Faculty of Humanities and Social Science > Law

শ্রম সংক্রান্ত আইন ও বিধি

<< < (2/4) > >>

Sultan Mahmud Sujon:
চতুর্থ অধ্যায়

বিধিমালা

ধারা-২২। অগ্নিকাণ্ডের বিরুদ্ধে সতর্কতা :

(১) প্রত্যেক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড হইতে নিরাপদে বহির্গমনের জন্য নির্ধারিত ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(২) ইন্সপেক্টর যদি দেখিতে পান যে, কোনো কারখানায় উপধারা (১) অনুসারে নিরাপদ বহির্গমনের ব্যবস্থা গৃহীত হয় নাই, তাহা হইলে তিনি নির্ধারিত তারিখের মধ্যে তাঁহার নির্দেশিত পন্থায় উপরোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজারকে লিখিত নির্দেশ দান করিতে পারিবেন।

(৩) কোনো কারখানার কোনো ঘরের মধ্যে কোনো লোক উপস্থিত থাকা পর্যন্ত উক্ত ঘর হইতে বাহির হওয়ার দরজা তালাবদ্ধ বা অন্যভাবে  শক্ত করিয়া আটকাইয়া রাখা যাইবে না; দরজা এমনভাবে আটকাইতে হইবে,  যাহাতে ভিতর হইতে উহা সহজে খোলা যায় এবং ঐ সব দরজা স্লাইডিং ধরনের না হইলে সেইগুলি যাহাতে বাহিরের দিকে খোলা যায়, সেইভাবে নির্মাণ করিতে হইবে, অথবা দুইটি কামরার মধ্যবর্তী কোনো দরজা বহির্গমন পথের  নিকটবর্তী হইলে ভিতরে কাজ চলার সময় উহা তালাবদ্ধ বা শক্ত করিয়া আটকাইয়া রাখা যাইবে না।

(৪) প্রত্যেক কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় বাহির হইয়া যাওয়ার উদ্দেশ্যে নির্র্র্মিত প্রতিটি জানালায়, দরজায় বা অন্য কোনো বহির্গমন পথে অধিকাংশ শ্রমিকের বোধগম্য ভাষায় এবং বড় বড় লাল অক্ষরে বা অন্য কোনো বোধগম্য সংকেত  লটকাইয়া রাখিতে হইবে।

(৫) প্রত্যেক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড সম্পর্কে শ্রমিকগণকে  হুঁশিয়ারী সংকেত দানের উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(৬) প্রত্যেক কারখানার প্রতি কামরায় অগ্নিকাণ্ডের সময় শ্রমিকদের বাহির হইয়া যাওয়ার জন্য উপযুক্ত বহির্গমন পথের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(৭) কোনো কারখানায় যেইখানে নিচতলা ছাড়া অন্যত্র সাধারণত দশ বা ততোধিক সংখ্যক শ্রমিক কাজ করে, অথবা যেইখানে বিস্ফোরক বা দাহ্য পদার্থ ব্যবহৃত বা জমা করিয়া রাখা হয়, সেইখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটিলে আত্মরক্ষার বা পলায়নের ব্যবস্থা সম্পর্কে শ্রমিকদের অবহিত করিতে হইবে এবং অনুরূপ দুর্ঘটনার সময় আত্মরক্ষা সংক্রান্ত নিয়মিত প্রশিক্ষণ দানের উপযুক্ত ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(৮) সকল কারখানায় বা বিশেষ শ্রেণীভুক্ত কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের সময় আত্মরক্ষার জন্য কি ধরনের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে এবং কি ধরনের ও কতটা পরিমাণ অগ্নিনির্বাপক সরঞ্জাম থাকা দরকার, তাহা নির্ধারণ করিয়া সরকার নিয়মাবলী প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-২৩। যন্ত্রপাতি ঘিরিয়া রাখা :

(১) প্রত্যেক কারখানায় নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা হিসাবে প্রত্যেক যন্ত্রপাতির নিম্নোক্ত অংশসমূহ  যথোপযুক্ত উপায়ে ঘিরিয়া রাখিতে হইবে।

(ক) মূখ্য চালিকা যন্ত্রের প্রতিটি চলমান অংশ এবং মূখ্য চালক যন্ত্রের সহিত সংযুক্ত প্রতিটি ঘূর্ণায়মান চাকা;

(খ) প্রতিটি চলচক্রের ও টারবাইনের উপর ও নিচের মুখ;

(গ) যন্ত্রের মুখ-অতিক্রমকারী প্রতিটি স্টক-বারের সংশ্লিষ্ট অংশ;

(ঘ) নিরাপত্তা বেড়ায় ঘেরা থাকা অবস্থায় অনুরূপ নিরাপদ ব্যবস্থাধীনে নির্মিত বা সংস্থাপিত না হইয়া থাকিলে-

 (i) ইলেকট্রিক জেনারেটর, মটর বা রোটারি কনভার্টরের প্রতিটি অংশ;

 (ii) ট্রান্সমিশন যন্ত্রপাতির প্রত্যেক অংশ; এবং

 (iii) যে কোনো যন্ত্রপাতির প্রতিটি বিপদজনক অংশ।

তবে শর্ত এই যে, কোনো যন্ত্রের কোনো অংশ উপরোল্লিখিত বিধি মোতাবেক নিরাপদ অবস্থায় রহিয়াছে কিনা, অথবা নিরাপদ ব্যবস্থাধীনে  সংস্থাপিত হইয়াছে কিনা, তাহা নির্ণয় করার সময় সংশ্লিষ্ট যন্ত্র সঠিকভাবে চালু আছে কিনা, তাহা বিবেচনা করা হইবে না; ২৪ ধারা মোতাবেক যন্ত্রটি চালু করা হইয়াছে কিনা,  তাহার ভিত্তিতেই উক্ত তদন্ত কার্য পরিচালিত হইবে।

