) সাধারণত এক শতাধিক শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছে, এইরূপ প্রতিটি কারখানায় শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য একটি উপযুক্ত আশ্রয় বা বিশ্রাম কক্ষ এবং খাবার পানির ব্যবস্থাসহ একটি ভোজন কক্ষ থাকিতে হইবে, যাহাতে শ্রমিকগণ তাহাদের সঙ্গে অানীত খাবার সেখানে বসিয়া খাইতে পারে।
তবে শর্ত এই যে, ভোজন কক্ষের ব্যবস্থা করা হইলে কোনো শ্রমিক আর কাজের ঘরের মধ্যে বসিয়া খাইবে না।
(২) উপধারা (১) অনুসারে প্রতিষ্ঠিত আশ্রয়, বিশ্রাম কক্ষ বা ভোজন কক্ষ পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা সম্বলিত হইতে হইবে এবং উহাকে ঠাণ্ডা ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন অবস্থায় রাখিতে হইবে।
(৩) সরকার-
(ক) এই ধারা অনুসারে আশ্রয়, বিশ্রাম ও ভোজন কক্ষের নির্মাণ, স্থান সংকুলান, আসবাবপত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জামের মান নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন;
(খ) নির্দিষ্ট কার্য সমাধা করার জন্য যাহাদিগকে খোলা জায়গায় কাজ করিতে হয়, তাহাদের জন্য নির্মিত আশ্রয় কক্ষের ধরন নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন;
(গ) গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কোনো কারখানা বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানাকে এই ধারার বিধান পালন বিষয় হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।
ধারা-৪৭। শিশুদের জন্য কক্ষ :
(১) সাধারণত পঞ্চাশ জনের বেশি মহিলা শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছে, এইরূপ প্রতিটি কারখানায় সংশ্লিষ্ট মহিলা শ্রমিকদের অনধিক ছয় বত্সর বয়স্ক সন্তানদের ব্যবহারের জন্য যথোপযুক্ত শিশু কক্ষ বা কক্ষসমূহ থাকিতে হইবে।
(২) অনুরূপ কক্ষসমূহে থাকার পর্যাপ্ত স্থান এবং পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে এবং উহা স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করিয়া রাখিতে হইবে এবং উহা শিশু পালন সম্পর্কে অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মহিলাদের তত্ত্বাবধানে রাখিতে হইবে।
(৩) সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন-
(ক) এই ধারা অনুসারে যেইসব কক্ষের ব্যবস্থা রাখিতে হইবে, উহার নির্মাণ, স্থান সংকুলান, আসবাবপত্র ও অন্যান্য সরঞ্জামের মান এবং অবস্থান নির্ধারণ করিয়া;
(খ) এই ধারার আওতাভুক্ত কারখানায় নিযুক্ত মহিলা শ্রমিকদের সন্তান-সন্ততিদের পোশাক পরিবর্তন ও ধৌতকরণের সুবিধাসহ তাহাদের জন্য অতিরিক্ত সুবিধা সংক্রান্ত ব্যবস্থার নির্দেশ;
(গ) অনুরূপ শিশুদের জন্য কারখানায় বিনামূল্যে দুগ্ধ বা অন্য কোনো খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা;
(ঘ) মহিলা শ্রমিকগণকে নির্দিষ্ট বিরতিসহ তাহাদের শিশুদিগকে খাওয়াইবার সুবিধা দান।
ধারা-৪৮। ওয়েলফেয়ার অফিসার :
(১) পাঁচশত বা ততোধিক সংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছে, এইরূপ প্রতিটি কারখানায় মালিক নির্দিষ্ট সংখ্যক ওয়েলফেয়ার অফিসার নিয়োগ করিবেন।
(২) সরকার উপধারা (১) অনুসারে নিযুক্ত অফিসারদের দায়িত্ব, যোগ্যতা এবং চাকরির শর্ত নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।
ধারা-৪ঌ। এই অধ্যায়ের পরিপূরক বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা :
সরকার নিম্নলিখিত বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারেন-
(ক) শ্রমিক কল্যাণের বিকল্প ব্যবস্থা প্রয়োগ সাপেক্ষে কোনো কারখানাকে এই অধ্যায়ের কোনো বিধান পালন হইতে রেহাই দান; এবং
(খ) কোনো কারখানায় শ্রম কল্যাণ সংক্রান্ত ব্যবস্থাপনায় শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ দান।
ষষ্ঠ অধ্যায়
প্রাপ্তবয়স্কদের কাজের ঘন্টা
ধারা-৫০। সাপ্তাহিক ঘন্টা :
(১) কোনো কারখানায় কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি কাজ করিতে বলা যাইবে না বা কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
