আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা

Author Topic: আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা  (Read 990 times)

Offline tasnim.eee

  • Hero Member
  • *****
  • Posts: 506
  • Test
    • View Profile
আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা
« on: June 19, 2019, 05:10:14 PM »
আমেরিকায় মাস্টার্স বা পিএইচডি করতে যাঁরা চান, তাঁদের জন্য ডঃ রাগিব হাসানের একটি লেখা:
© রাগিব হাসান
উচ্চ শিক্ষার খরচ যুক্তরাষ্ট্রে বেশ বেশি, কাজেই নিতান্ত উচ্চবিত্ত ছাড়া নিজের পয়সায় পড়াটা কঠিন। রাজ্য সরকারের বিশ্ববিদ্যালয়ে খরচ কম। তবে রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য যে সুযোগ সুবিধা ও ফি-মাফ রয়েছে, সেটা বিদেশী ছাত্ররা পায় না। কাজেই বিদেশে পড়তে আসার আগে ভর্তির পাশাপাশি ফান্ডিং জোগাড় করাটা খুব দরকার।


~~ কী রকম খরচ হবে? ~~

দেখা যাক টিউশন ফি-র ব্যাপারটা। অধিকাংশ সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্যায়ে প্রতি সেমিস্টারে টিউশন ফি দেয়া লাগে কয়েক হাজার ডলার। যেমন, ফুল কোর্স লোড নিলে ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে গ্রাজুয়েট পর্যায়ে ইঞ্জিনিয়ারিং এ লাগে প্রতি সেমিস্টারে প্রায় ১২ হাজার ডলার, ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়েও তাই লাগে। কিন্তু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফি-টা এর প্রায় ২ গুণ -- যেমন জন্স হপকিন্স মাস্টার্সেই লাগে ২১ হাজার। আমি এখন ইউনিভার্সিটি অফ অ্যালাবামা অ্যাট বার্মিংহাম এর সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত, এটি স্টেইট ইউনিভার্সিটি হওয়ায় এখানে খরচ প্রতি সেমিস্টারে ৬-৮ হাজার ডলার, কিন্তু সেটাও বাংলাদেশের হিসাবে অনেক।

এতো গেলো কেবল টিউশন। থাকা-খাবার জন্য খরচটা জায়গা ভেদে নানা রকম। বড় বড় অনেক শহরে খরচ ব্যাপক। কারো সাথে রুম শেয়ার করে থাকলেও হয়তো বাড়িভাড়া বাবদ মাসে ৪০০/৫০০ ডলার চলে যাবে। মিডওয়েস্টের ছোট শহর গুলোতে খরচ কম। সেখানে ৩০০/৪০০ ডলারে আস্ত ১ রুমের অ্যাপার্টমেন্ট নিয়ে থাকা চলে। দক্ষিণের দিকে খরচ অনেক কম। খাবার খরচ একা মানুষের ২০০-২৫০ ডলারে হয়ে যাবার কথা, চেষ্টা করলে আরো কমানো যায়। আর দূরে কোথাও না গেলে এবং শহরে বাস সার্ভিস ভালো থাকলে গাড়ির দরকার নেই। সব মিলে একা কারো জন্য জায়গাভেদে ৭০০-১২০০ ডলার থাকা-খাবার খরচে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নেয়ার সময়ে তাই টিউশন ছাড়াও লিভিং কস্ট খেয়াল করে নিতে হবে।


~~ খরচ যোগাবেন কীভাবে? ~~

পিএইচডি পর্যায়ে প্রায় সবাই কোনো না কোনো উপায়ে ফান্ডিং পায়। ভর্তির সময়েই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফান্ডের গ্যারান্টি দেয়। আগের লেখাতেই বলেছিলাম, মাস্টার্স পর্যায়ে ফান্ডিং শুরুতে কমই পাওয়া যায়। তবে একবার এসে যাবার পরে ২য় সেমিস্টার নাগাদ চেষ্টা করে ফান্ড জোগাড় করা সম্ভব।

টিউশন ফি মাফ করার বেশ কিছু উপায় আছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেধার ভিত্তিতে টিউশন ওয়েইভার বা ফি-মাফ দেয়া হয়। মাস্টার্স বা পিএইচডি পর্যায়ে টিচিং অ্যাসিস্টান্ট বা রিসার্চ অ্যাসিস্টান্ট হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ পেলে বেতন পাওয়ার সাথে সাথে টিউশন মাফ হতে পারে, বা কম দিতে হতে পারে। আবার মেধাবী ছাত্রদের ভর্তির সময়ে ফেলোশীপ বা স্কলারশীপ দেয়ারও ব্যবস্থা আছে। কিছু নির্দিষ্ট বৃত্তিতে বাংলাদেশের ছাত্ররা বেশ ভালো সুযোগ পায়। যেমন, "আব্বাসী ফেলোশীপ" নামে একটা বৃত্তি ইউনিভার্সিটি অফ ইলিনয়ের ভারত, পাকিস্তান, ও বাংলাদেশের ছাত্র/ছাত্রীরা পায়। আবার দেশ থেকে ফুলব্রাইট নিয়েও অনেকে ইদানিং আসছেন।

