শল্য চিকিত্সা / সার্জারী

Author Topic: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী  (Read 8216 times)

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
শল্য চিকিত্সা

যে সকল রোগ ঔষধের মাধ্যমে সারানো সম্ভব নয় সে সকল রোগের চিকিত্‌সার ক্ষেত্রে আমরা শল্য চিকিত্সা বা অপারেশনের ওপর নির্ভর করি৷ শরীরের কোনো অংশ যন্ত্রপাতির মাধ্যমে কেটে যে চিকিত্‌সা দেওয়া হয় সেটাই শল্য  চিকিত্সা৷ আগেকার দিনে অপারেশন বা শল্য চিকিত্সা বললে লোকজন ভীত হয়ে পড়তো৷ কিন্তু বর্তমানে উন্নত প্রযুক্তির কারণে অপারেশনের বা শল্য চিকিত্সার জটিলতা অনেক খানি কমে এসেছে৷

আগে শল্য চিকিত্‌সা কে দুই ভাগে ভাগ করা হতো:

১.বড় ধরনের অপারেশন: যেমন-এ্যাপেনডিসাইটিস, পিত্তথলির পাথর, মূত্রথলির পাথর ইত্যাদি৷
২.ছোট ধরনের অপারেশন: যেমন-ফোঁড়া কাটা কিন্তু বর্তমানে আরেকটি উন্নত ধরনের অপারেশন পদ্ধতি বের হয়েছে তা হলো মাইক্রো সার্জারি৷ এই অপারেশনের সবথেকে বড় সুবিধা হলো রক্তপাত কম হয়৷ প্রস্টেট অপারেশন, পিত্তথলির পাথর ইত্যাদি অপারেশন বর্তমানে মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে করা যায়৷যেগুলো সাধারনত ওষুধের মাধ্যমে সারানো সম্ভব নয় এবং অপারেশন এর মাধ্যমে চিকিত্‌সা করতে হয় ৷

এরকম কিছু রোগ এবং তার চিকিত্‌সা পদ্ধতি নিম্নে দেওয়া হলো :
১.     এ্যাপেনডিসাইটিস
২.     গ্যাংগ্রিন
৩.     বার্জার রোগ
৪.     পাইলস বা অর্শ রোগ
৫.     হার্নিয়া
৬.     হাইড্রোসিল
৭.     সিজারিয়ান অপারেশন


Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #1 on: October 22, 2011, 12:57:47 PM »
অ্যাপেনডিসাইটিস
অ্যাপেনডিক্স কথার অর্থ হল উদ্বৃত্ত অংশ৷ পরিপাকতন্ত্রের একটি ছোট বাড়তি অংশ আছে, যাকে বলা হয় অ্যাপেনডিক্স৷ পেটের ডানপাশের নিচের অংশে এটির অবস্থান৷ এই বাড়তি অংশটি বের হয় ক্ষুদ্রান্ত্রের গা ঘেঁষে৷ অ্যাপেনডিক্স শরীরের কোনো উল্লেখযোগ্য উপকার করে না৷ কিন্তু এটি নানা রকম জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে৷ কোনো কারণে অ্যাপেনডিক্সে প্রদাহ হলে তাকে বলা হয় অ্যাপেনডিসাইটিস৷

কারণ
অ্যাপেনডিসাইটিস হওয়ার কোনো যথার্থ কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি৷

লক্ষণ
হঠাত্‌ করেই এ রোগের উত্‌পত্তি হয়৷পেটব্যথা, জ্বর ও বমি-এ তিনিটি এ রোগের প্রধান উপসর্গ৷ পেটের ব্যথা শুরু হয় নাভির চারপাশ থেকে, তারপর ব্যথা আস্তে আস্তে সরে গিয়ে তলপেটের ডান দিকের নিচের অংশে গিয়ে স্থির হয়ে যায়৷ পেটের ডানদিকের নিচের অংশে চাপ দিলে রোগী তীব্র ব্যথা অনুভব করেন৷