(২) যন্ত্রপাতি ঘিরিয়া রাখা সম্পর্কে এই আইনের অন্য কোনো বিধানের ব্যাঘাত না ঘটাইয়া প্রতিটি সংলগ্ন  স্ক্রু, রোন্ট এবং ঘূর্ণায়মান চাকার প্রতিটি চাবি বা পিনিয়ন, শ্রমিক যাহার সংস্রবে আসিবার সম্ভাবনা রহিয়াছে, এমন প্রতিটি জিনিস নিরাপত্তমূলক ঘেরার মধ্যে রাখিতে হইবে।

(৩) শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা রাখার শর্ত সাপেক্ষে সরকার যে কোনো বিশেষ যন্ত্র বা উহার অংশকে এই ধারার আওতা হইতে রেহাই দিতে পারিবেন।

(৪) কোনো বিশেষ  ধরনের যন্ত্র বা উহার কোনো অংশ সম্পর্কে সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিয়া প্রয়োজনীয়  সতর্কতামূলক ব্যবস্থা  গ্রহণের নির্দেশ দিতে পারিবেন।

ধারা-২৪। চলমান যন্ত্রের উপরে বা নিকটে কাজ করা :

(১) কোনো কারখানায় কোনো যন্ত্র চালু থাকা অবস্থায় ২৩ ধারা অনুসারে উক্ত যন্ত্র পরীক্ষা করিবার প্রয়োজন হইলে, অথবা উক্ত পরীক্ষা কার্যের ফলশ্রুতিতে  কোনো মাউন্টিং বা বেল্টের শিপিং চালনা করিবার দরকার হইলে, কিংবা যন্ত্রটি চালু অবস্থায় অন্য কোনো এ্যাডজাস্টিং অপারেশনের প্রয়োজন হইলে, উক্ত পরীক্ষা প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ শ্রমিক দ্বারা করাইতে হইবে এবং তাহার নাম উক্ত উদ্দেশ্যে রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত থাকিতে হইবে এবং উক্ত কাজে রত থাকাকালে ৬ ইঞ্চির কম চওড়া না হইলে কোনো চলমান চক্রের সহিত সংযুক্ত বেল্ট উক্ত শ্রমিক হাত দিয়া চালাইবে না।

(২) কোনো যন্ত্রের কোনো অংশ চলমান থাকা অবস্থায় কোনো মহিলা বা শিশু শ্রমিককে উক্ত অংশে তৈল লাগানো, পরিষ্কার করা বা বিন্যস্ত করিবার কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না এবং যন্ত্র চলিতে থাকা অবস্থায় উহার চলমান অংশ স্থির অংশের মাঝে দুইটি চলমান অংশের মাঝখানে কোনো কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।

(৩) সরকার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট কারখানার বা বিশেষ শ্রেণীভুক্ত কারখানার যন্ত্র চলিতে থাকা অবস্থায় উহার নির্দিষ্ট কোনো অংশ পরিষ্কার করা, তৈল লাগানো বা বিন্যস্ত করা নিষিদ্ধ করিতে পারিবেন।

ধারা-২৫। বিপদজনক যন্ত্রের কাজে তরুণ ব্যক্তিদের নিয়োগ :

(১) যন্ত্র সংক্রান্ত বিপদাপদ এবং উহা হইতে সতর্কতা অবলম্বন সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো তরুণ শ্রমিককে কোনো যন্ত্রে কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না; এবং

(ক) যন্ত্রের কাজ সম্পর্কে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত; অথবা

(খ) সংশ্লিষ্ট যন্ত্রের কাজ সম্পর্কে  পুরোপুরি জ্ঞান  ও দক্ষতাসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে কাজ না করিলে; তাহাকে কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না।

 (২) সরকার বিজ্ঞাপ্তি প্রকাশ করিয়া যেইসব যন্ত্রকে বিপদজনক প্রকৃতির বলিয়া নির্দিষ্ট করিয়া দিবেন এবং উপরোক্ত বিধান পালন না করিলে সেইগুলিতে তরুণদের কাজ করা নিষিদ্ধ করিবেন, সেইসব যন্ত্রের ক্ষেত্রে  এই ধারাটি প্রযোজ্য।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-২৬। তড়িত্প্রবাহ বিচ্ছিন্ন করার কৌশল এবং স্ট্রাইকিং গিয়ার:

(১) প্রত্যেক কারখানায়-

(ক) আটকানো ও বিযুক্ত যন্ত্রাংশের চালক-বেন্ট পরিচালনার জন্য সুষ্ঠু স্ট্রাইকিং গিয়ার বা অন্য কোনো কৌশলের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে এবং উহা এমনভাবে রক্ষিত  হইতে হইবে, যাহাতে চলমান বেল্ট প্রথম পুলিতে আটকাইয়া না যায়;

(খ) চালক-বেল্ট যখন ব্যবহৃত হইতে থাকিবে না, তখন উহাকে চলমান যন্ত্রাংশের উপর স্থাপন করিয়া রাখা যাইবে না।