(২) ৫৮ ধারায় বর্ণিত বিধান সাপেক্ষে একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক দিনে ৯ ঘন্টার বেশি বা সপ্তাহে ৪৮ ঘন্টার বেশি কাজ করিতে পারিবেন।
তবে শর্ত এই যে, প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকের কাজের মোট ঘন্টার পরিমাণ সপ্তাহে ৬০ ঘন্টার বেশি হইবে না বা এক বছরে প্রতি সপ্তাহের গড় ৫৬ ঘন্টার বেশী হইবে না।
Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৫১। সাপ্তাহিক ছুটি :
(১) কোনো কারখানায় কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে অবস্থানুসারে রবিবার বা শুক্রবার কাজ করিতে বলা হইবে না বা দেওয়া যাইবে না, যদি না-
(ক) অবস্থানুসারে শুক্রবার বা রবিবারের পূর্ববর্তী তিন দিনের কোনো একদিন সে ছুটি ভোগ করিয়া থাকে বা ছুটি ভোগ করে; এবং
(খ) কারখানার ম্যানেজার উক্ত রবিবার বা শুক্রবারের পূর্বে অথবা, বিকল্প ছুটির দিনের পূর্বে, যেইটা আগে হইবে,-
(i) রবিবার বা শুক্রবার উক্ত শ্রমিককে কাজ করাইবার প্রয়োজনীয়তা এবং উহার পরিবর্তে কোন দিন তাহাকে ছুটি দেওয়া হইতেছে, তাহা উল্লেখপূর্বক ইন্সপেক্টরের নিকট নোটিশ পাঠাইয়া থাকেন; এবং
(ii) উপরোক্ত মর্মে একটি নোটিশ কারখানায় লটকাইয়া রাখেন।
তবে শর্ত এই যে, বিকল্প ছুটির দিন যেন এমনভাবে নির্ধারণ করা না হয়, যাহাতে একজন শ্রমিককে পূর্ণ একদিনের ছুটি ভোগ ছাড়াই একটানা দশ দিনের বেশি কাজ করিতে হয়।
(২) ইন্সপেক্টরের নিকট নোটিশ প্রেরণের দ্বারা উপধারা (১) অনুসারে প্রদত্ত নোটিশ এবং আলোচ্য শুক্রবার বা রবিবার, অথবা উহার বিকল্প ছুটির দিনের অনূর্ধ্ব একদিন পূর্বে কারখানায় লটকানো নোটিশ বাতিল করা যাইতে পারে।
(৩) উপধারা (১) অনুসারে কোনো শ্রমিক কোনো রবিবার বা শুক্রবার কাজ করিয়া উহার পূর্ববর্তী তিন দিনের কোনো একদিন ছুটি ভোগ করিয়া থাকিলে তাহার সাপ্তাহিক কাজের ঘন্টা হিসাব করার সময় উক্ত রবিবার বা শুক্রবারকে পূর্ববর্তী সপ্তাহের অন্তর্ভুক্ত বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।
(৪) ৭নং বিধি অনুসারে যেইসব প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শ্রমিক শুধু বয়লার বা প্রধান চালিকা যন্ত্রের কাজে নিযুক্ত রহিয়াছে, তাহাদের বেলায় এই ধারার বিধানসমূহ নিম্নোক্ত শর্তাধীনে প্রযোজ্য হইবে না-
(ক) কারখানার ম্যানেজার কাজের প্রকৃতি অনুসারে অনুরূপ সমস্ত শ্রমিককে বিভিন্ন গ্রুপে শ্রেণীভুক্ত করিবেন;
(খ) উপরোক্তরূপে বিভিন্ন গ্রুপে শ্রেণীভুক্ত শ্রমিকদের তালিকা ১০ঌ ধারার উপধারা (২) মোতাবেক কারখানায় লটকাইয়া রাখিতে হইবে;
(গ) অনুরূপ শ্রমিকদের হাজিরা খাতা ১নং ফরমে রক্ষিত হইবে এবং উহাতে প্রতিটি শ্রমিকের কাজ শুরু হওয়ার সময় উল্লেখপূর্বক যখন কাজ শেষ হইবে, তখনই কাজ শেষ করিবার সময় টুকিয়া রাখিতে হইবে; এবং
(ঘ) পূর্ণ একদিনের অবকাশ ভোগের সুযোগ না দিয়া অনুরূপ শ্রমিককে একটানা ১৪ দিনের বেশি কাজ করানো যাইবে না।
ধারা-৫২। ক্ষতিপূরণমূলক সাপ্তাহিক ছুটি :
(১) এই আইন অনুসারে কোনো বিধিমালা প্রণয়নের দ্বারা কোনো কারখানাকে বা উহার শ্রমিকগণকে ৫১ ধারার আওতা হইতে রেহাই দানের ফলে কোনো শ্রমিক উক্ত ধারার উপধারা (১) মোতাবেক প্রাপ্য সাপ্তাহিক ছুটি হইতে বঞ্চিত হইলে যথাশীঘ্র সম্ভব তাহাকে বঞ্চিত ছুটির সমসংখ্যক ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।
(২) সরকার উপধারা (১) মোতাবেক ক্ষতিপূরণমূলক ছুটির পদ্ধতি নির্ধারণ করিয়া বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
তবে শর্ত এই যে, সংশ্লিষ্ট কারখানা মৌসুমী ধরনের হইলে চলতি মওসুম শেষ হওয়ার পূর্বেই শ্রমিককে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে।
(৩) অবস্থানুসারে যাহা সুবিধাজনক হয়, সেই ভাবে সকল শ্রমিককে একযোগে, অথবা পর্যায়ক্রমে ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি মঞ্জুর করা যাইতে পারে।