পরীক্ষা-নিরীক্ষা
প্রস্রাব ও রক্ত পরীক্ষা করলে রোগ নির্ণয় সহজ হয়৷ প্রদাহের জন্য রক্তে শ্বেতকণিকার সংখ্যা বেড়ে যায়৷ পুরুষদের অ্যাপেনডিসাইটিস রোগ নির্ণয় করা সহজ কিন্তু মেয়েদের ক্ষেত্রে একটু জটিল৷ কিশোরী, যুবতী অথবা মধ্যবয়সী মেয়েদের ডানদিকের ওভারি বা ডিম্বাধারে প্রদাহ এবং ডিম্ববাহী নলের প্রদাহের জন্য একই রকম উপসর্গ দেখা দিতে পারে৷ তাই মেয়েদের অ্যাপেনডিসাইটিস রোগ নির্ণয়ের সময় আলট্রাসনোগ্রাম করা দরকার হতে পারে৷

চিকিত্‌সা
অ্যাপেনডিসাইটিসের একমাত্র চিকিত্‌সা অপারেশন করে অ্যাপেনডিক্স কেটে ফেলা৷ অ্যাপেনডিক্স কেটে ফেলে দিলে শরীরের কোনো ক্ষতি হয় না৷

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #2 on: October 22, 2011, 12:58:38 PM »
গ্যাংগ্রিন বা পচা ঘা

গ্যাংগ্রিন অর্থ শরীরের কোনো অংশের পচনশীল ঘা৷ এটা সাধারণত ক্লোসটিডিয়া গ্রুপের বিভিন্ন জীবাণু দ্বারা ঘটে থাকে৷
gangreen.jpg
চিত্র:গ্যাংগ্রিন রোগে আক্রান্ত পা
চিত্র সুত্র-© ডি.নেট


কারণ
রক্ত আমাদের দেহের প্রতিটি অংশ বঁাচিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানগুলো সরবরাহ করে৷ শরীরে কোনো অংশে রক্ত সরবরাহ কমে গেলে বা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেলে আক্রান্ত স্থানের কোষ বা কলাগুলোর মৃতু্য ঘটে৷ আঘাতজনিত কারণে দেহের কোনো অংশের রক্তনালী ছিড়ে গেলে ঐ অংশে পচনশীল ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে৷ আবার কিছু কিছু রোগ, যেমন- ডায়ডবেটিস, বার্জার রোগ ইত্যাদিতে দেহের বিভিন্ন অংশে বিশেষ করে হাত পায়ে পচনশীল ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে৷ ভীর কোনো ক্ষত ময়লা মাটি, রোগজীবাণু ইত্যাদি দ্বারা আক্রান্ত হলে গ্যাস গ্যাংগ্রিন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে৷

প্রকারভেদ
পচনশীল ক্ষতকে ৩ ভাগে ভাগ করা যায় ৷
১. শুকনো গ্যাংগ্রিন
২. ভেজা গ্যাংগ্রিন
৩. গ্যাস গ্যাংগ্রিন

১. শুকনো গ্যাংগ্রিন

আক্রান্ত চামড়া শুকনো এবং কালো থাকে৷

সাধারণত ইনফেকশন থাকে না৷

খুব বেশি দুর্গন্ধ থাকে না৷

রোগের বিস্তার হয় ধীরে ধীরে ৷

ডায়বেটিস রোগীদের বেলায় বেশি দেখা যায়৷

২.ভেজা গ্যাংগ্রিন

    *      সূচনাতে আক্রান্ত স্থানের চামড়া লালচে এবং উষ্ঞ থাকে পরে তা ঠাণ্ডা এবং নীলাভ হয়ে যায়
    *     আক্রান্ত চামড়া ভিজে স্যঁাতস্যঁাতে থাকে৷
    *     ক্ষতস্থান থেকে বুঁদবুদ বের হতে পারে
    *     সাধারণত ইনফেকশন থাকে৷
    *     ক্ষতস্থান থেকে দুর্গন্ধ বের হবে
    *     রোগের বিস্তার হয় দ্রুত৷

 ৩. গ্যাস গ্যাংগ্রিন

    *     আক্রান্ত্ত স্থানের চামড়া লালচে এবং উষ্ঞ থাকে৷ চাপ দিলে ভেতর থেকে গরগরে অনুভুতি হয়৷
    *     ক্ষতস্থানে ইনফেকশন থাকে৷
    *     দুর্গন্ধ বের হয়৷
    *     সাধারণত যুদ্ধের সময় যে সকল বড় ধরনের ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং ক্ষতস্থান কাদামাটি দিয়ে অপরিষ্কার হয়ে পড়ে তখন ক্ষতস্থান জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে গ্যাস গ্যাংগ্রিন হয়৷
    *     দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রোগীর মৃতু্য হতে পারে৷