(২) যন্ত্র চলিতে থাকা অবস্থায় জরুরী কারণে তড়িত্প্রবাহ বিচ্ছিন্ন করার উপযোগী সুষ্ঠু কৌশলগত ব্যবস্থা প্রত্যেক কারখানার প্রতিটি কাজের ঘরে থাকিতে হইবে।

(৩) এই আইন বলবত্ হওয়ার পূর্বে যেই সমস্ত কারখানা চালু হইয়াছে, তাহাদের ক্ষেত্রে কেবল যেইসব কাজের ঘরে যন্ত্র চালনায় বিজলী ব্যবহৃত হয়, সেইসব ঘরে উপধারা (২)-এর বিধান প্রযোজ্য হইবে।

ধারা-২৭। স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রপাতি :

কাজ উপলক্ষে কোনো শ্রমিকের চলাচল করার বা অন্য কোনো লোকের হাঁটিয়া যাওয়ার সম্ভাবনা থাকিলে, কোনো স্বয়ংক্রিয় যন্ত্রের পার্শ্ববর্তী চলাচল পথ ১৮ ইঞ্চির বেশি প্রশস্ত না হইলে, উক্ত যন্ত্র চালনা করা যাইবে না।

তবে শর্ত এই যে, এই আইন বলবত হওয়ার পূর্বে স্থাপিত যন্ত্রসমূহকে চীফ ইন্সপেক্টর কর্তৃক আরোপিত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা রাখার শর্ত সাপেক্ষে উক্ত বিধানে প্রয়োগ হইতে রেহাই দেওয়া যাইতে পারে।

ধারা-২৮।  নূতন যন্ত্রপাতি বাক্স-বন্দীকরণ :

এই আইন বলবত  হওয়ার পর যে কোনো কারখানায় স্থাপিত ও বিদ্যুত্ চালিত সমস্ত যন্ত্রে-

(ক) প্রতিটি সংযোজিত স্ক্রু, বেল্ট বা চাবি, অথবা প্রতিটি ঘূর্ণায়মান যন্ত্রাংশ. চাকা বা পিনিয়ন এমনভাবে গ্রোথিত বা বাক্সে আবদ্ধ করিয়া রাখিতে হইবে, যাহাতে কোনো দুর্ঘটনা ঘটিতে না পারে; এবং

(খ) সম্পূর্ণ নিরাপদ দূরত্বে সংস্থাপিত না হইলে প্রতিটি যন্ত্রমুখ বা যন্ত্রের দাঁত নিরাপত্তা বাক্সে সুরক্ষিত রাখিতে হইবে।

(২) উপধারা (১)-এর বিধান মোতাবেক সরক্ষিত নয়, এইরূপ কোনো বিদ্যুত্ চালিত যন্ত্র  কোনো ব্যক্তি কোনো কারখানায় বিক্রয় করিলে বা ভাড়া হিসাবে দিলে, সে তিন মাস পর্যন্ত কারাদণ্ডে বা পাঁচ শত টাকা পর্যন্ত জরিমানা দণ্ডে বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

(৩) কোনো বিশেষ ধরনের বা বিশেষ শ্রেণীর যন্ত্রের বিশেষ বিশেষ বিপদজনক অংশের জন্য অতিরিক্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ  সম্পর্কে সরকার বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-২৯। তুলা-ধুন যন্ত্রের নিকট মহিলা ও শিশু শ্রমিক নিয়োগ নিষিদ্ধকরণ :

 কোনো কারখানায় যেই অংশে তুলা-ধুনার যন্ত্র চালু আছে, তাহার কাছে কোনো মহিলা বা শিশু শ্রমিককে তুলা গাঁইটবদ্ধ করার কাজে নিযুক্ত করা যাইবে না।

তবে শর্ত এই যে, উক্ত তুলা-ধুনার যন্ত্রের অন্তমুর্খ যদি বহির্মুখ হইতে আলাদা কোনো ঘরের মধ্যে  থাকে এবং উভয় গৃহের মধ্যবর্তী ব্যবধান যদি উক্ত ঘরের উচ্চতার সমান বা ইন্সপেক্টর কর্তৃক নির্ধারিত পরিসরের সমান হয়, তাহা হইলে মহিলা ও শিশু আলোচ্য স্থানে পার্টিশনের পাশে কাজ করিতে পারিবে।

ধারা-৩০।  ক্রেন ও অন্যান্য উত্তোলক যন্ত্র :

 

(১) যেই কোনো কারখানার ‘হয়েস্ট’ ও ‘লিফ্ট’ ছাড়া অন্য সকল প্রকার ক্রেন ও অন্যান্য উত্তোলক যন্ত্রের বেলায় নিম্নোক্ত  বিধানসমূহ প্রযোজ্য হইবে-

(ক) ওয়ার্কিং গিয়ারসহ উহার প্রতিটি সংলগ্ন বা চলমান অংশ দড়ি বা শিকল এবং ধারক বা সংস্থাপক যন্ত্রাংশ-

প্রয়োজনীয় শক্তিসম্পন্ন  এবং উপযুক্ত মাল-মসলা দ্বারা উত্তমরূপে নির্মিত হইতে হইবে;

যথোপযুক্তরূপে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে;

প্রতি বারো মাসে অন্তত একবার করিয়া দক্ষ কারিগর দ্বারা পরীক্ষা করাইতে এবং উক্ত পরীক্ষা কার্যের ফলাফল লিখিত রাখার উদ্দেশ্যে একটি রেজিস্টার রাখিতে হইবে;

   (খ) নিরাপদ ভার বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত বোঝা চাপানো যাইবে না এবং বহন ক্ষমতা বিজ্ঞপ্তি আকারে লিখিয়া যন্ত্রের উপর লটকাইয়া রাখিতে হইবে এবং