(৪) পূর্ববর্তী উপবিধিসমূহে যাহাই বিহিত থাকুক না কেন, কোনো মওসুমী কারখানায় অব্যাহত উত্পাদনী ব্যবস্থা চালু থাকিলে চীফ ইন্সপেক্টরের অনুমোদন সাপেক্ষে একজন শ্রমিককে চলতি মওসুম সমাপ্ত হওয়ার অব্যবহিত পনেরো দিনের মধ্যে উপধারা (১) অনুসারে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি মঞ্জুর করিতে হইবে, এবং ঐ মওসুমে কর্মচ্যুত হওয়ার পূর্বেই তাহাকে ক্ষতিপূরণমূক ছুটি বাবদ পাওনা বেতন পরিশোধ করিতে হইবে।
ধারা-৫৩। দৈনিক ঘন্টা :
কোনো কারখানায় কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে দৈনিক নয় ঘন্টার বেশি কাজ করিতে বলা বা করিতে দেওয়া যাইবে না।
তবে শর্ত এই যে, ৫০, ৫৪, ৫৫ এবং ৫৮ ধারার বিধান সাপেক্ষে কোনো কারখানায় একজন প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক দৈনিক নয় ঘন্টার বেশি কাজ করিতে পারে, কিন্তু দশ ঘন্টার অতিরিক্ত পারিবে না।
ধারা-৫৪। বিশ্রাম বা অাহারের জন্য বিরতি:
নিম্নবর্ণিত অবস্থায় কোনো কারখানার কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক কাজ করিতে বাধ্য নন-
(ক) বিশ্রাম বা আহারের জন্য কোনো একদিনে অন্তত এক ঘন্টা মঞ্জুর করা না হইলে সেইদিন ছয়ঘন্টার অতিরিক্ত;
(খ) বিশ্রাম বা আহারের জন্য কোনো একদিনে অন্তত আধা ঘন্টা বিরতি মঞ্জুর করা না হইলে সেইদিনে পাঁচঘন্টার অতিরিক্ত;
(গ) বিশ্রাম বা আহারের জন্য (ক) অনুচ্ছেদ মোতাবেক অনুরূপ দুইটি বিরতি মঞ্জুর করা না হইলে সেইদিনে সাড়ে অাটঘন্টার অতিরিক্ত।
Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৫৫। কাজের সময়ের ব্যাপ্তি :
চীফ ইন্সপেক্টরের অনুমতি ব্যতীত এবং তত্কর্তৃক সাধারণভাবে, অথবা কোনো বিশেষ কারখানার জন্য নির্দেশিত শর্ত সাপেক্ষ ছাড়া কোনো কারখানায় একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকের কাজের সময় এমনভাবে নির্ধারিত হইতে হইবে, যাহাতে উহা ৫৪ ধারা অনুসারে বিশ্রাম ও আহারের জন্য বিরতিসহ একদিনে সাড়ে দশ ঘন্টার অতিরিক্ত না হয় এবং কারখানাটি মওসুমী ধরনের বলিয়া ঘোষিত হইয়া থাকিলে, সেইক্ষেত্রে একদিনে সাড়ে এগারো ঘন্টার অতিরিক্ত না হয়।
ধারা-৫৬। নৈশ শিফ্ট :
কোনো কারখানায় একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিক যদি এমন কোনো শিফ্টে কাজ করে, যাহাতে মধ্যরাত্রি অতিক্রান্ত হয়, তাহা হইলে-
(ক) ৫১ ধারার উদ্দেশ্যে পুরো একদিনের ছুটির অর্থ হইবে তাহার শিফ্ট শেষ হওয়ার সময় হইতে একাধিক্রমে চব্বিশ ঘন্টা; এবং
(খ) পরবর্তী দিনটি তাহার শিফ্ট শেষ হওয়ার সময় হইতে তাহার জন্য চব্বিশ ঘন্টা বলিয়া গণ্য হইবে এবং মধ্যরাত্রির পর যত ঘন্টা সে কাজ করিয়াছে, তাহা পূর্ববর্তী দিনের অন্তর্ভুক্ত বলিয়া ধরিতে হইবে।
ধারা-৫৭। শিফ্টের প্রাবরণ নিষিদ্ধকরণ :
(১) কোনো কারখানায় শ্রমিকদের কাজের শিফ্ট এমনভাবে নির্ধারণ করা যাইবে না, যাহাতে একাধিক শিফ্টের শ্রমিক একই সময় একই ধরনের কাজের নিযুক্ত হয়।
(২) সরকার ইচ্ছা করিলে বিধিমালা প্রণয়ন করিয়া প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ সাপেক্ষে যে কোনো কারখানাকে বা যে কোনো শ্রেণীভুক্ত কারখানাকে উপধারা (১)-এর প্রয়োগ হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।
ধারা-৫৮। অতিরিক্ত সময় কাজের জন্য অতিরিক্ত ভাতা :
(১) কোনো কারখানায় কোনো শ্রমিক একদিনে নয় ঘন্টার বেশি বা সপ্তাহে আটচল্লিশ ঘন্টার বেশি কাজ করিলে, সাধারণত যেই হারে সে বেতন পাইয়া থাকে, তাহার দ্বিগুণ হারে অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য ভাতা পাইবে।
তবে শর্ত এই যে, এই ধারা অনুসারে অতিরিক্ত সময় কাজ করা বাবদ পাওনা হিসাব করার সময় বোনাস বা বোনাসের পরিবর্তে অন্য কিছু অতিরিক্ত পাইয়া থাকিলে, তাহা হিসাবের অন্তর্ভুক্ত হইবে না।
(২) যেই সকল কারখানায় ঠিকা হিসাবে শ্রমিকদের মজুরী দেওয়া হয়, সেই সব ক্ষেত্রে মালিক পক্ষ ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিদের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে এই ধারার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সরকার ঐসব শ্রমিকের গড় আয়ের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া তাহাদের দৈনিক মজুরীর হার নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন এবং উক্ত উপায়ে নির্ধারিত হার ঐসব শ্রমিকের মজুরীর সাধারণ হার বলিয়া গণ্য হইবে।