চিকিত্সা

চিকিত্সকের পরামর্শ নিতে হবে৷ প্রয়োজনীয় এ্যান্টিবায়েটিক চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী সেবন করতে হবে৷ গ্যাস গ্যাংগ্রিন হবার সম্ভাবনা থাকলে এ্যান্টিটক্সিন ইনজেকশন নিতে হবে৷ ক্ষতস্থান অপারেশনের মাধ্যমে কেটে বাদ দেবার প্রয়োজন হতে পারে৷ ডায়বেটিস রোগীদের পায়ের যত্ন নিতে হবে এবং ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে৷ কোন স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হলে ক্ষতস্থান পরিষ্কার রাখতে হবে৷ টিটেনাস প্রতিষেধক টিকা দিতে হবে৷ পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে৷
 

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

 তথ্যসূত্র :
ড্রাগ ডিরেক্টরি
 DAVIDSON’S Principles and Practice of Medicine
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #3 on: October 22, 2011, 12:59:18 PM »
বার্জার রোগ


এটি রক্তনালীর একটা রোগ৷ রক্ত আমাদের দেহের প্রতিটি অংশে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান বয়ে নিয়ে যায়৷ বার্জার রোগের ফলে রক্তনালীগুলো সরু হয়ে যায়৷ ফলে শরীরের ওই অংশের প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ হয় না৷ রোগ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে রক্ত সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায় এবং পচনশীল ক্ষত হয়৷
berger.jpg


কাদের আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বেশী

    * যারা অতিরিক্ত মাত্রায় ধূমপায়ী
    * পায়ের যত্নে সচেতনতার অভাব
    * যারা সবসময়ে খালি পায়ে চলাফেরা করে থাকেন
    * যাদের বয়স সাধারণত ৩০-৪০ বছরের মধ্যে
    * অধূমপায়ীদের সাধারণত বার্জার রোগ হয় না৷ তবে কখনো কখনো অধূমপায়ীদের এরোগ হয়ে থাকে৷ সেক্ষেত্রে রোগী নিজে ধূমপান না করলেও রোগীর আশেপাশের লোকজন ধূমপান করায় সে পরোক্ষ ধূমপানের শিকার৷

রোগের ক্রমবিকাশ
বার্জার রোগের প্রকাশ ঘটে অত্যন্ত ধীর প্রক্রিয়ায়৷ উপসর্গগুলো ধীরে ধীরে তীব্রতর হতে থাকে৷ প্রাথমিক অবস্থায় অনেকক্ষণ হাটার পর হঁাটুর পিছনের পেশীগুলোতে ব্যথা হয়৷ হঁাটার সময় শরীরের যেহেতু পরিশ্রম বেশি হয় তাই তখন শরীরে বাড়তি রক্ত সরবরাহের দরকার হয়৷ সরু হয়ে যাওয়া রক্তনালী চাহিদা অনুযায়ী রক্ত সরবরাহ করতে পারে না৷ রোগ যত বাড়তে থাকে রোগীর চলাফেরাও ততো কমতে থাকে৷ তখন রোগী ব্যথা কমানোর জন্য আগের তুলনায় বেশি বিশ্রাম গ্রহণ করে৷ ক্রমে ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে বিশ্রামরত অবস্থাতেও ব্যথা হয়৷ কখনো কখনো পায়ের বুড়ো আঙুলের বা অন্য কোনো আঙুলের মাথা কালো হয়ে যায়৷ এটা মূলত পচনশীল ক্ষত৷ রক্ত সরবরাহের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে এটা ঘটে৷

উপসর্গ
ব্যথা : প্রাথমিক অবস্থায় অনেকক্ষণ হঁাটার পর হঁাটুর পিছনের পেশীগুলোতে ব্যথা হয়৷ কিছু সময় বিশ্রাম নিলে ব্যথা চলে যায়৷ক্রমে ব্যথা বাড়তে থাকে এবং পরে বিশ্রামরত অবস্থাতেও ব্যথা হয়৷ রোগের চূড়ান্ত পর্যায়ে এমনটি ঘটে৷

ক্ষত: কখনো কখনো পায়ের বুড়ো আঙুলের বা অন্য কোন আঙুলের মাথা কালো হয়ে ক্ষতের সৃষ্টি হয়৷ রক্ত সরবরহের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে এটা ঘটে৷এই সকল স্থানের বোধ শক্তি ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যায়৷