   (গ)  ক্রেন চালু রহিয়াছে, এমন জায়গায় কোনো ব্যক্তি কর্মরত থাকিলে, উক্ত স্থানের ২০ ফুটের মধ্যে যাহাতে কোনো ক্রেন উপস্থিত হইতে না পারে, এইরূপ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।

   (২)  কোনো উত্তোলক যন্ত্র বা বিশেষ শ্রেণীভুক্ত উত্তোলক যন্ত্র সম্পর্কে সরকার নিম্নোক্ত রূপ বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন-

   (ক) এই ধারায় বর্ণিত বিধানের অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে; অথবা

   (খ)  সরকারের বিবেচনায় যেখানে প্রয়োজন নাই, সেইরূপ ক্ষেত্রকে এই ধারার সমুদয় বা আংশিক বিধান হইতে রেহাই প্রদান।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৩১। হয়েস্ট ও লিফ্ট :

(১)  প্রত্যেক কারখানায়-

(ক) প্রতিটি হয়েস্ট ও লিফ্ট-

(i)  প্রয়োজনীয় শক্তিসম্পন্ন এবং উত্তম মাল-মসলা দ্বারা সুষ্ঠুভাবে নির্মিত হইতে হইবে;

(ii) সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ এবং প্রতি ছয় মাসে অন্তত একবার করিয়া দক্ষ কারিগর দ্বারা পরীক্ষা করাইতে এবং পরীক্ষার ফলাফল লিপিবদ্ধ করিয়া রাখার উদ্দেশ্যে একটি রেজিস্টার থাকিতে হইবে;

(খ) প্রতিটি হয়েস্ট ও লিফ্টের চলাচল পথ দরজা সংযুক্ত সংরক্ষণী ঘেরার মধ্যে আবদ্ধ রাখিতে হইবে এবং প্রবেশ পথ এমনভাবে সুরক্ষিত হইতে হইবে, যাহাতে কোনো লোকের বা দ্রব্যের উহাতে পড়িয়া যাওয়ার বা উহার অনড় ও চলমান অংশের মধ্যে আটকাইয়া পড়ার আশংকা না থাকে;

 

 (গ) নিরাপদে সর্বোচ্চ বহন ক্ষমতার মাত্রা লিখিয়া প্রতিটি হয়েস্ট বা লিফটের গায়ে লটকাইয়া রাখিতে হইবে এবং বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত মালামাল উহাতে উঠানো যাইবে না;

 (ঘ) মানুষ বহনের জন্য ব্যবহৃত প্রতিটি হয়েস্ট বা লিফ্টের প্রত্যেক পার্শ্বে উঠা-নামা করিবার জন্য প্রবেশ পথ থাকিতে হইবে;

 (ঙ) অনুচ্ছেদ (খ) এবং (ঘ)-এ বর্ণিত প্রবেশপথ এমনভাবে নির্মিত হইতে হইবে, যাহাতে অবতরণ ক্ষেত্রে না আসা পর্যন্ত উহার দরজা উণ্মুক্ত করা না যায় এবং দরজা বন্ধ না করা পর্যন্ত খাঁচা চালু হইতে না পারে।

(২) এই আইন বলবত হওয়ার পরে কোনো কারখানায় মানুষ বহনের উদ্দেশ্যে স্থাপিত বা পুনর্গঠিত হয়েস্ট লিফ্টের বেলায় নিম্নোক্ত অতিরিক্ত ব্যবস্থাগুলি প্রযোজ্য হইবে-

(ক) খাঁচা ঝুলাইয়া রাখিবার জন্য দড়ি বা শিকল থাকিলে অন্ততপক্ষে দুইটি করিয়া দড়ি বা শিকল লাগাইতে হইবে এবং উক্ত দড়ির বা শিকলের খাঁচাটির ওজনসহ সর্বোচ্চ পরিবহন ক্ষমতাকে ধরিয়া রাখিবার উপযুক্ত ক্ষমতা থাকিতে হইবে;

(খ) দড়ি বা শিকল কখনও ছিঁড়িয়া গেলে  সর্বোচ্চ বহন ক্ষমতাসহ খাঁচাটিকে ঝুলাইয়া রাখার উপযুক্ত বিকল্প কারিগরি ব্যবস্থা সংযোজিত থাকিতে হইবে;

(গ) ক্ষমতার অতিরিক্ত চলাচল নিরোধের উপযুক্ত স্বয়ংক্রিয় কারিগরি ব্যবস্থা সংযোজিত থাকিতে হইবে।

(৩) চীফ ইন্সপেক্টর বিকল্প নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা আরোপ করিয়া এই আইন কার্যকর হওয়ার পূর্বে কোনো কারখানায় স্থাপিত হয়েস্ট বা লিফ্টকে এই ধারার উপধারা (১)-এ  উল্লিখিত ব্যবস্থা পুরোপুরি অনুসরণ না করিয়াও উহা ব্যবহার করার অনুমতি দিতে পারিবেন।

(৪) কোনো বিশেষ শ্রেণীর বা বিশেষ ধরনের হয়েস্ট বা লিফ্টের উপধারা (১) ও (২)-এ উল্লিখিত ব্যবস্থা অনুসরণের প্রয়োজন নাই বলিয়া মনে করিলে, সরকার সেইসব হয়েস্ট বা লিফ্টকে  উক্ত ব্যবস্থার আওতা হইতে রেহাই দিয়া নির্দেশ জারি করিতে পারিবেন।