অ্যাসিস্টান্টশীপ পেলে সপ্তাহে ১০ থেকে ২০ ঘণ্টা শিক্ষকতায় সহায়তা (যেমন, স্নাতক পর্যায়ে ক্লাস নেয়া, খাতা দেখা) অথবা প্রফেসরের গবেষণায় সহায়তা করতে হবে। টিচিং অ্যাসিস্টান্টশিপ বা টি এ পেতে হলে ডিপার্টমেন্টের অফিসে খোজ নিতে হবে সে ব্যাপারে। অনেক জায়গায় এজন্য টোফেল এর স্পিকিং অংশে ভালো স্কোর চায়। রিসার্চ অ্যাসিস্টান্টশীপ বা আর এ নির্ভর করে প্রফেসরের উপরে। ভর্তির আবেদন করার আগে থেকে প্রফেসরের সাথে যোগাযোগ করে সেটার ব্যবস্থা করা সম্ভব, অথবা ১ম সেমিস্টারে কারো সাথে ফ্রি কাজ করে ভালো কাজ দেখিয়ে পরে তার কাছ থেকে আরএ পাওয়া যেতে পারে। খেয়াল রাখতে হবে, আরএ দের বেতন প্রফেসরের নিজের রিসার্চ ফান্ড থেকে আসে, আর সেটা পাওয়া না পাওয়া প্রফেসরের মর্জির উপরে নির্ভর করে। কাজেই ভালো কাজ দেখানো, গবেষণা ঠিকমতো করা, এগুলো ভালোভাবে করতে হবে। প্রফেসরদের সাথে ইমেইলে যোগাযোগ করা নিয়ে আরেকদিন লিখবো।

এছাড়াও উপার্জনের আরেকটা উপায় হলো ক্যাম্পাসের নানা জায়গা, যেমন লাইব্রেরিতে ঘণ্টা হিসাবে কাজ করা।

অফ ক্যাম্পাস কাজ করাটা শুরুতে যায় কি না, আমার এখন মনে পড়ছে না, তবে যতদূর জানি, প্রথম ৯ মাসে সেটার অনুমতি বের করা কঠিন। সেমিস্টার চলা কালে অন বা অফ ক্যাম্পাসে সপ্তাহে মোট ২০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা যায় না। তবে গ্রীষ্মকাল বা দুই সেমিস্টারের মাঝের বন্ধে ৪০ ঘন্টা কাজ করা চলে।

উপরের সব পদ্ধতিতেও ফান্ড জোগাড় না হলে সর্বশেষ তরিকা হলো শিক্ষা ঋণ নেয়া। মার্কিনীদের জন্য সেটা ডাল ভাত, কিন্তু বিদেশী ছাত্রদের জন্য সেটা বেশ কঠিন। পরিচিত কেউ মার্কিন নাগরিক হলে এবং ঋণে কো-সাইন করলে (মানে ঋণের অংশীদার/জামিনদার হলে) তবেই ঋণ মিলতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে সেটা ছাড়া হয়তো উপায় থাকে না, যেমন কেবল কাজ করে দামি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির বছরে ৪০ হাজার ডলার টিউশন দেয়াটা প্রায় অসম্ভব -- সেক্ষেত্রে টিউশন ওয়েইভার বা ঋণ ছাড়া উপায় নেই।

তবে একটা ব্যাপার খেয়াল করেছি কিছুদিন ধরে। ভারত থেকে প্রচুর ছাত্র নিজের খরচে মাস্টার্সে আসে। তাদের জিজ্ঞেস করে জানলাম, তারা ভারত বা আমেরিকা থেকে শিক্ষাঋণ নিয়ে আসছে, মাস্টার্স শেষ করে চাকুরি পাবার পর সেটা শোধ করবে। জানিনা বাংলাদেশের কোনো ব্যাংক এটা দেয় কিনা, কিন্তু যদি দেয়, তাহলে এটা ফান্ড যোগাড়ের একটা পদ্ধতি হতে পারে।


যাহোক, এত কথা বলছি একটা বিশেষ কারণে। বাংলাদেশ থেকে যে পরিমাণ ছাত্র ছাত্রী আমেরিকায় উচ্চশিক্ষাতে আসে, বাংলাদেশের চাইতে ছোট অনেক দেশ এমনকি নেপাল থেকেও তুলনামূলক ভাবে তার চাইতে বেশি ছাত্রছাত্রী আসে। এরা সবাই কিন্তু রাজাবাদশার সন্তান নয়। কোন না কোন ভাবে ফান্ডের ব্যবস্থা হয়ে যায় উপরের কোন একটা পদ্ধতিতে। কিন্তু দুঃখজনক হল বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা রিস্ক নিতে বা একটু কষ্ট করে নানা পদ্ধতির পিছনে সময় দিয়ে দেখতে অতটা উদ্যোগী নয়। ফলে আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার পর্যায়ে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি যতটা হতে পারত, ততটা নয়। আশা করি এই লেখা পড়ার পরে আরো অনেকে আগ্রহ করে এই ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে দেখবেন এবং সফল হবে।
collected from facebook wall of :
Ragib Hasan(https://www.facebook.com/ragib.hasan.page/)

Offline thowhidul.hridoy

  • Full Member
  • ***
  • Posts: 185
  • Test
    • View Profile
Re: আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা
« Reply #1 on: July 01, 2019, 05:39:59 PM »
Thanks for sharing.......
Md. Thowhidul Islam
Asst. Administrative Officer (Hall)
Daffodil International University (DIU), PC

Cell: 01847334814
Web: www.daffodilvarsity.edu.bd