(৩) এই ধারার উদ্দেশ্য সাধনের জন্য প্রতি কারখানায় যে রেজিস্টার রাখিতে হইবে, তাহার ধরন সরকার নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।
ধারা-৫৯। দ্বৈত চাকরির উপর বাধা নিষেধ :
কোনো প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিক নির্ধারিত শর্তাধীনে চীফ ইন্সপেক্টরের নিকট হইতে লিখিত অনুমতি না লইয়া একই দিনে দুইটি কারখানায় কাজ করিতে পারিবে না বা কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
ধারা-৬০। প্রাপ্তবয়স্কদের কাজের মেয়াদের নোটিস ও উহার প্রস্তুতি :
(১) প্রত্যেক কারখানায় ১০ঌ ধারার উপধারা (২) অনুসারে প্রত্যেক প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিককে কত সময় কাজ করিতে হইবে, তাহা ষ্পষ্ট করিয়া উল্লেখপূর্বক লিখিত নোটিশ টাঙ্গাইয়া রাখিতে হইবে।
(২) নোটিশে শ্রমিকের কাজের যে সময় উল্লেখ থাকিবে, তাহা পূর্বেই নির্দিষ্ট করিয়া দিতে হইবে এবং উহা এমন হইতে হইবে, যাহাতে কাজের সময় কোনো শ্রমিক ৫০, ৫১, ৫৩, ৫৪ এবং ৫৫ ধারার কোনো বিধান লংঘন করিয়া কাজ না করে।
(৩) যেখানে সমস্ত প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকের একই সময় কাজ করিতে হয়, সেই ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজার উক্ত কাজের সময় নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন।
(৪) কোনোখানে সমস্ত প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকের একই সময় কাজ করার প্রয়োজন না হইলে উক্ত কারখানার ম্যানেজার কাজের প্রকৃতি অনুসারে তাহাদিগকে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত করিয়া প্রতি গ্রুপের শ্রমিকের সংখ্যা উল্লেখ করিবেন।
(৫) শিফ্ট পদ্ধতিতে কাজ করা প্রয়োজন না হইলে কারখানার ম্যানেজার প্রত্যেক গ্রুপের কাজের সময় নির্ধারণ করিয়া দিবেন।
(৬) কোনোখানে কোনো গ্রুপের শিফ্ট পদ্ধতিতে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে এবং উহা পূর্বনির্ধারিত পবির্তনশীল শিফ্ট ব্যবস্থার নিয়মের অধীন না হইলে, কারখানার ম্যানেজার প্রতি গ্রুপের কাজের শিফ্ট নির্ধারণ করিয়া দিবেন।
(৭) কোনোখানে কোনো গ্রুপের শিফ্ট পদ্ধতিতে কাজ করার প্রয়োজনীয়ত দেখা দিলে এবং উহা পূর্বনির্ধারিত পরিবর্তনশীল শিফ্ট ব্যবস্থার নিয়ম অনুসারে হইলে, কারখানার ম্যানেজার শিফ্ট পরিবর্তনের পদ্ধতি উল্লেখসহ সমস্ত শিফটের পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা প্রস্তুত করিয়া দিবেন।
(৮) এই আইন বলবত হওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে নোটিশের দুইটি কপি ইন্সপেক্টরের নিকট পাঠাইতে হইবে, অথবা এই আইন বলবত হওয়ার পরে কোনো কারখানা প্রতিষ্ঠিত হইয়া থাকিলে কাজ শুরু হওয়ার একদিন পূর্বে উহা অনুমোদনে জন্য ইন্সপেক্টরের নিকট পাঠাইতে হইবে।
কোনোরূপ রদবদলের প্রয়োজন হইলে তাহার উল্লেখসহ ইন্সপেক্টর নোটিস প্রাপ্তির পর এক সপ্তাহের মধ্যে উহার একটি কপি ম্যানেজারের নিকট ফেরত পাঠাইবেন; এবং ইন্সপেক্টর কোনরূপ রদবদল করিয়া থাকিলে ম্যানেজার তাহা সাথে সাথে পালন করিবেন এবং ইন্সপেক্টরের অনুমোদন কারখানার রেকর্ডে সংরক্ষিত করিবেন।
(৯) কোনো কারখানায় কাজের ব্যবস্থার প্রস্তাবিত পরিবর্তনের ফলে নোটিশের বিষয়বস্তু পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে, উহা দুই কপি বিজ্ঞপ্তি আকারে পূর্বাহ্নে ইন্সপেক্টরকে জ্ঞাত করিতে হইবে এবং ইন্সপেক্টরের পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে কোনো পরিবর্তন কার্যকর করা যাইবে না।
(১০) উহা কি আকারে ও পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করিতে হইবে, তাহা নির্ধারণ করিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৬১। প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকদের রেজিস্টার এবং টিকেট ও কার্ড সরবরাহ :