চিত্র:বাজাᐂর রোগে আক্রান্ত পা
চিত্র সুত্র-© ডি.নেট

পরীক্ষা নিরীক্ষা
 

    *      পায়ের বিভিন্ন স্থানের নাড়ীর স্পন্দন অনুভব করা
    *      বার্জার পরীক্ষা৷
     

চিকিত্সা

    * রোগীকে ধূমপান সম্পূর্ণ পরিহার করতে হবে৷
    * পায়ের যত্ন নিতে হবে৷
    * খালি পায়ে হঁাটা যাবে না৷
    * খোলামেলা আরামের জুতা পরতে হবে৷
    * মোজা সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে৷
    * খুব সাবধানে নোখ কাটতে হবে৷ পায়ের রঙের কোনো পরিবর্তন দেখলে চিকিত্‌সকের কাছে যেতে হবে৷
    * পানি দিয়ে পরিষ্কার করে পা ধুতে হবে৷
    * সার্জারির ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র :
ড্রাগ ডিরেক্টরি

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #4 on: October 22, 2011, 01:00:05 PM »
পাইলস
পাইলস অতিপরিচিত একটি রোগ, যা অর্শ্ব নামেও পরিচিত৷

কাদের বেশি হয়
এটাকে বলা হয় সভ্যতার রোগ৷ অর্থাত্‌ এ রোগটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শহুরে জীবনযাপনে অভ্যস্ত লোকের মাঝেই বেশি দেখা যায়৷ তার প্রধান কারণ, তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি- যেমন কম পানি, কম শাকসবজি, বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং সময়মতো মলত্যাগ না করা৷ ওপরে  উল্লেখিত জীবনযাপনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দিতে হয়৷ ফলে মলদ্বারের চারদিকে অবস্থিত রক্তনালী ও মাংসপিণ্ড ফুলে গিয়ে পাইলস সৃষ্টি করে৷ গর্ভাবস্থায় এ রোগের প্রকোপ বাড়ে৷

লক্ষণ
পায়খানার সময় বিশেষ করে কষা পায়খানার সময় পাইলসের রক্তনালী ছিঁড়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়৷ পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত, টাটকা রক্তক্ষরণই পাইলসের প্রধান ও প্রাথমিক লক্ষণ৷ তবে ধীরে ধীরে চিকিত্‌সার অভাবে এ রোগ জটিল আকার ধারণ করে ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে৷ যেমন-
ক. পাইলস মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসা,
খ. বের হওয়ার পর ভেতরে না প্রবেশ করা,
গ. ব্যথা ও ইনফেকশন দেখা দেয়া ইত্যাদি৷

চিকিত্‌সা
উপসর্গ বা জটিলতা দেখা দিলে চিকিত্‌সা জরুরি৷
প্রথমিক পর্যায় অর্থাত্‌ শুধু শক্ত পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত রক্তক্ষরণ হলে

    * পায়খানা নরম ও নিয়মিত রাখুন৷
    * প্রয়োজন হলে ইসুবগুলের ভুষি বা লেকজেটিভ খান৷
    * প্রচুর পানি ও শাকসবজি খান, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন৷
    * নিয়মিত মল ত্যাগ করুন৷

জটিল আকার ধারণ করলে অর্থাত্‌ পাইলস বেরিয়ে আসলে এবং উপরের চিকিত্‌সা যদি কাজ না করে তবে -

    * ইনজেকশন
    * ব্যান্ড লাইগেশন
    * অপারেশন ইত্যাদি চিকিত্‌সা গ্রহণ করতে হবে৷

জটিল পাইলসের ক্ষেত্রে ব্যান্ড লাইগেশন ও ইনজেকশন একটি কার্যকর সফল চিকিত্‌সা পদ্ধতি৷ এটা ব্যথামুক্ত এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না৷

উপদেশ
পাইলস রোগের রোগীরা সবচেয়ে বেশি অপচিকিত্‌সা বা ভুল চিকিত্‌সার শিকার হন৷ কারণ বেশিরভাগ রোগী হাতুড়ে চিকিত্‌সকের দ্বারা এসিড জাতীয় অত্যন্ত ক্ষতিকর জিনিস দিয়ে চিকিত্‌সা করে থাকেন৷ যার ফলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা নিয়ে রোগীরা চিকিত্‌সকের দ্বারস্থ হন৷ যেমন :