ধারা-৩২।  ঘূর্ণায়মান যন্ত্র :

(১)  কোনো কারখানার যেইসব ঘরে চূর্ণন বা পেশাই-এর কাজ করা হয়, সেই সব ঘরে প্রতিটি গ্রিণ্ড স্টোন বা হুইল অথবা শ্যাফ্ট বা স্পিণ্ডেলের সর্বোচ্চ চলনক্ষমতা নির্দেশ করিয়া লিখিত নোটিশ যন্ত্রের পার্শ্বে বা নিকটে লটকাইয়া রাখিতে হইবে।

(২)  উপধারা (১) অনুযায়ী নোটিশে যে চলন-ক্ষমতা লিপিবদ্ধ থাকিবে, তাহার অতিরিক্ত গতি দেওয়া যাইবে না।

(৩)  প্রত্যেক কারখানায় এমন কার্যকর ব্যবস্থা থাকিতে হইবে, যাহাতে প্রতিটি ঘূর্ণায়মান ভেসেল, কেজ, বাস্কেট, ফ্লাইহুইল, পুলি বা অনুরূপ কোনো বিদ্যুত্  চালিত যন্ত্রের সর্বোচ্চ চলন ক্ষমতার অতিরিক্ত গতি দেওয়া না হয়।

ধারা-৩৩। প্রেসার প্ল্যান্ট :

(১) কোনো কারখানায় কোনো যন্ত্রের বা কলকব্জার অংশ উত্পাদনী প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হইলে, উহা যদি আবহাওয়ার স্বাভাবিক চাপের অতিরিক্ত চাপ দিয়া চালনা করা হয়, তাহা হইলে সেইক্ষেত্রে উক্ত অংশের নিরাপদ চলন-ক্ষমতা যাহাতে অতিক্রান্ত হইতে না পারে, তাহার নিশ্চয়তা বিধানের কার্যকর ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(২) উপধারা (১)-এ উল্লিখিত যে কোনো কলকব্জা বা যন্ত্রপাতি পরীক্ষা করা এবং কোনো বিশেষ শ্রেণীর কারখানায় ব্যবহৃত বিশেষ বিশেষ যন্ত্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করা প্রয়োজন মনে করিলে, সরকার সেইজন্য বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-৩৪। মেঝে, সিঁড়ি এবং চলাচল পথ :

(ক) সমস্ত মেঝে, সিঁড়ি এবং চলাচল পথ এবং গ্যাংওয়ে উপযুক্ত মাল-মসলা দ্বারা মজবুত করিয়া নির্মাণ এবং তাহা সুষ্ঠুভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করিতে হইবে এবং কোনো ক্ষেত্রে  নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে সিঁড়ি, চলাচল পথ ও গ্যাংওয়েতে উপযুক্ত হ্যাণ্ডরেইল থাকিতে হইবে; এবং

(খ) যেই সকল জায়গায় শ্রমিকরা কাজ করিয়া থাকে, সেইখানে যথোপযুক্ত নিরাপত্তামূলকভাবে নির্মিত প্রবেশ ও বহির্গমন পথ থাকিতে হইবে।

 ধারা-৩৫। পিট, সাম্প, সুড়ঙ্গমুখ প্রভৃতি :

(১) প্রত্যেক কারখানায় প্রতিটি সংস্থাপিত ভেসেল, সাম্প , ট্যাংক পিট বা মেঝের সুড়ঙ্গমুখ যদি উহাদের গভীরতা, গঠনের ধরন ও অবস্থান প্রকৃতির জন্য বিদপজনক বলিয়া অনুমিত হয়, তাহা হইলে উহাদের মুখে নিরাপত্তামূলক ঢাকনা লাগাইতে হইবে অথবা উহা যথোপযুক্তভাবে ঘিরিয়া রাখিতে হইবে।

(২) সরকার প্রয়োজন মনে করিলে যথাবিহিত শর্ত আরোপ সাপেক্ষে যে কোনো কারখানার বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানার যে কোনো ভেসেল, সাম্প, ট্যাংক, পিট বা সুড়ঙ্গমুখকে এই ধারার আওতা হইতে রেহাই দিয়া লিখিত নির্দেশ জারি করিতে পারিবেন।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৩৬। অতিরিক্ত ভারী মাল বহন :

(১) কোনো কারখানায় শ্রমিকের দৈহিক ক্ষতি হইতে পারে, এইরূপ অতিরিক্ত ওজনের মালামাল বহন বা চালনার কাজ করানো যাইবে না।

(২) কোনো কারখানায় বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানায় নিযুক্ত প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও মহিলা এবং অপ্রাপ্তবয়ষ্ক বালক বা শিশু শ্রমিকরা কতটা পরিমাণ ওজনের মালামাল বহন, উত্তোলন বা চালনা করিতে পারিবে, তাহার সর্বোচ্চ সীমা নির্দেশ করিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-৩৭।  চোখের নিরাপত্তা বিধান :

কোনো কারখানায় বিশেষ প্রকৃতির উত্পাদনী প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে নিম্নোক্ত রূপ ক্ষতির আশংকা থাকিলে, ঐসব কাজে নিযুক্ত শ্রমিকদের বা উক্ত কার্যস্থলের সন্নিকটে অবস্থানরত অন্যান্য শ্রমিকের নিরাপত্তার জন্য কার্যকর পর্দা বা আন্ধি চশমার ব্যবস্থা করার জন্য সরকার নির্দেশ দিতে পারিবেন-