(১) প্রত্যেক কারখানার ম্যানেজার প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকদের রেজিস্টার সংরক্ষণ করিবেন এবং ইন্সপেক্টরের পরিদর্শনের জন্য কাজ চলার সময় উহা সর্বক্ষণ মওজুদ রাখিত হইবে এবং উহাতে প্রদর্শিত হইবে -
(ক) কারখানায় নিযুক্ত প্রতিটি প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকের নাম;
(খ) তাহার কাজের প্রকৃতি;
(গ) গ্রুপ থাকিলে কে কোন গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত;
(ঘ) কোন গ্রুপ শিফটে কাজ করিলে উহা কোন্ সময়ের শিফ্ট; এবং
(ঙ) নির্ধারিত অন্যান্য তথ্যাবলী।
তবে শর্ত এই যে, ইন্সপেক্টর যদি অভিমত পোষণ করেন যে, কোনো কারখানায় সমস্ত বা আংশিক শ্রমিকদের জন্য ব্যবহৃত মাস্টার রোল বা রেজিস্টার অত্র ধারার চাহিদা পূরণ করিয়াছে, তাহা হইলে তিনি এই মর্মে লিখিত নির্দেশ দিতে পারিবেন যে, উক্ত মাস্টার রোল বা রেজিস্টার উক্ত কারখানায় প্রাপ্তবয়স্ক শ্রকিদের রেজিস্টার হিসাবে গণ্য হইতে পারে এবং উহা উক্ত উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট স্থানে সংরক্ষণ করা যাইবে।
(২) প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকদের রেজিস্টারের ফরম, উহা সংরক্ষণের পদ্ধতি এবং মেয়াদ নির্ধারণ করিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারে।
(৩) প্রত্যেক কারখানার স্বত্বাধিকারী বা ম্যানেজার শ্রমিকগণকে নিম্নোক্ত গতিতে টিকেট বা কার্ড সরবরাহ করিবেন :
(ক) প্রত্যেক স্থায়ী শ্রমিককে নম্বর উল্লেখসহ স্থায়ী ডিপার্টমেন্টাল কার্য সরবরাহ করিতে হইবে;
(খ) প্রত্যেক বদলী শ্রমিককে নম্বর উল্লেখসহ স্থায়ী ডিপার্টমেন্টাল কার্ড সরবরাহ করিতে হইবে এবং সে যতদিন কাজ করিয়াছে, তাহার হিসাব উহাতে লিপিবদ্ধ থাকিতে হইবে; এবং স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হইলে কার্ডটি কর্তৃপক্ষের নিকট সমর্পণ করিবে;
(গ) প্রত্যেক অস্থায়ী শ্রমিককে একটি করিয়া ‘অস্থায়ী কার্ড’ সরবরাহ করিতে হইবে এবং সে যখন চাকরি ত্যাগ করিয়া যাইবে, অথবা স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হইবে, তখন কার্ডটি কর্তৃপক্ষের নিকট সমর্পণ করিতে হইবে;
(ঘ) প্রত্যেক সাময়িক শ্রমিককে একটি করিয়া সাময়িক কার্ড দিতে হইবে এবং কারখানায় তাহার কাজের দিনগুলি উহাতে লিপিবদ্ধ করিতে হইবে; এবং
(ঙ) প্রত্যেক শিক্ষানবিসকে একটি করিয়া ‘শিক্ষানবিস কার্ড’ দিতে হইবে এবং স্থায়ীভাবে নিযুক্ত হইলে, অথবা শিক্ষানবিসী ত্যাগ করিয়া চলিয়া গেলে, সে উহা কর্তৃপক্ষের নিকট সমর্পন করিবে।
(৪) ইন্সপেক্টরের অথবা কারখানার মালিক বা ম্যানেজার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত যে কোনো ব্যক্তি পরির্দশনের জন্য চাহিবামাত্র প্রত্যেক শ্রমিক তাহার টিকেট বা কার্ড উপস্থিত করিবে।
ধারা-৬২। কাজের ঘন্টা ৬০ ধারার নোটিশ ও ৬১ ধারা অনুসারে রক্ষিত রেজিস্টার অনুসারে হইবে :
৬০ ধারার (১) উপধারা অনুসারে প্রদত্ত নোটিশের এবং ৬১ ধারা অনুসারে রক্ষিত রেজিস্টারে সংশ্লিষ্ট শ্রমিকের নামের বিপরীতে যাহা লিপিবদ্ধ করা হইয়াছে, তাহার অন্যথায় করিয়া কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিক দ্বারা কোনো কাজ করানো যাইবে না বা তাহাকে কোনো কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
ধারা-৬৩। বিধিনিষেধ হইতে অব্যহতিদানের জন্য বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা :
(১) কারখানায় কোন্ কোন্ ব্যক্তি তদারকি বা ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পদে, অথবা গোপনীয় ধরনের কাজে নিযুক্ত রহিয়াছে, তাহা নির্দিষ্ট করিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন, এবং ৬৫ ধারার উপধারা (১)-এর শর্ত এবং উক্ত উপধারার (খ) অনুচ্ছেদ ব্যতীত এই অধ্যায়ের কোনো বিধান অনুরূপ নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না।