    * পায়খানার রাস্তায় ঘা হওয়া
    * মলদ্বার চিকন হয়ে যাওয়ার ফলে মলত্যাগে প্রচণ্ড ব্যথা হয়
    * মলদ্বারে ক্যান্সার হতে পারে
    * মলদ্বারের ক্যান্সারকে পাইলস মনে করে ভুল চিকিত্‌সা করা ইত্যাদি৷

অতএব পাইলস সন্দেহ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্‌সকের শরণাপন্ন হোন ও জটিলতা কমান৷
 

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #5 on: October 22, 2011, 01:00:45 PM »
হার্নিয়া

হার্নিয়া আমাদের দেশে সচরাচর দেখা যায় এমন একটি পরিচিত রোগ৷ আমাদের পেটের ভিতরে খাদ্যনালী থাকে যা মুখ থেকে পায়ু পর্যন্ত বিস্তৃত৷ সাধারণত খাদ্যনালী বিশ থেকে ত্রিশ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়৷ হার্নিয়ার ক্ষেত্রে পেটের কিছু দুর্বল অংশ দিয়ে ক্ষুদ্রান্ত্রের অংশ বিশেষ অণ্ডথলিতে চলে আসে৷ তখন কুচকি এবং অণ্ডথলি অস্বাভাবিক ফুলে যায় এবং ব্যথা হয়৷

কারণ
আমাদের পেটের কিছু অংশ আছে যেগুলো আশেপাশের অংশ থেকে অপেক্ষাকৃত দুর্বল থাকে৷ অনেকের জণ্মগতভাবে এ অংশগুলো দুর্বল থাকে৷ পেটের ভিতরের চাপ যদি বেশি হয়, যেমন-অনেক দিনের পুরানো হঁাচি কাশি বা কোষ্ঠকাঠিন্য আছে, তাদের বেলাতেও ক্ষুদ্রান্ত্র এই দুর্বল অংশগুলো দিয়ে বেরিয়ে আসতে পারে৷ উদর এবং উরুর সংযোগ স্থলে হার্নিয়া হতে পারে৷ এটা সাধারণত পুরুষদের হয়৷ মহিলাদের বেলাতে উরুর ভেতরের দিকে স্ফীত দেখা যায়৷ নাভির চারপাশে বা কোনো একপাশে ফুলে যায়৷ এটাকে নাভির হার্নিয়া বলা হয়৷ পূর্বে অস্ত্রোপাচার করা হয়েছে এমন জায়গাতেও হার্নিয়া হতে পারে৷ এটাকে ইনসিশনাল হার্নিয়া বলা হয়৷ ভারী জিনিস তুলতে গিয়ে হতে পারে৷ পুরুষদের প্রস্টেটের অসুখ, মুত্রাশয়ের অসুখের কারণে হতে পারে৷ চাপ দিয়ে প্রস্রাব করলে হতে পারে৷ প্রসবের পর ভারি কাজ বা অনবরত সিঁড়ি ভাঙলে হার্নিয়া হতে পারে৷

লক্ষণ

    * কুচকি বা অণ্ডথলি ফুলে যায়৷
    * নাভির একপাশে বা চারপাশে ফুলে যায়৷
    * উরুর গোড়ার ভেতরের দিকে ফুলে যায়৷
    * আগে অপারেশন করা হয়েছে এমন কাটা জায়গা ফুলে যায়৷

রোগের শুরুতে ফুলে যাওয়া অংশে ভিতরের জিনিসপত্র চাপ দিয়ে পেটের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া যায়৷ পরবর্তীতে অবস্থা জটিলতর হলে এমন সুযোগ আর থাকে না৷ খাদ্যনালী আমাদের দেহের পরিপাক কার্য করে থাকে৷ হার্নিয়াকে অবহেলা করা হলে দুর্বল স্থান দিয়ে বেরিয়ে আসা খাদ্যনালী আটকে যেতে পারে৷ তখন প্রচণ্ড ব্যথা, বমি বমি ভাব ও বমির উপসর্গ দেখা দেয়৷ আরো বিলম্ব করা হলে আটকে যাওয়া খাদ্যনালীর অংশে রক্ত সরবরাহ বিঘ্নিত হয়ে তাতে গ্যাংগ্রিন হতে পারে৷ এসব ক্ষেত্রে অবহেলা করা উচিত নয়৷ তখন জরুরি অপারেশনের করতে হবে৷

চিকিত্সা
অবহেলা না করে দ্রুত সার্জারির ডাক্তারের সঙ্গে যোগযোগ করুন৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলুন৷