(ক) উত্পাদন প্রক্রিয়ার ফলশ্রুতিতে দ্রব্যের কণা বা টুকরা ছিটকাইয়া চোখের ক্ষতির আশংকা, বা

(খ) অতিরিক্ত আলোকচ্ছটা বা তাপের ফলে চোখে ক্ষতির আশংকা।

 

ধারা-৩৮। ক্রটিপূর্ণ যন্ত্রাংশের তথ্য তলব করা বা স্থায়িত্ব পরীক্ষা :

ইন্সপেক্টর যদি মনে করেন যে, কোনো কারখানার কোনো দালান বা উহার অংশবিশেষ বা উহার কোনো প্রবেশ পথের অংশ বা কোনো যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ  এমন ক্রুটিপূর্ণ হইয়া পড়িয়াছে বা ক্রটিপূর্ণভাবে নির্মিত হইয়াছে যে, যাহা মানব জীবনের জন্য বিপদজনক, তাহা হইলে তিনি উক্ত  কারখানার ম্যানেজারের উপর লিখিত আদেশ জারি করিয়া নির্ধারিত তারিখের মধ্যে নিম্নোক্ত তথ্যাদি পেশ করার নির্দেশ দিতে পারিবেন-

(ক) সংশ্লিষ্ট দালান, প্রবেশ পথ, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা নিরাপদ কিনা, তাহা নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে উহাদের ড্রইং স্পেসিফিকেশন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য; বা

(খ)  উহাদের শক্তি বা মান নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে  উপযুক্ত পরীক্ষা চালানো এবং পরীক্ষার ফলাফল ইন্সপেক্টরকে জ্ঞাত করানো।

ধারা-৩ঌ। দালান ও যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা :

(১)  ইন্সেপক্টরের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো কারখানার কোনো দালান বা উহার অংশবিশেষ বা প্রবেশ পথ বা প্রবেশ পথের অংশ এবং কোনো যন্ত্র সরঞ্জাম এমন ক্রটিপূর্ণ অবস্থায় রহিয়াছে যে, উহা মানব জীবনের জন্য বিপদজনক, তাহা হইলে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে যেই ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক বলিয়া তিনি মনে  করেন, সেইরূপ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়া ইন্সপেক্টর সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজারের উপর লিখিত আদে জারি করিতে পারিবেন।

(২)  ইন্সপেক্টরের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে, কোনো দালান বা দালানের অংশ, অথবা চলাচল পথের বা যন্ত্রপাতির কোনো অংশ ব্যবহার করা বিপদজনক, তাহা হইলে ঐ সমস্ত অংশ উপযুক্তরূপে মেরামত বা পুনঃনির্মাণ না করা পর্যন্ত উহার ব্যবহার নিষিদ্ধ করিয়া ইন্সপেক্টর সংশ্লিষ্ট কারখানার ম্যানেজারের উপর লিখিত আদেশ জারি করিতে পারিবেন।

ধারা-৪০। এই অধ্যায়ের পরিপূরক বিধিমালা প্রণয়নের ক্ষমতা :

     নিম্নোক্ত উদ্দেশ্যে সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন-

(১) কোনো কারখানায় বা বিশেষ শ্রেণীভুক্ত কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের নিরাপত্তা বিধানের জন্য প্রয়োজন হইলে অতিরিক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ বা কৌশল অবলম্বন; এবং

(২) সংশ্লিষ্ট দালান বা দালানের অংশ বিশেষের ক্ষমতা সম্পর্কে নির্ধারিত ফরমে উপযুক্ত অফিসারের স্বাক্ষরিত সার্টিফিকেট চীফ ইন্সপেক্টরের নিকট পেশ না করা পর্যন্ত উক্ত দালানে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যুত্চালিত যন্ত্রে দ্রব্য উত্পাদনের কাজ বন্ধ রাখা।

Sultan Mahmud Sujon:
ধারা-৪১। বিপদজনক ধোঁয়ার বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা :

(১)  সুড়ঙ্গ পথে বা অনুরূপ কোনো চ্যানেলে নির্গমনের বিকল্প ব্যবস্থা  বা উপযুক্ত ম্যানহোল সংযোজিত না থাকিলে কোনো কারখানার যেই সমস্ত চেম্বার, ট্যাংক, ভ্যাট, পিট, পাইপ, ফ্লু বা অনরূপ স্থাপনা হইতে বিপদজনক ধুম্র নির্গত হয়, সেই খানে কোনো লোককে প্রবেশ করিতে দেওয়া যাইবে না।

(২) চব্বিশ ভোল্টের অতিরিক্ত ভোল্টেজযুক্ত কোনো বহনযোগ্য বিজলী বাতি কোনো কারখানার উপধারা (১)-এ উল্লিখিত স্থানসমূহে ব্যবহার করা যাইবে না। ইহা ছাড়াও করাখানার যেইসব স্থানে পুঞ্জীভূত গ্যাস দাহ্য ক্ষমতা সম্পন্ন বলিয়া  মনে হইবে, সেই খানেও অগ্নিরোধক বেষ্টনী দ্বারা অবরুদ্ধ না হইলে কোনো ল্যাম্প বা আলো ব্যবহার করা যাইবে না।

(৩) পুঞ্জীভূত ধুম্ররাশি অপসারণ না করা পর্যন্ত তত্সহ  নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত উপধারা (১)-এ উল্লিখিত কারখানার কোনো অংশে কোনো লোককে প্রবেশ করিতে দেওয়া যাইবে না-