(২) নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া সীমা পর্যন্ত নির্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে সরকার নিম্নোক্ত শ্রেণীর প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের অব্যাহতি দিয়া বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন-
(ক) জরুরী মেরামতী কাজে নিযুক্তদের ৫০, ৫১, ৫৩, ৫৪ ও ৫৫ ধারার বিধান হইতে;
(খ) কারখানার সাধারণ কর্মসূচি অতিক্রম করিয়া কাজ সমাধা করার জরুরী প্রয়োজনে প্রস্তুতিমূলক বা অনুরূপ ধরনের কাজে নিযুক্তদের ৫০,৫৩,৫৪ ও ৫৫ ধারার বিধান হইতে;
(গ) মাঝে মাঝে সম্পাদনের প্রয়োজন হয়, এইরূপ কাজে নিযুক্তদের কর্তব্যরত থাকাকালীন বিরতির সময় যদি ৫৪ ধারায় বর্ণিত বিশ্রামের সময়ের অতিরিক্ত হয়, তবে তাহাদিগকে ৫০,৫৩, ৫৪ ও ৫৫ ধারার বিধান হইতে;
(ঘ) কারিগরি কারণে সারাদিন বিরতিহীনভাবে কাজ করা প্রয়োজন, এই ধরনের কাজে নিযুক্তদের ৫০, ৫১, ৫৩, ৫৪ ও ৫৫ ধারার ধারার বিধান হইতে;
(ঙ) প্রতিদিনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য উত্পাদন বা সরবরাহের কাজে নিযুক্তদের ৫১ ধারার বিধান হইতে;
(চ) এমন কোনো উত্পাদনের কাজ, যাহা কেবল নির্দিষ্ট মওসুম ছাড়া করা যায় না, উহাতে নিযুক্তদের ৫১ ধারার বিধান হইতে;
(ছ) প্রকৃতির অনিয়মিত আনুকূল্যের উপর নির্ভরশীল, এই ধরনের উত্পাদনের কাজে নিযুক্তদের ৫১ ও ৫৪ ধারার বিধান হইতে;
(জ) ইঞ্জিন রুম বা বয়লার হাউসে নিযুক্তদের, অথবা পাওয়ার প্ল্যান্ট বা ট্রান্সমিশন যন্ত্রের দেখাশুনার কাজে নিযুক্তদের ৫১ ধারার বিধান হইতে; এবং
(ঝ) সংবাদপত্র ছাপার কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিগণ যান্ত্রিক গোলযোগের দরুন কর্মস্থলে থাকিতে বাধ্য হইলে, তাহাদিগকে ৫০,৫৩ ও ৫৫ ধারার বিধান হইতে।
(৩) অব্যাহতিদানের উদ্দেশ্যে উপধারা (২) অনুসারে প্রণীত বিধিমালায় কোনো পরিণতিমূলক কারণে উপযুক্ত শর্ত সাপেক্ষে ৬০ ধারার বিধান হইতে অব্যাহতি দিয়া বিধিমালা প্রণয়ন করা যাইতে পারে।
(৪) কেবল উপধারা (২)-এর (ক) অনুচ্ছেদ ছাড়া এই ধারা অনুসারে বিধিমালা প্রণয়নের সময় সরকার অতিরিক্ত সময়সহ নিম্নোক্ত কাজের সীমা লংঘন করিবেন না।
(ক) যে কোনো দিন ১০ ঘন্টার কাজ;
(খ) যে কোনো সপ্তাহে ১২ ঘন্টার অতিরিক্ত সময় কাজ;
(গ) যে কোনো একদিনে বিশ্রাম ও আহারের জন্য বিরতিসহ কাজের ১২ ঘন্টা মেয়াদ।
তবে শর্ত এই যে, শিফ্ট পরিবর্তনের স্বার্থে চীফ ইন্সপেক্টরের পূর্ব অনুমোদন সাপেক্ষে ৫৩ ধারায় উল্লেখিত দৈনিক কাজের সর্বোচ্চ সীমা অতিক্রম করা হইতে পারে।
(৫) এই ধারা অনুসারে প্রণীত বিধিমালা অনধিক তিন বত্সর পর্যন্ত বলবত থাকিবে, যাহা উক্ত বিধিমালায় নির্দিষ্ট করা যাইতে পারে।
ধারা-৬৪। অব্যাহতির আদেশদানের ক্ষমতা :
(১) সরকার যদি এই মর্মে সন্তুষ্ট হন যে, কাজের প্রকৃতি সংক্রান্ত বা অন্য কোনো কারণে কোনো কারখানায় বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানায় প্রাপ্তবয়ষ্ক শ্রমিকদের কাজের মেয়াদ পূর্বে নির্দিষ্ট করিয়া দেওয়া প্রয়োজন, তাহলে কাজের সময়সীমার উপর নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখার উদ্দেশ্যে আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে সরকার লিখিত আদেশদান করিয়া অনুরূপ শ্রমিকদের বেলায় ৬০ ধারার বিধানসমুহ রদবদল করিতে বা উহার প্রয়োগ রাখিতে পারিবেন।
(২) কোনো কারখানায় বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানায় অস্বাভাবিক কাজের চাপ দেখা দিলে, কোনো শর্ত আরোপ সাপেক্ষে সরকার, অথবা চীফ ইন্সপেক্টর সংশ্লিষ্ট কারখানা বা কারখানাসমূহের সমস্ত বা যে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিককে ৫০, ৫১, ৫৪ ও ৬০ ধারার সমুদয় বা যে কোনো বিধান হইতে এই কারণে অব্যাহতি দিয়া লিখিত আদেশ জারি করিতে পারেন যে, অস্বাভাবিক কাজের চাপ মোকাবেলা করার জন্য এই অব্যাহতি প্রয়োজন ছিল।
(৩) সাপ্তাহিক কাজের ঘন্টা সম্পর্কে উপধারা (২) অনুসারে কোনোরূপ অব্যাহতি দিতে হইলে, উহা ৬৩ ধারার উপধারা (৪) অনুসারে উল্লিখিত সর্বোচ্চ সময়সীমা সাপেক্ষে হইতে হইবে।