 

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

তথ্যসূত্র -
ড্রাগ ডিরেক্টরি
 

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #6 on: October 22, 2011, 01:01:27 PM »
 হাইড্রোসিল

হাইড্রো শব্দের অর্থ পানি বা তরল পদার্থ৷ এ ক্ষেত্রে অণ্ডকোষের ভেতরে শুক্রাশয়ের চারপাশে তরল পদার্থ জমা হয়৷ শুক্রাশয়ের চারপাশে টিউনিকা ভ্যাজাইনালিস নামক একটা থলি থাকে৷ তরল পদার্থ এ থলির মাঝে জমা হয়ে অণ্ডকোষের আকৃতি বড় করে৷

কারণ
কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জানা যায়নি৷ ছোট বাচ্চাদের হাইড্রোসিল হতে পারে৷ সদ্যজণ্মানো বাচ্চাদের অনেক সময় পেটে এবং অণ্ডথলিতে একটা সংযোগ থাকে৷ এই সংযোগ পথ সাধারণত জণ্মের আগে বা জণ্মের পর পরই বন্ধ হয়ে যায়৷ যদি কোনো কারণে বন্ধ না হয় তবে বাচ্চাদের হাইড্রোসিল হয়৷ বড়দের হাইড্রোসিল সাধারণত অণ্ডথলিতে আঘাত বা অপারেশনজনিত কারণে হয়ে থাকে৷ অনেক সময় রোগ জীবাণু আক্রমণ দ্বারাও হতে পারে৷ যে কোনো বয়সের পুরুষের হাইড্রোসিল হতে পারে৷ তবে ৪০ বছরের অধিক বয়সের পুরুষদের বেশি হয়৷

লক্ষণ

    * অণ্ডকোষ ফুলে যায়৷ ডান বা বাম যে কোনো একপাশ বা দুপাশও ফুলে যেতে পারে৷
    * কোনো প্রকার ব্যথা থাকে না৷
    * অণ্ডকোষটি তরলের মধ্যে ঢুকে থাকে বলে পৃথক করা যায় না৷

ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা
১. ফ্লাকচুয়েশন পরীক্ষা
২. আলোক পরীক্ষা

চিকিত্‌সা
অবহেলা না করে দ্রুত সার্জারি ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে৷

জটিলতা

    * রোগ জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়ে পুঁজ হয়ে যেতে পারে৷
    * হাইড্রোসিলের ভিতরে পানির বদলে অনেক সময় রক্ত চলে আসে৷
    * শক্ত হয়ে যায়৷
    * পুরুষের বাবা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে যেতে পারে৷
       

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷

Offline Sultan Mahmud Sujon

  • Administrator
  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 2674
  • Sultan Mahmud Sujon, Sr. Admin Officer
    • View Profile
    • Helping You Office Operation & Automation Management
Re: শল্য চিকিত্সা / সার্জারী
« Reply #7 on: October 22, 2011, 01:02:09 PM »
সিজারিয়ান সেকশন বা অপারেশন
পেটের সামনের দিকের চামরা ও জরায়ু অপারেশনের মাধ্যমে কেটে জীবিত বাচ্চা ও গর্ভফুল বের করে আনার পদ্ধতিকে সিজারিয়ান সেকশন বলে৷

কাদের সিজারিয়ান প্রয়োজন

    * কোমরের হাড়ের সমস্যা - জণ্মগত বা ভেঙে যাওয়ার কারণে বা হাড়ে ক্যানসারজনিত কারণে৷
    * গর্ভস্থ শিশু যদি কোমরের হাড়ের বহির্পথের তুলনায় বড় হয়৷
    * গর্ভবতীর শ্রোণীদেশ যদি খুব ছোট হয়৷
    * গর্ভস্থ শিশু যদি জরায়ুতে সঠিক ভাবে অবস্থান না করে৷
    * গর্ভবতীর যদি জরায়ু সংক্রান্ত কোনো সমস্যা থাকে৷
    * গর্ভের ফুল যদি ঠিকভাবে অবস্থান না করে৷
    * গর্ভবতীর যদি  প্রি-একলামসিয়া থাকে৷
    * গর্ভবতীর যদি আগে কখনো সিজারিয়ান সেকশন করা হয়ে থাকে বা জরায়ুতে কোনো অপারেশন থাকে৷
     

ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্‌সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না

তথ্য সংগ্রহ:
নারী,
ডা.সুমন চৌধুরী