সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান , হবিগঞ্জ।
১ দিনের ট্যুর এর জন্য খুব সুন্দর স্পট। সকালে গিয়ে রাতে খুব সহজে ফিরে আসা যায়।
সাতছড়ি এর উদ্দেশ্যে আমাদের যাত্রা র সময় ছিল সকাল ৬.৩৫ মিনিট। কমলাপুর থেকে পারাবত এক্সপ্রেস ঠিক সময়ে ছেড়ে যায়। আমরা ৪ জন ঠিক সময়ে কমলাপুর এসে পৌঁছাই (সকাল ৬.১৫) এর মধ্যে। হাল্কা কিছু খাবার , পানি কিনে উঠে পড়ি ট্রেন এ। আমাদের টিকেট অ্যাডভান্স কাঁটা ছিল। আমাদের মধ্যে সঞ্জীব ভাই এই কাজ টি খুব সুন্দর ভাবে করেছেন। যেদিন টিকেট ছাড়ছে ঠিক ঐদিন ই টিকেট কাটেন। তাই সিট পাওয়া নিয়ে সমস্যা নয় নাই।
ট্রেন ঠিক মতোই চলছিল। একটার পর একটা স্টেশন ছেড়ে যাচ্ছিল এবং আমরা ৯.৪৫ এ পৌঁছাই নোয়াপাড়া স্টেশন এ নামি। সকালের হালকা নাশতা করে আমরা স্টেশন থেকে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এর জন্য অটো তে উঠি। সিএনজি অথবা অটো যেকোনো টি সিলেক্ট করতে পারেন। আমরা অটো সিলেকশন করেছি কারণ অটো সিএনজি এর তুলনায় আস্তে যাবে এবং ২ পাশের সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করতে পারবো।
প্রায় ১ ঘন্টার মধ্যে আমরা সাতছড়িতে পৌঁছাই। ৪ জন টিকেট কেটে ঢুকে পরি উদ্যান এ। প্রথম ওয়াচ টাওয়ার এ উঠি। ওয়াচ টাওয়ার থেকে মনে হবে চারিদিকে সবুজের বিছানা। চারিদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ এর দৃশ্য। যা আপনাকে মোহিত করবে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে নেমে আমরা ১ ঘন্টার ট্রেইল এ সিলেক্ট করি। হাটতে থাকি জঙ্গল এর ভিতর দিয়ে। ২/১ জন কে দেখেছি জঙ্গল এর ভিতরে যেতে। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরে তারা ব্যাক করেন। কিন্তু আমাদের যাত্রা চলতে থাকে। একটা কথা বলে রাখি আমরা কিন্তু কোনো গাইড নেই নাই। আমাদের মনে হয়েছে দরকার নাই। আমরা যে পথে গিয়েছি ঠিক ওই পথে ই ফিরেছি। এই ব্যাপার টি মনে রাখতে হবে। ডান / বাম এর দিকে না যাওয়া ই ভালো। আমরা হাটতে হাটতে ১ ঘন্টার ট্রেইলে এর শেষ পর্যন্ত চলে আসি। কিন্তু তারপরেও আমরা আরো ২০ মিনিট এর মতো হাটি। ইচ্ছে হচ্ছিলো না ফিরে আসতে। ইচ্ছে হচ্ছিলো আরো গভীরে যাই। জঙ্গল এর ভিতরে যাওয়ার আগে পর্যাপ্ত পরিমান পানি , হালকা কিছু শুকনো খাবার সাথে রাখবেন। এই এলাকায় মোবাইল এর নেটওয়ার্ক থাকবেনা তাই আবেগে পরে কেউ ডিসিশন নিবেননা। আর দোল বেঁধে থাকবেন। কারণ দলছুট হয়ে গেলে জঙ্গল এর মধ্যে খুঁজে পাওয়া কঠিন। আমরা প্রায় ২ ঘন্টার মতো জঙ্গল এর মধ্যে ট্রেইল করে ব্যাক করি। এর পরে ট্রি একটিভিটি ছিল। গাছের উপরে মই দিয়ে উঠে কয়েক ধাপে এক গাছ থেকে আরেক গাছে যাওয়ার একটি advanture ধরণের একটিভিটি ছিল। এইখানে ১ ঘন্টার মতো আমাদের সময় প্রয়োজন হয়। তারপরে আমরা দুপুরে খাবার খেয়ে চলে যাই চা বাগানে। কিছু ছবি তুলে আর সময় কাটিয়ে আবার অটো তে উঠি চলে আসি হাইওয়ে তে। রিস্ক নিয়ে এনা তে উঠে ঢাকার উদ্দেশ্যে ব্যাক করি।
টোটাল খরচ এর হিসাব :
ঢাকা টু নোয়াপাড়া ( আমরা আরো ২ টি স্টেশন পরের টিকেট করি যেহেতু নোয়াপাড়া টিকেট পাচ্ছিলাম না ) - ২৫০ টাকা প্রতি জন।
নোয়াপাড়া টু সাতছড়ি উদ্যান : ১৮০ টাকা অটো ভাড়া।
সাতছড়ির টিকেট : ১০০ টাকা (৪*২৫)
ট্রি একটিভিটি : ১০০ টাকা প্রতি জন।
সাতছড়ি টু হাইওয়ে : অটো ভাড়া ২০০ টাকা।
ব্যাক টু ঢাকা : ৩০০ টাকা প্রতি জন ( এনা বাস )
অন্যান্য খরচ সহ সর্বসাকুল্যে প্রতি জন খরচ : ৯৯৫ টাকা