পাইলস
পাইলস অতিপরিচিত একটি রোগ, যা অর্শ্ব নামেও পরিচিত৷
কাদের বেশি হয়
এটাকে বলা হয় সভ্যতার রোগ৷ অর্থাত্ এ রোগটি উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের শহুরে জীবনযাপনে অভ্যস্ত লোকের মাঝেই বেশি দেখা যায়৷ তার প্রধান কারণ, তাদের জীবনযাপন পদ্ধতি- যেমন কম পানি, কম শাকসবজি, বেশি চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এবং সময়মতো মলত্যাগ না করা৷ ওপরে উল্লেখিত জীবনযাপনের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং মলত্যাগের সময় অতিরিক্ত চাপ দিতে হয়৷ ফলে মলদ্বারের চারদিকে অবস্থিত রক্তনালী ও মাংসপিণ্ড ফুলে গিয়ে পাইলস সৃষ্টি করে৷ গর্ভাবস্থায় এ রোগের প্রকোপ বাড়ে৷
লক্ষণ
পায়খানার সময় বিশেষ করে কষা পায়খানার সময় পাইলসের রক্তনালী ছিঁড়ে যায় এবং রক্তক্ষরণ হয়৷ পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত, টাটকা রক্তক্ষরণই পাইলসের প্রধান ও প্রাথমিক লক্ষণ৷ তবে ধীরে ধীরে চিকিত্সার অভাবে এ রোগ জটিল আকার ধারণ করে ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিতে পারে৷ যেমন-
ক. পাইলস মলদ্বারের বাইরে বের হয়ে আসা,
খ. বের হওয়ার পর ভেতরে না প্রবেশ করা,
গ. ব্যথা ও ইনফেকশন দেখা দেয়া ইত্যাদি৷
চিকিত্সা
উপসর্গ বা জটিলতা দেখা দিলে চিকিত্সা জরুরি৷
প্রথমিক পর্যায় অর্থাত্ শুধু শক্ত পায়খানার সময় ব্যথামুক্ত রক্তক্ষরণ হলে
* পায়খানা নরম ও নিয়মিত রাখুন৷
* প্রয়োজন হলে ইসুবগুলের ভুষি বা লেকজেটিভ খান৷
* প্রচুর পানি ও শাকসবজি খান, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করুন৷
* নিয়মিত মল ত্যাগ করুন৷
জটিল আকার ধারণ করলে অর্থাত্ পাইলস বেরিয়ে আসলে এবং উপরের চিকিত্সা যদি কাজ না করে তবে -
* ইনজেকশন
* ব্যান্ড লাইগেশন
* অপারেশন ইত্যাদি চিকিত্সা গ্রহণ করতে হবে৷
জটিল পাইলসের ক্ষেত্রে ব্যান্ড লাইগেশন ও ইনজেকশন একটি কার্যকর সফল চিকিত্সা পদ্ধতি৷ এটা ব্যথামুক্ত এবং রোগীকে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় না৷
উপদেশ
পাইলস রোগের রোগীরা সবচেয়ে বেশি অপচিকিত্সা বা ভুল চিকিত্সার শিকার হন৷ কারণ বেশিরভাগ রোগী হাতুড়ে চিকিত্সকের দ্বারা এসিড জাতীয় অত্যন্ত ক্ষতিকর জিনিস দিয়ে চিকিত্সা করে থাকেন৷ যার ফলে পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা নিয়ে রোগীরা চিকিত্সকের দ্বারস্থ হন৷ যেমন :
* পায়খানার রাস্তায় ঘা হওয়া
* মলদ্বার চিকন হয়ে যাওয়ার ফলে মলত্যাগে প্রচণ্ড ব্যথা হয়
* মলদ্বারে ক্যান্সার হতে পারে
* মলদ্বারের ক্যান্সারকে পাইলস মনে করে ভুল চিকিত্সা করা ইত্যাদি৷
অতএব পাইলস সন্দেহ হলে বিশেষজ্ঞ চিকিত্সকের শরণাপন্ন হোন ও জটিলতা কমান৷
ঔষুধ সেবন ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে রেজিষ্টার চিকিত্সকের পরামর্শ নিন৷ অন্যথায় কোন সমস্যার জন্য ডি.নেট দায়ী থাকবে না৷