(৪) উপধারা (২) অনুসারে প্রদত্ত আদেশ কারখানার ম্যানেজারের নিকট প্রেরণের তারিখ হইতে অনধিক দুই মাস বলবত থাকিবে।
তবে শর্ত এই যে, সরকার যদি মনে করেন যে, জনস্বার্থের জন্য উক্ত মেয়াদ বাড়ানো প্রয়োজন, তাহা হইলে সেই ক্ষেত্রে গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে অনুরূপ কোনো আদেশের কার্যকারিতা যে কোনো সময় অনধিক ছয় মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করিতে পারিবেন।
ধারা-৬৫। মহিলাদের চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে অতিরিক্ত বিধি-নিষেধ :
(১) কারখানায় নিযুক্ত মহিলা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রয়োগের বেলায় এই অধ্যায়ের বিধানসমূহের সহিত নিম্নোক্ত অতিরিক্ত বিধি-নিষেধসমূহ আরোপ করা হইলো-
(ক) কোনো মহিলার বেলায় ৫৩ ধারার বিধানসমূহ হইতে অব্যাহতি দেওয়া যাইবে না; এবং
(খ) কোনো কারখানায় কোনো মহিলাকে সকাল ৭টা হইতে রাত ৮টার মধ্যে ছাড়া অন্য কোনো সময় কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না ।
তবে শর্ত এই যে, গেজেট বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সরকার যে কোনো কারখানার বা কোনো বিশেষ শ্রেণীর কারখানার বেলায় এবং সারা বত্সরের জন্য বা বত্সরের যে কোনো অংশের জন্য (খ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত সময়সীমার ব্যতিক্রম করিয়া সকাল ৫টা হইতে রাত ৮-৩০ পর্যন্ত সাড়ে দশ ঘন্টা অবধি কাজের সময় নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।
(২) কোনো কাঁচামালের ক্ষতি বা পচন নিরোধের জন্য মহিলা শ্রমিকদের জন্য নির্ধারিত কাজের সময়সীমার ব্যতিক্রম করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিতে সরকার নিজ বিবেচনানুসারে আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে মত্স্য সংরক্ষণ বা মত্স্য টিনজাতকরণ কারখানায় নিযুক্ত মহিলা শ্রমিকদের উপরোল্লিখিত বিধি-নিষেধের অাওতা হইতে অব্যাহতি দিয়া বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।
(৩) উপধারা (২) অনুসারে প্রণীত বিধিমালার কার্যকারিতা অনধিক তিন বত্সর নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত বহাল থাকিবে।
Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৬৬। শিশুদের নিযুক্তির উপর নিষেধাজ্ঞা :
যেইসব শিশুর বয়স চৌদ্দ বত্সর পূর্ণ হয় নাই, তাহাদিগকে কোনো কারখানায় কোনো কাজে নিযুক্ত করা বা কোনো কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
ধারা-৬৭। অপ্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের টোকেন বহন করিতে হইবে :
চৌদ্দ বত্সর বয়স পূর্ণ হইয়াছে, এইরূপ শিশুকে অথবা কোনো নব যুবককে কোনো কারখানার কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না, যদি না-
(ক) ৬৮ ধারা অনুসারে প্রদত্ত তাহার দৈহিক সক্ষমতা সংক্রান্ত সার্টিফিকেট কারখানার ম্যানেজারের নিকট থাকে;
(খ) কাজে নিয়োজিত থাকার সময় অনুরূপ শিশুর বা অপ্রাপ্তবয়স্ক বালকের সহিত উপরোক্ত সার্টিফিকেটের স্মারক টোকেন থাকে।
ধারা-৬৮। সক্ষমতা সার্টিফিকেট :
(১) কোনো তরুণ ব্যক্তি বা তাহার মাতা-পিতা বা অভিভাবক যদি সার্টিফিকেট দানকারী সার্জনের নিকট সক্ষমতা সার্টিফিকেটের জন্য আবেদন করে এবং সক্ষমতা সার্টিফিকেট পাইলে তাহাকে কাজে নিযুক্ত করা হইবে, এই মর্মে কারখানার ম্যানেজার কর্তৃক স্বাক্ষরিত দলিল উক্ত আবেদনপত্রের সহিত পেশ করা হয়, অথবা কাজে নিযুক্ত হইতে ইচ্ছুক তরুণের পক্ষে ম্যানেজার নিজ আবেদন করিলে, সার্টিফিকেট দানকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়া কারখানার কাজে নিযুক্ত করা সম্পর্কে তাহার দৈহিক সক্ষমতা নির্ধারণ করিবেন।
(২) পরীক্ষা করার পর সার্টিফিকেট দানকারী সার্জন সংশ্লিষ্ট তরুণ ব্যক্তিকে কাজ করার সক্ষমতা সার্টিফিকেট মঞ্জুর করিতে বা নবায়ন করিতে পারেন-
(ক) তিনি যদি সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট তরুণ ব্যক্তির বয়স চৌদ্দ বত্সর পূর্ণ হইয়াছে, সে নির্ধারিত দৈহিক ক্ষমতা অর্জন করিয়াছে এবং কাজ করার উপযুক্ত হইয়াছে;
