বাচ্চাদের ওরাল থ্রাশ হলে কি করবেন?

Author Topic: বাচ্চাদের ওরাল থ্রাশ হলে কি করবেন?  (Read 845 times)

Offline farjana aovi

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 121
  • Test
    • View Profile
বাচ্চাদের মধ্যে বিশেষত নবজাতক শিশুদের মধ্যে একটা রোগ প্রায়শই দেখা যায় যেটি হচ্ছে ওরাল থ্রাশ। বাংলায় অনেকে এই রোগটাকে ‘দুধ ঘা’ বলে থাকেন। এই রোগটি হলে শিশুর মুখের ভিতর, জিহ্বায় আর ঠোঁটের আশে পাশে সাদা সাদা একটা পড়ত মত জমে যায়। দেখে মনে হয় যেন জিহ্বার উপর দুধের সর জমে আছে। এজন্যই আমাদের মা খালারা এই রোগটাকে দুধ ঘা বলে থাকেন। আর নবজাতক থেকে শুরু করে ছয় মাস বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে রোগটি খুবই কমন। যদিও শিশুদের জন্য এই রোগটি সেরকম মারাত্নক কিছু নয়। তারপরও ছোট শিশুদের জন্য এটি যথেষ্ঠ বিরক্তিকর আর আনকমফোর্টেবল হয়ে যায়। তাই যতটা দ্রুত সম্ভব এই রোগের চিকিৎসা শুরু করে দেয়া উচিত।

ওরাল থ্রাশের কারণ

থ্রাশ বা দুধ ঘায়ের জন্য দায়ী মূলত ক্যানডিডা নামক একটি ছত্রাক। এই ছত্রাক বাচ্চাদের মুখের মধ্যেই থাকে। বাচ্চার শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভাল হলে আর মুখের মধ্যে গুড ব্যাক্টেরিয়া থাকলে এ জাতীয় ছত্রাক সাধারণত আক্রমণ করতে পারে না। কিন্তু কোন কারণে বাচ্চার ইমিউন সিস্টেম দূর্বল হয়ে গেলে তখন এই ছত্রাক আক্রমণ করে। এছাড়াও কোন অসুখের কারণে বাচ্চাকে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হলেও এই রোগ হতে পারে। কারণ কিছু কিছু নির্দিষ্ট অ্যান্টিবায়োটিক আছে যেগুলো খেলে বাচ্চাদের শরীরের স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়ার সংখ্যা কমে যায়। ফলে বাচ্চার ইমিউন সিস্টেমের ওপর বিরূপ  প্রভাব পড়ে। শুধু তাই নয়। বুকের দুধ খাওয়ান এমন মায়েরাও কিছু কিছু অ্যান্টিবায়োটিক খেলে তা বুকের দুধের মাধ্যমে বাচ্চার শরীরে মিশে বাচ্চার ইমিউন সিস্টেম দূর্বল করে দেয়।
শিশুদের মধ্যে ওরাল থ্রাশের লক্ষণ
শিশুদের মধ্যে ওরাল থ্রাশের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায়। ছত্রাকের আক্রমণের ভয়াবহতার উপর লক্ষণগুলো কম বেশি নির্ভর করে। তবে সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলো হল-
১) শিশুদের জিহ্ববা, ঠোঁট, গালের ভিতর আর গলার কাছে সাদা সাদা একটা আস্তরণ পড়ে। এই আস্তরণগুলো দেখে মনে হয় যেন একটু ঘন দুধ জিহ্ববার উপর লেগে আছে। কিন্তু হাত দিয়ে ঘষা দিলে এগুলো ওঠে না। বরং ঐ জায়গাটা লাল হয়ে যায়। আর বাচ্চারা অস্বস্তিতে কান্নাকাটি করে।
২) এই সাদা আস্তরণ হাত দিয়ে ঘষে তুলতে গেলে হালকা রক্তপাত হতে পারে।
৩) সাদা সাদা আস্তরণের চারপাশে লালচে দাগ দেখা যাতে পারে। যদি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে মা বাবারা দেরি করে ফেলে তাহলে এই ঘাগুলোতে আস্তে আস্তে ব্যথা বাড়তে পারে।
৪) ঠোঁটের  কোণায় ফেটে যেতে পারে। ফলে ছোট ছোট অবুঝ শিশুগুলো ঠিকমত মুখ হা করতে পারে না। আর মুখ খোলার সময় কান্নাকাটি করে।
৫) বাচ্চারা মায়ের বুকের দুধ টানা কমিয়ে দেয়। কখনো কখনো রোগ বেড়ে গেলে একেবারে দুধ টানা বন্ধ করে দেয়।

চিকিৎসা

শিশুদের ওরাল থ্রাশ হলে প্রথমত তার সবকিছু খুব যত্নের সাথে পরিষ্কার  পরিচ্ছন্ন করে রাখতে হবে। তার খেলনা থেকে শুরু করে আশেপাশে বিভিন্ন বস্তু যা শিশু মুখে দিতে পারে, খুব ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে। সেই সাথে মায়ের দুধের নিপল-ও সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে। এছাড়াও ওরাল থ্রাশ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়াই ভাল। ডাক্তার সাধারণত একটি অ্যান্টি ফাঙ্গাল ক্রীম দিবেন। নিয়মানুযায়ী এই ক্রীম ব্যবহার করলে সাধারণত এক সপ্তাহের মধ্যেই ওরাল থ্রাশ সেরে যাবে।
Farjana Islam Aovi
Senior Lecturer
Department of Pharmacy
Faculty of Allied Health Sciences
Daffodil International University
Dhaka, Bangladesh
Cell:+8801743272709
Email: farjana.pharm@diu.edu.bd