(ক) কারখানার সংশ্লিষ্ট এলাকা বিপদজনক ধুম্ররাশি হইতে মুক্ত রহিয়াছে বলিয়া নিজে পরীক্ষা করিয়া উক্ত স্থানে কোনো মানুষের প্রবেশ বিপদজনক নহে, এই মর্মে কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত সার্টিফিকেট; অথবা

   (খ)  প্রবেশকারী শ্রমিক শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের জন্য উপযুক্ত সরঞ্জাম পরিধান করিলে এবং উহার বেল্টের সহিত সংযুক্ত দড়ির বহির্মুখ বিপদজনক স্থানের বাহিরে দণ্ডায়মান অপর এক ব্যক্তির হাতে ধরা থাকিলে।

(৪) উপরোল্লিখিত বিপদজনক এলাকা সম্বলিত প্রতিটি কারখানায় উপযুক্ত শ্বাস-প্রশ্বাস সরঞ্জাম, ডিভাইডিং সরঞ্জাম এবং দড়ি সর্বক্ষণের জন্য প্রস্তুত রাখিতে হইবে এবং উহা  ব্যবহারের উপযোগী কিনা, সেই সম্পর্কে কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির নিকট হইতে মেয়াদী পরীক্ষা কার্যের পর নিয়মিত সার্টিফিকেট লইতে হইবে; এবং সংশ্লিষ্ট  কারখানায় কর্মরত ব্যক্তিদের অধিকাংশকে ঐ সমস্ত সাজ-সরঞ্জামের  সুষ্ঠু ব্যবহার সম্পর্কেও অবলুপ্ত শ্বাস-প্রশ্বাস পুনঃসঞ্চালনের বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান করিতে হইবে।

(৫) বায়ু চলাচলের দ্বারা ঠাণ্ডা করা, অথবা অন্যভাবে বিপদমুক্ত না করা পর্যন্ত কাজের জন্য বা কোনো পরীক্ষা কার্য সম্পাদনের জন্য কোনো ব্যক্তিকে কোনো কারখানার  কোনো বয়লার ফারনেস, বয়লার, ফ্লু, চেম্বার, ট্যান্ক, ভ্যাট, পাইপ বা অন্য কোনো বিপদজনক স্থানে প্রবেশ করিতে দেওয়া যাইবে না।

(৬) উপধারা (১)- এ বর্ণিত সুড়ঙ্গমুখের সর্বাধিক  পরিধি নির্ধারণ করিয়া এবং প্রয়োজনীয় শর্ত আরোপ সাপেক্ষে যে কোনো কারখানাকে বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানাকে এই ধারার যে কোনো বিধির আওতা হইতে রেহাই দিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

ধারা-৪২। বিস্ফোরক বা দাহ্য ধোঁয়া, গ্যাস ইত্যাদি :

(১) কোনো কারখানায় কোনো বিশেষ ধরনের দ্রব্য উত্পাদনের কারণে সৃষ্ট ধূলা, গ্যাস বাষ্প যদি এমন মাত্রার বা এমন প্রকৃতির হয় যে, আগুনের ষ্পর্শে উহাতে বিস্ফোরণ ঘটিতে পারে, তাহা হইলে উক্ত বিস্ফোরণ পরিহারের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে-

(ক) উত্পাদন প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত সংশ্লিষ্ট যন্ত্র বা কলকব্জা কার্যকর ভাবে ঘেরা দিয়া রাখা;

(খ) উত্ক্ষপ্ত ধূলা, গ্যাস, ধোঁয়া বা বায়ু অপসারণ বা পুঞ্জীভূত হওয়ার প্রতিরোধক ব্যবস্থা;

(গ) আগুন জ্বলিয়া উঠার যাবতীয় উপায় বন্ধ করা বা কার্যকরভাবে ঘেরা দেওয়া।

(২) কোনো কারখানায় কোনো বিশেষ ধরনের দ্রব্য উত্পাদনের কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি, যাহাতে উপধারা (১)-এ বর্ণিত বিস্ফোরণের আশংকা রহিয়াছে, যদি উক্ত বিস্ফোরণের ধকল সামলাইবার মতো মজবুত করিয়া নির্মিত না হইয়া থাকে, তাহা হইলে উক্ত বিস্ফোরণের প্রতিক্রিয়া সীমিত করার উদ্দেশ্যে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিতে হইবে।

(৩) কোনো কারখানায় কোনো যন্ত্র বা কলকব্জা স্বাভাবিক বায়ুচাপের অতিরিক্ত চাপ সম্বলিত কোনো বিস্ফোরক গ্যাস বাষ্প ধারণ করিতে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়া উহার মুখ খোলা যাইবে না-

(ক) উহাতে সংযুক্ত কোনো পাইপের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পূর্বে অভ্যন্তরস্থ গ্যাস বা বাষ্পের চাপমাত্রা হ্রাস করিয়া স্বাভাবিক বায়ুচাপের সমপর্যায়ে আনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ;

(খ) পাইপের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পূর্বে অভ্যন্তরস্থ গ্যাস বা বাষ্পের চাপমাত্রা হ্রাস করিয়া স্বাভাবিক বায়ুচাপের সমপর্যায়ে আনার  জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ;

(গ) পাইপের মুখ আলগা হইয়া গেলে উহা দৃঢ়ভাবে না আটকানো পর্যন্ত উহাতে কোনো দাহ্য বা বিস্ফোরক গ্যাস বা বাষ্পের    প্রবেশ নিরোধের জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ।

