এই আধুনিককালেও কারণে-অকারণে নির্যাতনের শিকার হতে হয় নারীদের। বর্তমানে নির্যাতনের শিকার হওয়া নারীর সংখ্যা শতকরা ৮৭.৭ জন। মানসিকভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে দেশের ৮১.৬% নারীকে। যৌতুক তথা নানা অর্থনৈতিক নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে দেশের ৫৩.২% নারীকে। অন্যদিকে শতকরা ৩৬.৫% নারীদের যৌন নির্যাতনের শিকার হতে হয় নানাভাবে।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, শিশু ও নারীর ওপর সহিংসতা রোধে যত উচ্চবাচ্যই শোনা যাক না কেন, এসব ঘটনা থামছে না কোনোভাবেই। সংশ্লিষ্টদের অভিমত, বিচারহীনতায় দিন দিন উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে নারী ও শিশু নির্যাতন। গত ৩ বছরে খুন হয়েছে ৯৪৫ শিশু।
ধর্ষণ ও গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন ২ হাজার ৪২৮ জন নারী। এসিডে ঝলসে গেছে ৭৩৩ নারী-শিশুর মুখ। এ ছাড়া যৌন হয়রানি এবং অন্যান্য নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন অনেকে। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে বিচার না হওয়া এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে নারী ও শিশুদের প্রতি নৃশংসতা বাড়ছে।
মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পেডোফিলিয়া নামের মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের শিশুদের প্রতি যৌন আকর্ষণ থাকে। কিছু ক্ষেত্রে যৌন নিপীড়নের এটিও একটি কারণ। তবে এটাই একমাত্র কারণ নয় বলে মনে করেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মোহিত কামাল। তিনি বলেন, শিশু ধর্ষণের পেছনে মানুষের মূল্যবোধ-নৈতিকতার অবক্ষয়, পর্নোগ্রাফি, মাদকের প্রভাবও রয়েছে। পাশাপাশি, শিশুদের প্রতিরোধ ক্ষমতাও কম।
সময় এসেছে, নারীকে সচেতন হতে হবে। অন্যদিকে পুরুষদের হতে হবে সংযমী। আমি মনে করি, সেই সঙ্গে ধর্মীয় অনুশাসনও বাস্তবায়ন করতে হবে। এসব মিলিয়েই হ্রাস পাবে নারী নির্যাতন। এ ছাড়া আইনি ব্যবস্থাকে আরও কঠোর করতে হবে। নারী নির্যাতনের ভয়াবহতা নিয়ে নানা প্রচারণা চালাতে হবে।