(খ) তিনি যদি সন্তুষ্ট হন যে, সংশ্লিষ্ট তরুণের বয়স ষোল বত্সর পূর্ণ হইয়াছে এবং একটি কারখানায় পুরোপুরি একদিনে কাজ করিতে সক্ষম, তাহা হইলে তিনি তাহাকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে গণ্য করিবেন।
তবে শর্ত এই যে, সংশ্লিষ্ট তরুণ যে কারখানায় বা যে উত্পাদনী সংস্থায় কাজ করিতে চাহে, সেই কারখানা বা উত্পাদনী সংস্থা সম্পর্কে সার্টিফিকেট দানকারী সার্জনের ব্যক্তিগত জ্ঞান না থাকিলে এবং নিজে উক্ত স্থান পরীক্ষা না করিয়া থাকিলে এই উপধারার অধীনে তিনি সক্ষমতা সার্টিফিকেট দিবেন না বা নবায়ন করিবেন না।
(৩) উপধারা (২) অনুসারে প্রদত্ত বা নবায়নকৃত সক্ষমতা সার্টিফিকেট-
(ক) প্রদানের বা নবায়নের তারিখ হইতে মাত্র বারো মাস বৈধ থাকিবে;
(খ) নির্ধারিত বারো মাস অতিক্রান্ত হওয়ার পূর্বে সংশ্লিষ্ট তরুণ ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য পুনঃপরীক্ষা সাপেক্ষে, অথবা সে যেই কাজে নিযুক্ত হইবে, তাহার প্রকৃতি সম্পর্কে আরোপিত শর্ত সাপেক্ষে নবায়ন করা যাইতে পারে।
(৪) সার্টিফিকেটে নির্দিষ্ট কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট তরুণ ব্যক্তি আর সক্ষম নহে বলিয়া প্রতীয়মান হইলে, সার্টিফিকেট দানকারী সার্জন বা নবায়নকৃত যে কোনো সার্টিফিকেট বাতিল করিতে পারিবেন।
(৫) সার্টিফিকেট দানকারী সার্জন কোনো আবেদনকারীকে সক্ষমতা সার্টিফিকেট দিতে বা নবায়ন করিতে অসম্মত হইলে, উক্ত ব্যক্তির আবেদনক্রমে তিনি তাহার অসম্মতির কারণ লিখিতভাবে জানাইবেন।
(৬) উপধারা (৩)-এর (খ) অনুচ্ছেদের শর্তাধীনে কোনো তরুণ ব্যক্তিকে সার্টিফিকেট দেওয়া হইলে বা নবায়ন করা হইলে, উক্ত শর্তাধীনে ছাড়া তাহাকে কোনো কারখানায় কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
(৭) এই ধারা অনুসারে সার্টিফিকেটের জন্য ফী দিতে হইলে, তাহা কারখানার মালিক দিবেন এবং সংশ্লিষ্ট তরুণ ব্যক্তি বা তাহার মাতা-পিতা বা অভিভাবকের নিকট হইতে উহা আদায় করা যাইবে না।
ধারা-৬৯। তরুণ ব্যক্তিকে প্রদত্ত সক্ষমতা সার্টিফিকেটের কার্যকারিতা :
(১) ৬ ধারার উপধারা (২)-এর (খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে যে তরুণকে প্রাপ্তবয়স্ক হিসাবে কোনো কারখানায় কাজ করার জন্য সক্ষমতা সার্টিফিকেট প্রদান করা হইয়াছে, এবং কারখানায় কাজ করার সময় উক্ত সার্টিফিকেটের স্মারক টোকেন যাহার সঙ্গে আছে, ৭০ ধারার উপধারা (১)-এর বিধান সাপেক্ষে তাহাকে ৬ষ্ঠ ও ৮ম অধ্যায়ের সমস্ত উদ্দেশ্যে প্রাপ্তবয়স্ক বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।
(২) কোনো তরুণ ব্যক্তিকে ৬৮ ধারার উপধারা (২)-এর (খ) অনুচ্ছেদ অনুসারে কারখানায় কাজ করার জন্য সক্ষমতা সার্টিফিকেটে মঞ্জুর করা না হইলে, তাহার বয়স যাই হউক না কেন, এই আইনের উদ্দেশ্যে তাহাকে শিশু বলিয়া গণ্য করিতে হইবে।
ধারা-৭০। শিশুদের জন্য কাজের ঘণ্টা :
(১) কোনো শিশুকে বা নব যৌবনপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কোনো কারখানায় কাজ করানো যাইবে না-
(ক) একদিনে পাঁচ ঘন্টার অতিরিক্ত; এবং
(খ) সন্ধ্যা ৭টা হইতে সকাল ৭টা পর্যন্ত।
(২) কারখানায় নিযুক্ত সকল শিশুর কাজের সময় দুইটি শিফ্টে সীমাবদ্ধ রাখিতে হইবে এবং উহার কোনো শিফ্টের সময়সীমা সাড়ে সাত ঘন্টার বেশি হইবে না।
(৩) একজন শিশুকে একটি মাত্র রীলেতে কাজ করাইতে হইবে এবং চীফ ইন্সপেক্টরের লিখিত পূর্ব অনুমতি ব্যতিরেকে ত্রিশ দিনের মধ্যে একবারের অতিরিক্ত তাহার রীলে বদলানো যাইবে না।
(৪) শিশু শ্রমিকদের বেলায়ও ৫২ ধারার বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবে এবং কোনো শিশুর ক্ষেত্রে উক্ত ধারার কোনো বিধান হইতে অব্যাহতি দেওয়া যাইবে না।
(৫) কোনো শিশু যেই দিন কোনো কারখানায় কাজ করিয়াছে, সেইদিন তাহাকে অন্য কোনো কারখানার কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।
Navigation
[0] Message Index
[#] Next page
[*] Previous page
Go to full version