একজন তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও মাত্র ১৫ বছরেই তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যান
ঢাকার মহাখালী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী (হিসাব রক্ষক) লিয়াকত হোসেন জুয়েল ও তার স্ত্রী লাকি আক্তার চৌধুরীর নামে ফরিদপুরে রয়েছে শত কোটি টাকার সম্পদ।
লিয়াকত হোসেন জুয়েল ২০০৩ সালে স্বাস্থ্য বিভাগের (বক্ষব্যাধি হাসপাতালের) হিসাব সহকারী পদে চাকরিতে যোগদান করেন। মাত্র ১৫ বছরেই তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যান। এর সূত্র ধরে গত ৩১ জানুয়ারি তার সম্পদের হিসাব সংক্রান্ত বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
ফরিদপুরে লিয়াকতের পরিবারিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, লিয়াকত বেশ কয়েকটি আলিশান বাড়ি, গাড়ি, ব্রিক ফিল্ড, জমি, কার্গো জাহাজ ও বাগান বাড়ির মালিক। যেগুলো স্ত্রী, বোন, শ্বশুর বাড়ির লোকজন এবং পরিবারের সদস্যদের নামে-বেনামে করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ফরিদপুর জেলা সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার বিপুল পরিমাণ সম্পদ। শহরের টেপাখোলায় লক্ষীপুর এলাকায় আলিশান একটি বাড়ি রয়েছে তার স্ত্রীর নামে। একই এলাকার ফরিদাবাদে ‘মাহি মাহাদ ভিলা’ নামে রয়েছে অপর একটি দৃষ্টিনন্দন বাড়ি। সেখানে বসবাস করেন জুয়েলের শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
এছাড়া শহরতলীর বায়তুল আমান এলাকায় রয়েছে ৫ কাঠার একটি আবাসিক প্লট, সেটিও তার স্ত্রীর নামে।
সূত্র আরও জানায়, ফরিদপুরের নর্থ-চ্যানেল গোলডাঙ্গী চরে এলএন্ডএমএম নামে রয়েছে লিয়াকতের একটি ইট-ভাটা। এছাড়া সিএন্ডবি ঘাটের ওপারে নাজিরপুরে এ এন্ড আর ব্রিকস নামে আরেকটি ইটভাটা রয়েছে তার, সেটি বড় বোনের নামে করা হয়।
এছাড়াও, সিএন্ডবি ঘাটের বাজারে রয়েছে ১৭ শতাংশ জমিতে আরও একটি দোতলা ভবন। ফরিদপুর শহরের ভাটি লক্ষিপুরে ২৪ কাঠা জমিতে রয়েছে একটি বাগান বাড়ি। শহরতলীর আমদপুর এলাকার বেরহমপুর মৌজায় ১৭ বিঘা জমি রয়েছে, সেটিও তার স্ত্রীর নামে। ছোট কার্গো জাহাজ রয়েছে ১৬টি, যা তার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয়-স্বজনদের নামে রয়েছে।
পরিবারিকভাবে ব্যবহার করার জন্য বক্ষব্যাধি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির এই কর্মচারীর রয়েছে আধুনিক মডেলের প্রিমিও ব্রান্ডের তিনটি প্রাইভেটকার।
তার ভাই বেলায়েত জানান, গত ৩১ জানুয়ারি দুদক তাদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকেছিল। সেখানে তারা বিভিন্ন পারিবারিক তথ্য দিয়েছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরে ‘দুপ্রকে’র সাধারণ সম্পাদক হাসানউজ্জামান বলেন, সমাজে যারা অসৎভাবে অর্থ উপার্জন করেছে তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা দরকার। কারণ ওই দুষ্ট চক্রকে আটক করতে না পারলে রাষ্ট্র ও সমাজ ক্ষতিগ্রস্থ হবে।
তিনি বলেন, একজন হিসাবরক্ষক হয়েও তার এতো সম্পদ কিভাবে হলো সেটাই সবার প্রশ্ন।