    তবে শর্ত এই যে, খোলা জায়গায় প্রতিষ্ঠিত যন্ত্র বা কলকব্জার বেলায় এই উপধারার বিধান প্রযোজ্য নহে।

(৪)  কোনো কলকব্জা, ট্যান্ক বা নৌযানে যদি কোনো দাহ্য বা বিস্ফোরক পদার্থ ভর্তি থাকে, তাহা হইলে উক্ত পদার্থসমূহের দহন বা বিস্ফোরণ ক্ষমতা বিনষ্টের উপযোগী করিয়া উহাকে শীতল না করা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট যন্ত্র বা কলকব্জা কোনো, কারখানায় ওয়েল্ডিং, ব্রেজিং, শোল্ডারিং বা শাটিং-এর কাজে ব্যবহার করা যাইবে না।

(৫) প্রয়োজন মনে করিলে সরকার যথাবিহিত শর্ত আরোপ সাপেক্ষে কোনো কারখানা বা বিশেষ শ্রেণীর কারখানাকে এই ধারার বিধান হইতে রেহাই দেওয়ার উদ্দেশ্যে বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

 

পঞ্চম অধ্যায়

কল্যাণমূলক ব্যবস্থা

ধারা-৪৩। ধৌতকরণের সুযোগ :

(১) প্রত্যেক কারখানায় -

(ক) তথাকার শ্রমিকদের ধৌতকরণ এবং গোসল করার পর্যাপ্ত ও উপযুক্ত সুযোগের ও তাহা রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে;

(খ) পুরুষ ও মহিলা শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য পৃথক ও পর্যাপ্ত পর্দা দেওয়া ধৌতাগারের ব্যবস্থা থাকিতে হইবে; এবং

(গ) ধৌতাগার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখিতে এবং সেখানে সহজে যাওয়া আসার ব্যবস্থা থাকিতে হইবে।

(২) যে কোনো কারখানায় বা যে কোনো শ্রেণীর  কারখানায় বা উত্পাদন প্রক্রিয়ার বেলায় সরকার সুষ্ঠু ধৌতকরণ সুবিধার মান নির্ধারণ করিয়া দিতে পারিবেন।

ধারা-৪৪। প্রাথমিক চিকিত্সার সরঞ্জামাদি :

(১)  প্রত্যেক কারখানায় নির্দিষ্ট সরঞ্জামাদিসহ প্রাথমিক চিকিত্সার বাক্স সহজগম্য স্থানে কাজ চলার সময়ে মওজুদ রাখিতে হইবে এবং উক্ত প্রাথমিক চিকিত্সার বাক্সের সংখ্যা কারখানায় নিযুক্ত প্রতি দেড় শত শ্রমিকের জন্য অন্যূন একটি করিয়া হইতে হইবে।

(২)  উপধারা (১)-এ বর্ণিত বাক্সে নির্ধারিত সরঞ্জামাদি ছাড়া অন্য কিছু রাখা  যাইবে না এবং প্রাথমিক চিকিত্সার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে উহা রাখিত হইবে এবং কারখানার কাজ চলার সময় সর্বক্ষণের জন্য উক্ত ব্যক্তিকে সেখানে উপস্থিত থাকিতে হইবে।

(৩)  কারখানায় প্রতিটি কাজের ঘরে প্রাথমিক চিকি৭সার বাক্সে ভারপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম লিখিয়া নোটিশের আকারে লটকাইয়া রাখিতে হইবে এবং সহজে সনাক্ত করার উপযোগী একটি ব্যাজ ঐ ব্যক্তির পরিধানে থাকিতে হইবে।

(৪) পাঁচ শত বা ততোধিক সংখ্যক শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছে, এইরূপ প্রত্যেক কারখানায় নির্দিষ্ট চিকিত্সা সরঞ্জামাদিসহ      নির্ধারিত আকারের একটি এম্বুলেন্স কক্ষ বা ডিসপেন্সারী নির্ধারিত সরঞ্জামাদিসহ নির্ধারিত চিকিত্সক ও নার্সিং স্টাফের তত্ত্বাবধানে থাকিতে হইবে।

ধারা-৪৫। ক্যান্টিন :

(১) সাধারণত আড়াই শতাধিক শ্রমিক নিযুক্ত রহিয়াছে, এইরূপ কারখানায় শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য একটি উপযুক্ত ক্যান্টিনের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ দিয়া সরকার বিধিমালা প্রণয়ন করিতে পারিবেন।

(২) পূর্বোল্লিখিত ক্ষমতার ব্যতিক্রম না ঘটাইয়া উপরোক্ত বিধিমালায় নিম্নোক্ত ব্যবস্থার নির্দেশ থাকিতে পারে-

(ক) ক্যান্টিন চালু করার সর্বশেষ তারিখ;

(খ) ক্যান্টিনের নির্মাণ, স্থান সংকুলান, আসবাবপত্র এবং অন্যান্য সরঞ্জামের মান;

(গ) পরিবেশনের জন্য খাদ্যদ্রব্যসমূহ এবং উহার মূল্যঃ

(ঘ) ক্যান্টিনের জন্য একটি পরিচালনা কমিটি গঠন এবং উহাতে  শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব; এবং

(ঙ) নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে অনুচ্ছেদ (গ)- এ বর্ণিত বিষয়ে বিধিমালা প্রণয়নের জন্য চীফ ইন্সপেক্টরকে ক্ষমতা প্রদান।

Navigation

[0] Message Index

[#] Next page

[*] Previous page

Go to full version